সু চি-থান শোয়ে, দু’জনের পাশেই ওবামা
তাদের দেশ থেকে সবাই মুখ ফিরিয়ে থাকত এত দিন। আর আজ সেই দেশের মাটিতেই এই প্রথম পা ফেললেন কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মায়ানমারের সাধারণ মানুষের কাছে বারাক ওবামার সফর তাই ‘ঐতিহাসিক ঘটনা।’
যে কারণে জনতার ঢল উপচে পড়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এক ঝলক দেখতে। তাঁদের উৎসাহ দিতেই ওবামা বললেন, “আপনারা আমাদের আশা জাগিয়েছেন। আমেরিকা আপনাদের পাশে রয়েছে।” আর পাশে থাকার ইঙ্গিত হিসেবে ছ’ঘণ্টার সফরে ওবামার মুখে ঘুরে ফিরে এল ‘মায়ানমার’ এবং ‘বর্মা’ দু’টো শব্দই।
সদ্য ভারত সফর সেরে দেশে ফিরেছেন গণতন্ত্রকামী নেত্রী আউং সান সু চি। আগামী বছর মায়ানমারে নির্বাচন। সম্ভাব্য রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে সু চি-র সফরের সময় মায়ানমার-নীতির প্রশ্নে ভারসাম্য বজায় রেখেছে ভারত। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সামরিক নেতা থান শোয়ে এবং সু চি দু’জনেরই প্রশংসা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। একই পথে হাঁটলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টও।
উষ্ণ অভ্যর্থনা। সু চি-ওবামা। ছবি: এপি।
নিজের বাড়িতেই ওবামার সঙ্গে দেখা হল সু চি-র। পাশাপাশি ওবামা দেখা করলেন প্রেসিডেন্ট থান শোয়ের সঙ্গেও। বক্তৃতা দিলেন ইয়াঙ্গন বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছ’ঘণ্টায় জিতে নিলেন অজস্র মায়ানমারবাসীর হৃদয়।
ইয়াঙ্গন বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়ে আমেরিকার তরফে সব রকমের সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিলেন ওবামা। সঙ্গে সতর্কও করলেন এই বলে যে ‘গণতন্ত্র বাঁচিয়ে রাখতে হবে নতুন সরকারকে। না হলে আমেরিকার সমর্থন থাকবে না।” সাধারণ মানুষের উদ্দেশে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বললেন, “ক্ষমতায় যারা আছে, তাদের মনে রাখা উচিত প্রত্যেকেরই কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু উন্নতির যে সামান্য শিখা দেখা গিয়েছে, তা যেন নিভে না যায়।”
গৃহবন্দিত্বের দু’দশক যেখানে কাটিয়েছেন সু চি, সেই বাড়িতেই নেত্রীর মুখোমুখি হন ওবামা। উষ্ণ অভ্যর্থনার পরেই সু চি-র সঙ্গে করমর্দন। চোখের সামনে নিজের অনুপ্রেরণাকে দেখে জড়িয়ে ধরলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিদেশসচিব হিলারি ক্লিন্টনও। গণতন্ত্র আর সংস্কারের সঙ্গে যাঁর নামটা সমার্থক, সেই নেত্রীর সামনে তাঁর দেশকে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবেই ‘বার্মা’ বলে উল্লেখ করলেন ওবামা। যা শুনে সু চি আর তাঁর অসংখ্য অনুগামী খুশি। এর পর ওবামার মতোই সতর্কতার সুর সু চি-র গলাতেও। তিনি বললেন, “পরিবর্তনের সময়ে সব চেয়ে কঠিন কাজ হল সাফল্য খুঁজে পাওয়া। আমরা যাতে সাফল্যের মরীচিকায় বিভ্রান্ত না হই, সে দিকে নজর রাখতে হবে।”
সু চি-র সঙ্গে সাক্ষাতের আগেই ওবামা কিন্তু দেখা করে এসেছেন প্রেসিডেন্ট থান শোয়ের সঙ্গেও। আর সেখানে বহু বছর ধরে পরিচিত মায়ানমারকে তিনি উল্লেখ করলেন ‘মায়ানমার’ বলেই। থান শোয়ের পাশে দাঁড়িয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বললেন, “মায়ানমারের প্রেসিডেন্ট গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের যে প্রক্রিয়া শুরু করেছেন, তাকে এগিয়ে নিয়ে অবিশ্বাস্য উন্নতির সুযোগ তৈরি করতে পারেন তিনিই।”
ওবামার সফরের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই যেন আজ মায়ানমারে মুক্তি দেওয়া হয় আরও ৪৪ জন রাজনৈতিক বন্দিকে। সংস্কারপন্থী প্রেসিডেন্ট থান শোয়ের সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মায়ানমারে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু করেছে। মায়ানমার যে ভাবে সামরিক শাসন ঝেড়ে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে গণতন্ত্রের পথে, তাতে আমেরিকা-মায়ানমারের সম্পর্কের রসায়ন দ্রুত পাল্টেছে মনে করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাঁর কথায়, “উল্লেখযোগ্য এক যাত্রা সবে শুরু হয়েছে।”
যে যাত্রার শরিক মায়ানমারের অসংখ্য উৎসাহী মানুষের কাছে ‘কিংবদন্তী’ ওবামা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.