|
|
|
|
|
|
স্বপ্নময় চক্রবর্তী |
উনি কুকুরমাসি। গলায় কণ্ঠি, কপাল এবং নাকে তিলক। দেখা হলেই ‘হরে কৃষ্ণ’ বলতে হত। ‘মাসি কেমন আছো’ জিজ্ঞাসা করলেই বলতেন, ‘আগে হরে কৃষ্ণ বল’। বিধবা মানুষ, থাকতেন একটা কুস্তির আখড়ার পিছনে একটা ছোট্ট চালাঘরে। একা থাকতেন না, কুকুররা সঙ্গে থাকত। ওরা সবাই নেড়ি। কুকুরদের আলাদা আলাদা নাম ছিল। সুবল, শ্রীদাম, কালোসোনা, বলরাম, মুরারি, জগাই, মাধাই, ললিতা, বিশাখা, সুদামা। সবাইকে আলাদা করে চিনতেন। হাতে একটা লেড়ো বিস্কুটের আধখানা নিয়ে ‘ও ললিতে, ললিতে’ ডাকলে ললিতাই আসত, বিশাখা নয়।
ওঁর চালাঘরের সামনেই ছিল একটা তুলসীমঞ্চ। সকালবেলা পালোয়ানরা কুস্তির আখড়ায় যাবার সময় তুলসীমঞ্চের গায়ে হাত ঠেকিয়ে, পরে কপালে ঠেকিয়ে নিত কুকুরস্পর্শ বাঁচিয়ে। কারণ, তুলসীমঞ্চের চতুর্দিকে প্রচুর কুকুর তখন হরিনাম শুনছে। কোনও কোনও সারমেয়পুচ্ছ করতালের তালে তালে আমোদে আন্দোলিত। কুকুরমাসি করতাল বাজিয়ে শ্রীকৃষ্ণের শতনাম শোনাচ্ছেন— ননীচোরা নাম রাখেন যতেক গোপিনী, কালোসোনা নাম রাখে রাধা বিনোদিনী...। এ ধারে হরিনাম, ও ধারে কুস্তি। মাসি মাঝে মাঝে বলে উঠতেন হরিই-ই বোল। ওপাশে কুস্তির আখড়ায় ধ্বনিত হত জয় বজরঙ্গবলী, জয় হনুমান জি কি...। হরি ও হনুমান মিশে যেত। এর পর
|
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য |
প্রসাদ বিতরণ। বাতাসা ছড়াতেন মাসি। কুকুরের ডায়াবিটিস হয় কি না জানি না। দু-একটা কুকুর বাতাসা খেত না। মাসি অবাধ্য কুকুরটির নাম ধরে ডেকে বলতেন, খাও মার্কণ্ডেয়, বাতাসা প্রসাদ খাও, নইলে কিন্তু বিস্কুট প্রসাদ দেব না। ওঁর কয়েকজন বিশেষ প্রিয় কুকুর ছিল, কালোসোনা ওদের মধ্যে প্রধান। ওর রংটা কালো, কপালে একটা সাদা দাগ। সেখানে গেরিমাটি দিয়ে তিলকও পরিয়ে দিতেন মাঝেমধ্যে। তুলসীর মালাও পরিয়েছিলেন, কালোসোনার কোনও বান্ধবী ওটা কামড়ে ছিঁড়ে দেয়। সেই ভ্রষ্টা কুক্কুরীকে খুব বকাঝকা করে, ওকে ঠিক করার জন্য কানের কাছে অনেক ক্ষণ ধরে হরিনাম শুনিয়েছিলেন। আর একটি প্রিয় কুকুরের নাম ছিল প্রহ্লাদ। পেল্লাদ বলেই ডাকতেন। অনেক সময় দেখা যেত, একটা সাইকেল রিকশায় মাসির দু’পাশে বসে আছে কালোসোনা আর পেল্লাদ। হাওয়া খাওয়াচ্ছেন মাসি। ঠাকুর দেখাতেও গিয়ে যেতে দেখেছি। ট্রেনার হিসেবেও খারাপ ছিলেন না। ‘নমো কর নমো কর’ বললেই কুকুর দু’টো দুই থাবা এক করত।
কুকুরের পলিগেমি-টা পছন্দ করতেন না মাসি। চেয়েছিলেন কুকুর-কুকুরীর একনিষ্ঠ দাম্পত্য। আর গুরুভাই-বোনের মধ্যে ‘বিবাহ’ একেবারেই অনুমোদন করতেন না। কুকুর সমাজের এই সংস্কার সাধনের জন্য জান লড়িয়ে দিয়েছিলেন। যারা মাসির উঠোনে বসে হরিনাম শুনত, প্রসাদ খেত, ওরা সবাই তো গুরুভাই-বোন, না কি? ভাদ্র মাসটায় মাসির হাতে একটা লাঠি রাখতে হত। কোনও ভাই-বোনকে শোঁকাশুঁকি করতে দেখলেই লাঠি দিয়ে তাড়া করতেন। কিন্তু প্রেম কি লাঠি মানে? তবু মাসি চেষ্টা করতেন। ‘কর্তব্য করিয়া যাও, ফলের দিকে চাহিও না।’
কালোসোনা ও পেল্লাদ যাতে অধর্ম না করতে পারে, এ জন্য নবযৌবনেই, রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ওদের পাত্রীর পছন্দ করেছিলেন। প্রথমে কালোসোনার জন্য ধলামণি পাত্রীকে কেক-এর লোভ দেখিয়ে দেখিয়ে নিয়ে এসেছিলেন। সাদার ওপর খুব সুন্দর কালো-কালো ছিট। কালোসোনা তখন দড়িতে বাঁধা ছিল, যেন কুকর্ম করতে না পারে। কুস্তির আখড়াটা নিজের দুটো শাড়ি দিয়ে ঘিরে দিয়েছিলেন। ওখানে কালোসোনা আর ধলামণিকে ফুলশয্যার জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। মাসি উঁকি দিয়ে দেখছিলেন— সব ঠিক আছে তো? ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে যায়। পালোয়ানরা আখড়ায় নতুন মাটি দেয়। এলাকার অভিভাবকরা মাসিকে বকাবকি করে। গেরুয়া পাঞ্জাবি পরা দু-এক জন বলছিল, মহিলার ‘দর্শন কাম’ আছে। পালোয়ানরা আর কুস্তির আগে তুলসীমঞ্চ টাচ করত না।
মাসির হয়তো মনে হয়েছিল, শুধু কালোসোনা-পেল্লাদের কথা ভাবলেই হবে? ললিতা-বিশাখা-অনুরাধাদের জন্যও তো শাস্ত্রোচিত পাত্র সংগ্রহ করতে হয়। হাতে কখনও বিস্কুট, কখনও বড়ুয়ার কেক হাতে নিয়ে মনোনীত পাত্রের সামনে নাচিয়ে ‘আয় আয় তু তু’ করতে করতে পাড়ায় নিয়ে আসতেন। পাড়ার কুকুররা সমবেত ভাবে বেপাড়ার কুত্তাকে ঘেউ রবে ঠ্যাং খোড়া করে দেব বলত। এ সব ম্যানেজ করা মহা ঝকমারি, তবু চেষ্টা করে যেতেন। ওদের নিজের ঘরেই ঢুকিয়ে বাইরে থেকে শিকলি টেনে ঘরের দরজায় বসে পাহারা দিতেন। কুকুরদের চরিত্র রক্ষার জন্য বছরের দু-আড়াই মাস মাসির ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়াও হত না। ‘তোমার বড্ড ঝামেলা যাচ্ছে মাসি’ বললে মাসি উত্তর দিতেন, কী করব বাছা, সবই কৃষ্ণের কাজ।
পেল্লাদের জন্যও পাত্রী জোগাড় করেছিলেন মাসি। পেল্লাদ দম্পতি এবং কালোসোনা দম্পতিকে নিজের ঘরে ঢুকিয়ে শিকলি টেনে, কিছু ক্ষণ পর ঠিক আছে কি না দেখার জন্য আচমকা শিকলি খুলে দেখেন, দু’জোড়াই দাম্পত্য বদল করে আটকে আছে। এর পর ওদের বেঁধে রাখা ছাড়া উপায় ছিল না।
কুকুরমাসি জলাতঙ্ক রোগে মারা যান। লোকে বলে পাগলা কুকুরে কামড়ালে জলাতঙ্ক হয়। |
|
শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় |
|
• সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে প্রথম দিন অ্যাপো। মুখে আট বার ফেসওয়াশ মেরে মাঞ্জা।
সে বাস থেকে নেমে আসছে, হাসছে। ঠিক মোক্ষম লগ্নে ওপর থেকে কাগের কন্ট্রিবিউশন। |
|
|
• বউ-বাচ্চাকে বাপের বাড়ি গ্যারেজ করে, রুটি-তড়কা
কিনে, গুচ্ছ থ্রি-এক্স ডিভিডি ভাড়া করে, কাঁচা পেঁয়াজ-সহ
একার নিশি-মোচ্ছবের জন্যে ভরপুর তৈরি। ডিভিডি-র
ছবি সবে ফুটছে। ঝড়াস। লোডশেডিং। |
• অতি কষ্টে টিকিট জোগাড় হয়েছে ফাংশনটার।
অটোয় ঝাঁপিয়ে, বাসে ঝুলে নামলেন যখন, শুরু হতে
মাত্তর তিন মিনিট। দৌড়। ঠিক তখনই সামনে হাঁটবে অসম্ভব
স্লো মোশনে গোটা রাস্তা আটকে বুড়ো বেতের-চুবড়িওলা। |
|
|
|
|
• দেখতে মোটে ভাল না, কালো কুচ্ছিত, ক্যাটক্যাটে লাল দু’ঠোঁটের মাঝে বেরিয়ে-আসা জিভ, পাগলি পাগলি এক ঢাল চুল, হাতে রক্তখেকো খাঁড়া, ভয়াল নরমুণ্ড। নামে মা কালী, হাজারটা গানে লক্ষ বার সাধলেও মা বলিতে প্রাণ তো আনচান করেই না, ভয়ে আত্মারাম ধড়াস। পরনে সুতোটি নেই বলে অপাঙ্গে জুলজুল তাকিয়েছেন কি চোখ পড়বে পদদলিত স্বামীপ্রবরটির দিকে, সটান নমো। দেবী, তবে রূপ-উথলানো দুর্গাঠাকুর নন, হোলিয়ার-দ্যান-দাউ হ্যাঙ্কিপ্যাঙ্কি কি গুদাম-ভর্তি অস্তর নেই, এক খড়্গ নয় তো হাত-নখ-দাঁতই কাফি, নির্বাহনা (সুখী ময়ূর, ধেড়ে ইঁদুর, রাগী বাঘ, ভ্যাবাচ্যাকা প্যাঁচা তো নেইই, সঙ্গী শুধু একটা হিংস্র শেয়াল), কাটা হাত-পা দিয়ে বানানো নেকলেস আর মিনিস্কার্টও দিব্যি ক্যারি করে লাফান-ঝাঁপান, মদ-মাংস গপ্গপান, শ্মশানে-মশানে পুজো-পাঁটা নেন হাঁড়ি-ডোম-ডাকাতদের থেকে। ন্যাকামোরহিত কেয়ার-করি-না ব্যক্তিত্ব, হ্যাপিলি তামসিক, হিংসা ও ডাকাবুকোপনায় স্বস্তিতে স্থিত, গর্বিতও। আবার বেগড়বাই কিছু না করলে এক্সট্রা দু’হাতে অভয়-জ্ঞানমুদ্রায় দেদার ব্লেসিং। ডাকিনী-যোগিনী দু’পাশে, তারাও সমান বেশ-করেছি। যা কিছু এলিট, তাকেই চিরে কেটে ধুয়ে দিতে নিঃশঙ্ক নির্ভয়, প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতায় নির্লজ্জ, অনমনীয় সাবঅল্টার্ন অস্তিত্বময়ী।
• মার্কিন জাতীয় গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ’র প্রধান ডেভিড পেত্রাইউস বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে দেশবাসী ও সহকর্মীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করলেন। সুদীর্ঘ আর্মি-জীবনে যে চরিত্র নিষ্কলুষ, ৯/১১-পরবর্তী আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতিতে যাঁর মিলেছিল সিআইএ’র ‘হট সিট’, ভাবা হচ্ছিল ভাবী রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবেও, তাঁরই গোপন প্রণয়িনীর পাঠানো কিছু মেল সব ভেস্তে দিল। ঝুলি থেকে স্ক্যান্ডাল-বেড়াল বেরোতেই বললেন, দেশের এ হেন মহা গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী হয়েও ‘এক্সট্রা-ম্যারিটাল’ করা চরম অপরাধ হয়েছে। কেন? বিয়ের বাইরে প্রেম হয়, হতেই পারে, যদি তাতে কেউ চটেমটে একশা হয়, মোকাবিলা হবে ঘরে বা কোর্টে, ঝগড়া-কান্না-মারপিট-সালিশির বোঝাপড়ায়। তার সঙ্গে পদের, ইস্তফার কী সম্পর্ক? নিতান্ত ব্যক্তিগত কাঁটা পেশাদার জমিতে ছড়ানো কেন? যদি অবশ্য পিছনে অন্য কূট কারণ থাকে, স্ক্রিন-সেভারে এইটা বলা হয়, আলাদা কথা। কিন্তু তা না হলে, রক্ষণশীল ধারণায় গেঁথে কাজের সত্তাটাকে আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলা অতি অ-সভ্য। পেত্রাইউস ইস্তফা দিয়ে নিজেই সে বিচ্ছিরি কাজকে ইন্ধন জোগালেন। |
|
|
|
৩.৭৩
বাজারে নতুন-আসা
আইফোন-৫ যত
মিলিমিটার মোটা |
৬২০০০০০০০
বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুযায়ী
গোটা
বিশ্বে অন্তত যত জন
তরুণ-তরুণী
পড়াশোনা বা
চাকরি কিছুই করছেন না! |
১০০১৩০৪
ভারতের নাগাল্যান্ডের ‘ভোট
জলোকিয়া’ লঙ্কায় যত স্কোভিল
(ঝালের একক) ঝাল আছে। বিশ্বে
সবচেয়ে ঝালের তালিকায় দু’নম্বরে
থাকা এই লঙ্কা দিয়ে একটা ভদকা
তৈরি হচ্ছে ইংল্যান্ডে। বিক্রিও হবে! |
১১০০০
উইকিলিকস-প্রতিষ্ঠাতা
জুলিয়ান
অ্যাসাঞ্জের পুলিশি
প্রহরায় ইংল্যান্ড
সরকারের দৈনিক
যত পাউন্ড খরচা হচ্ছে |
১৮১০০
হারিকেন ‘স্যান্ডি’র
প্রকোপে আমেরিকায় যতগুলো
বিমান-উড়ান বাতিল হল
|
২৩
সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত
‘স্কাইফল’ জেমস বন্ড
সিরিজের যত নম্বর ছবি
|
৫৮
যত বছর বয়সে সরকারি
চাকরি পেলেন অসমের
বরপেটার কৈলাশ তালুকদার
|
১১১৮
ভোটে জিতবেনই, ধরেই
নিয়ে
যত শব্দের বিজয়-ভাষণ
তৈরি
করে রেখেছিলেন
ওবামা-প্রতিদ্বন্দ্বী
মিট রোমনি |
|
|
|
|
|
|
অ
সী
ম
রা
য় |
|
|
সাংসদ ভুল শুনতে পারে, সেই সে ছোট ভুলকে
দুষ্টু কিছু কাগজ চ্যানেল যাচ্ছে কেবল চুলকে।
দুবরাজপুর ভুল ভেবো না, একটুও নেই খটকা
আওয়াজ হলেও বুলেট তা নয়... কালীপুজোর পটকা! |
তিনিই বোঝেন এই সময়ের কোনটা প্রায়রিটি
শিল্প নাকি স্টারের হুজুগ... আমজনতার সিটি।
রাষ্ট্র যখন গুলিয়ে ফ্যালে
কারখানা আর কার্নিভ্যালে
চাকচিক্যে শুকোয় খিদে... চোখের জলের চিঠি। |
|
|
লেটারিং বেটারিং |
|
দু’পাশে মনস্টার-নদী, মধ্যে টলোমলো গদি |
|
|
|
|
|
|
এই ছবির সংলাপ লিখেছেন রতন দত্ত, সি ৬/১, রবীন্দ্রপল্লি |
ডান দিকে ছবির দু’জন কী বলছে?
সাদা পাতায়
লিখে পাঠান।
প্রতি ডায়লগ ২০ শব্দের মধ্যে।
ঠিকানা:
নয়া সংলাপ,
রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১ |
|
|
|
|
|
|
|
|
|