তদন্তভারে জেরবার সিআইডি-র হাতেই তেহট্টের দায়িত্বও
ত দু’বছরে রাজ্যে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে চারটি। তার মধ্যে একটি বাম আমলে। সবগুলোরই তদন্তভার আছে সিআইডি-র হাতে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত একটি মামলাতেও চার্জশিট জমা দিতে পারেনি তারা। এই পরিস্থিতিতে তেহট্টে গুলি চালনার তদন্তভারও তুলে দেওয়া হল সিআইডি-র হাতে। প্রশ্ন উঠেছে, সাফল্যের নিরিখে যে তদন্তকারী সংস্থার মান এমন, তারা কত দ্রুত তদন্ত শেষ করতে পারবে?
সিআইডি-র স্পেশ্যাল আইজি বিনীত গোয়েল শনিবার বলেন, “তেহট্টে কোন পরিস্থিতিতে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল, তা তদন্ত করে দেখা হবে। একটি তদন্তকারী দলকে সেখানে এ দিন পাঠানো হয়েছে।” একাধিক পুলিশকর্তার প্রশ্ন, পুলিশ কী ভাবে পুলিশের দোষ-গুণ বিচার করবে? আর করলেও কতটা নিরপেক্ষ হবে সেই তদন্ত? তাঁদের বক্তব্য, ১৪ নভেম্বর ঘটনার পরেই ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছিল সরকার। কিন্তু চার দিন কেটে গেলেও ম্যাজিস্ট্রেট বাছাই-ই চূড়ান্ত করতে পারেনি রাজ্য প্রশাসন।
ক্ষমতায় আসার পরেই ডুয়ার্সের শিবচুতে পুলিশের গুলি চালনার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল নতুন সরকার। ২০১১ সালে ৫ই ফেব্রুয়ারি সেখানে মৃত্যু হয় গোর্খা জন মুক্তি মোর্চার দুই সমর্থকের। তদন্তভার সিআইডি-র হাতেই তুলে দিয়েছিল সরকার। আজও তার চার্জশিট দিতে পারেনি ওই তদন্তকারী সংস্থা। অসমাপ্ত রয়েছে আসানসোলে গুলি চালনার তদন্তও। গত বছরের অক্টোবরে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। নদিয়ার বগুলাতেও পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় এক মহিলার। ওই বছরেরই ডিসেম্বরে মগরাহাটে পর্ষদকর্মীদের সঙ্গে বিদ্যুতের হুকিং কাটতে গিয়ে স্থানীয় মানুষের একাংশের বাধা পেয়ে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল। মৃত্যু হয়েছিল দু’জনের। সব তদন্তই এখনও চলছে।

র‌্যাঙ্ক আছে থাকার কথা
ডিএসপি
ইন্সপেক্টর
সাব-ইন্সপেক্টর
এএসআই
কনস্টেবল
• সিআইডির হাতে তিনশোর বেশি মামলা রয়েছে।
• এই হিসেব অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত।
কেন এই হাল সিআইডি-র? ওই তদন্তকারী সংস্থার একাধিক কর্তা এর জন্য লোকাভাবকেই দায়ী করেছেন। তাঁরা বলছেন, সিআইডির হাতে শ’তিনেক মামলা জমে রয়েছে। কেবল ডাকাতি দমন শাখা ও হোমিসাইড শাখার হাতেই রয়েছে ৩০টি। একই ছবি অধিকাংশ শাখায়। কিন্তু তদন্তকারী অফিসারের সংখ্যা সেই তুলনায় অনেক কম। সিআইডি-র হিসেবে, ইন্সপেক্টর, সাব ইন্সপেক্টর এবং ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার পদের ৩২ শতাংশই খালি পড়ে রয়েছে। এর মধ্যে সাধারণ ভাবে ইন্সপেক্টর এবং সাব ইন্সপেক্টরেরাই তদন্ত করে থাকেন। ডিএসপি এবং তার উর্ধ্বতন অফিসারেরা তদন্ত পর্যবেক্ষণ করেন। এক সিআইডি কর্তা বলেন, “গত দেড় বছরে একের পর এক মামলার দায়িত্ব আমাদের দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা একশোর কাছাকাছি।”
সিআইডি-র সদর দফতর ভবানী ভবন ছাড়াও রাজ্যের সব জেলায় ওই সংস্থার শাখা রয়েছে। কিন্তু কর্মীর অভাবে সেখানেও নিত্যদিনের কাজ সারাই দায় হয়ে পড়েছে। এক সিআইডি কর্তা বলেন, “সাধারণ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ মামলা হাতে নেওয়ার পরে একাধিক তদন্তকারী দল গঠন করা হয়। দ্রুত তদন্ত শেষ করাই এর উদ্দেশ্য। সেই দল গঠন করতে জেলা অফিস থেকে অফিসারদের ডেকে নেওয়া হয়। এতে ওই অফিসের কাজ ব্যাহত হচ্ছে জেনেও আমরা নিরুপায়।” সিআইডি কর্তাদেরই হিসেবে, এক জন অফিসার গড়ে ৭-৮টি মামলার তদন্ত করছেন। বিশেষ তদন্তকারী দলের সদস্য হিসেবেও তাঁদের কাজ করতে হচ্ছে। তাই সাফল্যের হার কমছে বলে কবুল করেছেন একাধিক সিআইডি কর্তা।
পরিকাঠামোগত অসুবিধার কারণেও তদন্ত ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করছেন সিআইডি কর্তারা। অসম্পূর্ণ রয়েছে সাইবার ল্যাবরেটরি তৈরির কাজও। প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তদন্তভার সিআইডিকে দেওয়া হলেও তার পরিকাঠামোর এই হাল কেন? এক সিআইডি কর্তা বলেন, “সব অসুবিধার কথাই স্বরাষ্ট্র দফতরে জানানো হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.