বীরেন্দ্র সহবাগ সে দিন লাহৌরে আজকের মতো শৃঙ্খলাবদ্ধ ইনিংস খেললে তাঁদের রেকর্ডটা আগেই ভেঙে যেত! কিন্তু বিনু মাঁকড়-পঙ্কজ রায়ের বিশ্বরেকর্ড থেকে মাত্র ৩ রান দূরে সহবাগ এমন চামচে করে শট খেলেছিলেন যে তাঁর এবং রাহুল দ্রাবিড়ের পার্টনারশিপ তখনই ভেঙে যায়। তাঁরা শেষ করেন ৪১০ রানে। পঙ্কজ-বিনু তুলেছিলেন ৪১৩।
পঙ্কজ-বিনুর বিশ্বরেকর্ড টানা বাহান্ন বছর অক্ষত থাকার পর বাংলাদেশে তা ভাঙেন দক্ষিণ আফ্রিকান ওপেনাররা। গ্রেম স্মিথ ও নীল ম্যাকেঞ্জি। পঙ্কজ অবশ্য তা দেখে যাননি। তার অনেক আগেই মারা যান। সেই বিশ্বরেকর্ড আজও ভারতীয় ক্রিকেট অলিন্দের আলোচনায় বারবার ফিরে আসে। বাহান্ন বছর ধরে একটা ব্যাটিং রেকর্ড চরম ব্যাটিং অধ্যুষিত যুগে অক্ষত থাকার নমুনা দু’টো নেই। অবশ্যই ব্র্যাডম্যানের ৯৯.৯৪ ব্যাটিং গড় বাদ দিয়ে। |
ক্লাব হাউসের গায়ে এ ভাবেই সচিনের পাশে থাকবেন পঙ্কজ-বিনু। |
ভারতীয় জুড়ির সেই কীর্তি এবং ক্রিকেটে বাংলার প্রথম পুরুষের সম্মানার্থে সিএবি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইডেনে ক্লাব হাউস গেটের ঠিক ওপরে তাঁর ও মাঁকড়ের ছবি বসাবে। যার পশ্চাৎপটে ৪১৩-র সেই স্কোর বোর্ড।
মাসখানেক আগে কুমোরটুলি পার্কে পঙ্কজের মূর্তি বসেছে। একান্তই পুরসভার উদ্যোগে। সিএবি-র কোনও ভূমিকা ছিল না। তখন পঙ্কজের ছোট ভাই প্রাক্তন বাংলা ক্রিকেটার নিমাই রায় অনুযোগ করেছিলেন, “এখানে দাদার মূর্তি বসিয়ে কী লাভ! দাদার তো যাবতীয় কীর্তি ময়দানে। ইডেনে। স্মৃতিচিহ্ন কিছু হলে সেখানে হওয়া উচিত।”
এমনিতেও ক্রিকেটারমহলে অভিযোগ ছিল, পঙ্কজের মৃত্যু-পরবর্তী সিএবি কোনও কিছু করেনি তাঁর জন্য। একটা টুর্নামেন্ট পর্যন্ত তাঁর নামে নেই। বা বিশেষ কোনও বৃত্তি। এ বার ইডেনে ভারত-ইংল্যান্ড টেস্টের আশি বছর পূর্তি সমন্বিত বিশেষ টেস্টের আগে সিএবি যে সব পরিকল্পনা নিয়েছে ক্লাব হাউসের প্রচ্ছদে পঙ্কজের ছবি বসানো তার অন্যতম। এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়ে রায় পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন জগমোহন ডালমিয়া।
ক্লাব হাউসের ছাদে পরপর লাগানো ছবিগুলোর বয়ান এ রকম:
ইডেনে প্রথম সেঞ্চুরির পর উচ্ছ্বসিত সৌরভ। বিশ্বকাপ হাতে কপিল। ইডেনে সেই ঐতিহাসিক পার্টনারশিপের পর দ্রাবিড়-লক্ষ্মণ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হাতে ধোনি। সর্বাধিক রানের মালিক হয়ে সচিন। তার পাশেই থাকবেন পঙ্কজ-বিনু।
বাঙালি ক্রিকেট দর্শকের স্মৃতিতে অমর হয়ে! বাকি ফ্রেমগুলোর সাথে! |