সম্পাদক সমীপেষু ...
গুজরাত যদি পারে, আমরা পারব না কেন?
‘অভাব জলে নয়, ঠিক ঠিক পরিকল্পনার’ (১৫-১০) প্রতিবেদনটির পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি।
আমাদের রাজ্যে জলসম্পদের অভাব নেই, অভাব আছে সঠিক পরিকল্পনার। অন্য রাজ্য জল সংরক্ষণে অনেক এগিয়ে আছে। আমার বাল্যকাল কেটেছে গুজরাতে। ১৯৬০ সালে গুজরাতের যে জায়গাতে ছিলাম, সেখানে খুবই জলের কষ্ট ছিল। কিন্তু কিছু দিন আগে গুজরাতে গিয়ে জল সংরক্ষণ দেখে অবাক হয়ে গেলাম। গুজরাতের গ্রামবাসীরা গ্রাম মণ্ডল বিকাশ পরিকল্পনার মাধ্যমে মাইক্রো ওয়াটার শেড প্রজেক্ট করে সারা পৃথিবীকে দেখিয়ে দিয়েছে সঠিক জল সংরক্ষণ এবং তার কার্যকারিতা। এক বিন্দু মিষ্টি জল ওখানে অপচয় হয় না। এ জন্য সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন স্তরে পালস পোলিয়োর মতো জল অপচয় বন্ধ করার জন্য প্রচার চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শহর অঞ্চলে জলের মিটার ও শাওয়ার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কাপড় ধোওয়া জল ও তরকারি ধোওয়া জল ফেলে না-দিয়ে বাগানে ব্যবহার করা হচ্ছে। শ্যালো নলকূপ থেকে জল তোলার ব্যাপারে প্রত্যক্ষ নজরদারি চালানো হয়। পড়ে-থাকা জমিতে গাছ লাগানো হচ্ছে। বৃষ্টির জল সংরক্ষণের জন্য আন্ডারগ্রাউন্ড ও ওভার গ্রাউন্ড এবং বাড়ির ছাদে রেন ওয়াটার হার্ভেস্টিং ব্যাঙ্ক বসানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর ফলে, বৃষ্টির জল ধরে রেখে তা মাটির নীচে ওয়াটার রিচার্জিং করতে হবে নিয়ম মেনে। জলস্তর বৃদ্ধির জন্য খালবিল সংস্কার করা হচ্ছে। এম পি, এম এল এ কোটার অনেক টাকাই জল সংরক্ষণের ব্যাপারে খরচ করা হয়। স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন রাস্তাতে হোর্ডিং দিয়ে জলের অপচয় বন্ধ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। গুজরাত যা করতে পেরেছে, আমরা তার কিছুটা করলেও রাজ্যে জলের অভাব হবে না।
দুর্ঘটনা এড়াতে অবিলম্বে রাস্তা সারানো প্রয়োজন
সুন্দরবনের বাসন্তী হাইওয়ের একটি বাসস্টপ ‘মিলনবাজার’। এখান থেকে চুনাখালি ১২ কিমি রাস্তা। বাসন্তীর চড়াবিঘা, আমঝাড়া, চুনাখালি এই তিনটি অঞ্চল ছুঁয়ে যাওয়া এই রাস্তা প্রতি বর্ষায় ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। কোথাও খুব নিচু গর্ত, কোথাও উঁচু, কোথাও ইট নেই, অত্যন্ত পিচ্ছিল কর্দমাক্ত, মোটর সাইকেল, সাইকেল পিছলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। হেঁটে চলাও দুরূহ। অন্তত তিন হাজার পরিবার এই রাস্তার উপর নির্ভরশীল। শ্রীরামকৃষ্ণ শিক্ষা নিকেতন পর্যন্ত প্রায় তিন কিমি রাস্তা সর্বাধিক দুর্গম। এই স্কুলে যেতে তিন কিমির মধ্যে পড়ে একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়, গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস, কে জি স্কুল, শিশু শিক্ষাকেন্দ্র ইত্যাদি। এই সব প্রতিষ্ঠানে কাজের জন্য প্রতিদিন বহু মানুষ এই রাস্তা ব্যবহার করেন। ১৯৮৫ সালে এই রাস্তা নির্মাণ হয়েছে। কিন্তু মেরামতের অভাবে পাঁচ বছর ধরে রাস্তার এই ভগ্নদশা। প্রাত্যহিক দুর্ঘটনা। গ্রামবাসীদের সব চেষ্টা বিফলে।
ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, গ্রামবাসী সকলেই পি ডব্লিউ ডি, সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ ও বিধায়ক জয়ন্ত নস্করের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
থাকবে না সাগরবেলায় ঝিনুক খোঁজার আনন্দ
মন ভীষণ খারাপ হয়ে গেল রঞ্জন সেনগুপ্ত ও মিলন দত্তের প্রতিবেদন ‘মন্দারমণির অবৈধ হোটেলকে স্বীকৃতির উদ্যোগে প্রশ্ন’ (১৭-১০) পড়ে। মন্দারমণি গিয়ে আশ্চর্য হয়ে দেখেছিলাম অসংখ্য গাড়ি, মোটরভ্যান, ভারী ভারী ট্রাক্টর সবই চলছে বেলাভূমির উপর দিয়ে। কেউ চালাচ্ছে বিনোদনের জন্য, কেউ বা পেটের জন্য। হোটেল ব্যবসায়ীর আধুনিক প্রযুক্তি ক্রমশ গ্রাস করে নিচ্ছে বেলাভূমি-সমুদ্র। প্রকৃতি কি সহ্য করতে পারবে তার উপর এই বীভৎস মানবিক (পাশবিক নয়, কারণ, পশুরা প্রকৃতির ক্ষতি করে না) অত্যাচার? মন্দারমণির ঘন নীল সাগরজলে ঢেউ ভেঙে স্নান করার আনন্দ আর থাকবে না। থাকবে না ভেজা মাটিতে পায়ের ছাপ ফেলে উদাস হেঁটে চলা। থাকবে না সাগরবেলায় ঝিনুক খোঁজা, চুলবুল লাল কাঁকড়ার পিছনে ছুটে বেড়ানো। তবে কেন আসবে লোকে মন্দারমণিতে?
দিঘার পর পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্র পর্যটন মানচিত্রে শংকরপুর ছিল দ্বিতীয় পর্যটন কেন্দ্র। আয়লার পর শংকরপুর সে আকর্ষণ হারিয়েছে। বর্তমানে মন্দারমণি ভ্রমণপিপাসুদের কাছে বিনোদনের পশরা মেলে ধরেছিল। কিছু লোভী মানুষ অবিমৃশ্যকারিতা থেকে সাময়িক লাভের আশায় নিজেদের ভবিষ্যৎ যে অন্ধকার করে ফেলছেন, তা বুঝতে পারছেন না। এ ব্যাপারে সরকার ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ তাদের দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারে না। সরকারের উচিত, স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শ করে কেন্দ্রীয় উপকূল এলাকা নিয়ন্ত্রণ বিধি মেনে সমুদ্র থেকে কম করে পাঁচশো মিটার দূরে সমুদ্রতটের সমান্তরাল রাস্তা বানানো। রাস্তার ভিতরে থাকবে হোটেল ও অন্যান্য ঘরবাড়ি। বাইরে থাকবে ঝাউবন, গাছপালা ও উন্মুক্ত বেলাভূমি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.