নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেই রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখানোর নির্দেশ দিলেন সিপিএম নেতৃত্ব।
মহিলাদের উপর আক্রমণের প্রতিবাদে বামপন্থী গণ-সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে শনিবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেখানেই বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র ও বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু দু’জনেই মহিলা নির্যাতনের প্রতিবাদে পথে নেমে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানানোর নির্দেশ দেন। বাস ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ বা অন্য দাবিতে কলকাতার রাজপথে বসে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া এসইউসিআই আন্দোলনের পরিচিত রূপ। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন কথায় কথায় পথ অবরোধ করার বিরুদ্ধে একমত হয়েছিল রাজ্য সরকার ও আলিমুদ্দিন। আজকের নির্দেশে পরে সিপিএম অবরোধের পথে ফিরতে চাইছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সূর্যকান্তবাবু বলেন, “রাজ্যে যা ঘটছে, তা অসহনীয়।” তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে যে ভাবে রাজ্যে নারী নির্যাতন বেড়েছে, তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সোনার পদক দেওয়া যেতে পারে বলে কটাক্ষ করেন সূর্যবাবু। তিনি বলেন, “নারী নির্যাতন, ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেই আমাদের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া চাই। উপর তলার নেতৃত্বের অপেক্ষায় না থেকে, বামফ্রন্টের বৈঠকের উপর নির্ভর না করে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদে রাস্তায় বসে পড়ুন।” |
নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে রাস্তায় বসে পড়ার নির্দেশ দেন বিমানবাবুও। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কিছুক্ষণের জন্য সভায় এলেও তিনি বক্তৃতা করেননি।
বিরোধী আসনে বসার পরে বামেরা রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, জেলা-শাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া, প্রতিবাদ সভা করা এবং আইন-অমান্যের মধ্যেই তাদের ‘প্রতিবাদ’ সীমাবদ্ধ রেখেছিল। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটের আগে জনমানসে প্রভাব বাড়াতে মহিলাদের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভের কর্মসূচিও সংযোজিত হল। শুধু কলকাতায় নয়, জেলাতেও যাতে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়, বাম নেতারা সে ব্যাপারেও জোর দেন। এ বার পঞ্চায়েত ভোটে ৫০% আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। বামেদের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে, মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা যাতে ৫০% ছাপিয়ে যায়। সে কারণেই পথে নেমে মহিলাদের বিক্ষোভের যথেষ্ট রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে বলে বাম শিবিরের মত।
বাম নেতাদের অভিযোগ, নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেই মুখ্যমন্ত্রী তা অস্বীকার করার চেষ্টা করেন। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে ১০টি ধর্ষণের ঘটনার উল্লেখ করে বিমানবাবু বলেন, “প্রতিটি ক্ষেত্রেই মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সরকার প্রথমে অস্বীকার করার চেষ্টা করেছেন।” কেবল ধর্ষণ নয়, সোনার অলঙ্কার ছিনতাইয়ের ঘটনাও বাড়ছে বলে অভিযোগ করেন সিপিআই নেতা মঞ্জুকুমার মজুমদার। |