ইস্টবেঙ্গল: ৩ (চিডি-২, মননদীপ)
চার্চিল ব্রাদার্স: ০ |
গোয়ার মাঠে শাপমুক্তি ঘটল ইস্টবেঙ্গলের। টানা ছয় ম্যাচ পর নেহরু স্টেডিয়ামে চার্চিল ব্রাদার্সকে বিধ্বস্ত করে।
ঘরের মাঠে ট্রেভর জেমস মর্গ্যান টানা ২৮ ম্যাচ অপরাজিত থাকার অনন্য নজির তো গড়লেনই, আই লিগের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থানেও সসম্মান পৌঁছে গেলেন (৬ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট)। লিগ টেবিলে দুইয়ে ডেম্পো (১৩) এবং তিনে চার্চিলকে (১২) ঠেলে দিয়ে।
মগজাস্ত্রের লড়াইয়ে ফের সুভাষ ভৌমিককে টেক্কা দিলেন লাল-হলুদের ব্রিটিশ কোচ। শিলিগুড়ির পর গোয়াতেও। নিউ আলিপুরের বাসিন্দার বিরুদ্ধে টানা পাঁচ ম্যাচ অপরাজিত মর্গ্যান।
ওপরের পরিসংখ্যানগুলোর সঙ্গে আরও একটা চমকপ্রদ ঘটনা যোগ হতে পারত, যদি শনিবারের রেফারি সন্তোষ কুমার ইস্টবেঙ্গলকে নিশ্চিত পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত না করতেন। চার্চিলের ডিফেন্ডাররা চিডিকে বক্সের মধ্যে কনুইয়ের গুঁতোয় ফেলে দিচ্ছে দেখেও, না দেখার ভান করে চলে গেলেন তিনি। না হলে এই মরসুমে আই লিগে হ্যাটট্রিকের তালিকায় র্যান্টি-ওডাফারাদের পাশে চিডির নামটাও জ্বলজ্বল করত। লাল-হলুদের গোলমেশিন অবশ্য এ সব ভেবে হতাশ নন। বরং গোয়া থেকে ফোনে তাঁর যুক্তি, “হ্যাটট্রিকের সুযোগ আবারও পাব। ও সব নিয়ে মাথাব্যথা নেই। দল জিতেছে এটাই বড় ব্যাপার।”
|
চিডি: জোড়া গোলের হাসি। |
চিডি-র ছোঁয়ায় মাত্র পাঁচ মিনিটেই ইস্টবেঙ্গলের গোল-যাত্রা শুরু। হরমনজিৎ খাবরার ‘সোলো রান’ চার্চিলের দুই স্টপারের মাঝে আটকে গিয়েছিল। জটলার মধ্য থেকে ছিটকে আসা বল ধরে সন্দীপ নন্দীকে বোকা বানিয়ে চিডি-র গোল। শুরুর এই ধাক্কা সামলে সুভাষের দল আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। উলটে লাল-হলুদ মাঝমাঠের দাপটে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়েন বেটোরা। চোটের জন্য মেহতাব হোসেন খেলতে পারলেন না তো কী? প্রথম দলে সুযোগ পেয়েই চমকে দিলেন সুবোধ কুমার। পেনকে সাহায্য তো করলেনই, চিডি-মননদীপদের জন্যেও কম্পাস-মাপা পাস বাড়ালেন। ম্যাচের পরে সুভাষ ভৌমিক অবশ্য বললেন, “অনেক গোলের সুযোগ পেয়েছি। ফুটবলাররা গোল করতে না পারলে আমি কী করব?”
চিডির দ্বিতীয় গোল ইনজুরি টাইমের একেবারে শেষ লগ্নে। সেই সন্দীপকে বোকা বানিয়েই প্রায় হেঁটে হেঁটে । কিন্তু চিডি-র জোড়া গোলের ঔজ্জ্বল্য কিছুটা যেন ফিকে করে দিলেন মননদীপ। ম্যাচ শেষ হওয়ার তেরো মিনিট আগে তাঁর তিরিশ গজ দূর থেকে নেওয়া বাঁ পায়ের ইনস্টেপে বাঁক খাওয়ানো শট সোজা জড়িয়ে যায় চার্চিলের জালে। গোলটা সোনার ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মতো। গোয়া থেকে ফোনে মর্গ্যান বলছিলেন, “চিডি আর মননদীপ অসাধারণ গোল করেছে। স্পোর্টিং ম্যাচ ড্র করার পরে যেটুকু হতাশা ছিল, সব মুছে দিল ওরা।” মর্গ্যানের কথাতেই স্পষ্ট, মননদীপের বিশ্বমানের গোল রবিন সিংহের প্রথম দলে ঢোকা আরও কঠিন করে দিল! দুই সিংহের লড়াইয়ে আপাতত অ্যাডভান্টেজ মননদীপ।
ফেডারেশন কাপ জেতার পর থেকে শুধুই ছুটছে ইস্টবেঙ্গল। এখন দেখার, এই দৌড় কলকাতায় আই লিগ আনতে পারে কি না? |