বিনোদন কোলাভেরির পর এ বার
ঝড় তুলেছে নেনজুকুলে
ত বছর ছিল ‘কোলাভেরি ডি’। এ বছরের শেষটা হচ্ছে ‘নেনজুকুলে’ দিয়ে।
এ আর রহমানের নতুন তামিল গান এখন আসমুদ্র হিমাচল শ্রোতাদের ঠোঁটে। ৩ নভেম্বর এম টিভির একটি অনুষ্ঠানে দেখানোর পর থেকেই নেনজুকুলে মোটামুটি ঝড় তুলে দিয়েছে। এখনও অবধি চ্যানেলটির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গানটির টিজার দেখেছেন পাঁচ লক্ষেরও বেশি মানুষ। পুরো গানটি দেখেছেন প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ। অনেকেই বলছেন, এ ভাবে চললে খুবই তাড়াতাড়ি ‘কোলাভেরি ডি’-র পাঁচ কোটি ইউটিউব হিটকে ছাপিয়ে যাবে ‘নেনজুকুলে’।
গত বছর এই নভেম্বর মাসেই ‘থ্রি’ নামে একটি ছবিতে ‘কোলাভেরি ডি’ গেয়ে গোটা দেশকে মাতিয়ে দিয়েছিলেন ধনুষ। সম্পর্কে রজনীকান্তের জামাতা ধনুষকে তার আগে লোকে অভিনেতা বলেই চিনত। কিন্তু গায়ক ধনুষ প্রথম সুযোগেই ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। সুরকারও ছিলেন নবীন। সবচেয়ে বড় কথা, তামিল গান হওয়া সত্ত্বেও কোলাভেরি সারা ভারতের যুবসমাজের কাছে তুমুল ভাবে গৃহীত হয়ে ছিল। ‘নেনজুকুলে’-ও মণি রত্নমের তামিল ছবি ‘কাদাল’-এর গান। সুরকার খোদ এ আর রহমান। রহমানের সঙ্গে গানটি গেয়েছেন ২৪ বছর বয়সী শক্তিশ্রী গোপালন।
শক্তিশ্রী পেশায় এক জন আর্কিটেক্ট। ১৩ বছর কর্নাটকী সঙ্গীত চর্চা করার পরে এখন একটি রক ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন তিনি। জ্যাজ সঙ্গীতও চর্চা করেছেন। ‘নেনজুকুলে’ যে এত জনপ্রিয় হবে, আদৌ ভাবেননি তিনি। বললেন, “আমি নিশ্চিত, রেকর্ডিংয়ের সময় রহমান স্যারও এমনটা হবে ভাবেননি।” কী ভাবে ঘটে উঠল যোগাযোগটা? শক্তিশ্রী ফিল্মে গাওয়া শুরু করেছিলেন ২০০৮ সাল থেকে। কিন্তু রহমানের সঙ্গে কাজ এই প্রথম। এক দিন রহমানের অফিসে গিয়েছিলেন একটা কাজ নিয়ে। সেই সময়ই ওঁকে একটা ‘ডেমো’ সিডি দিয়ে আসেন। তার কয়েক ঘণ্টা পরেই রহমান বলেন, মণি রত্নমের ‘কাদাল’ ছবির জন্য একটা গান রেকর্ড করতে হবে। “আমি ভেবেছিলাম, গানটা স্ক্র্যাচ ভার্শান হিসেবে আমাকে দিয়ে গাওয়াচ্ছেন। এটা যে ছবিতে শেষমেশ থাকবে এবং এত বড় হিট হবে সেটা আমার কাছে ভীষণ আশ্চর্যের ঘটনা।”
শক্তিশ্রী গোপালন
শ্রোতারা বলেন, শক্তিশ্রীর কণ্ঠস্বরে রয়েছে এক অদ্ভুত ম্যাজিক। চিনির মতো মিষ্টি নয় সে গলা। কিন্তু একটা আশ্চর্য মাদকতা রয়েছে। তার সঙ্গে রয়েছে রঞ্জিৎ বারোটের মিউজিক প্রোডাকশন, অ্যান ম্যারি সিম্পসনের বেহালা। সেটাই আকর্ষণ করছে শ্রোতাদের। যেমন, ২২ বছরের শৌভিক ঘোষ। সদ্য স্নাতক। গানটার মানে বোঝেনি। কিন্তু বারবার আইপডে শুনে চলেছে। বলল, “কোলাভরি ডি’ ভাল লাগত ছন্দের জন্য। কিছু ইংরেজি কথা ছিল। সেই দেখে পুরো গানটার মানেটা আন্দাজ করতে পারি। তবে ‘নেনজুকুলে’ পুরোটাই তামিল ভাষায়। কিন্তু মেলোডি একেবারে ভাসিয়ে নিয়ে যায়।”
যশ চোপড়ার ‘জব তক হ্যায় জান’-এর টাইটল ট্র্যাকও শক্তিশ্রীর গাওয়া। শক্তিশ্রী বলেন, দুটো গানের মধ্যে কোনও তুলনা হয় না। “হিন্দি গানটির জোর বেশি। তামিল গানটি ডেলিকেট। রেকর্ডিংয়ের সময় রহমান স্যার বলেছিলেন, মানুষ যেন তোমার গান শুনে ভালবাসাটা অনুভব করতে পারে।”
ভালবাসার এই আবেগই মনকে ছুঁয়ে যাচ্ছে ভাষার প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে। এমনটাই মনে করেন স্নেহা এন কান্নু, সদ্য কলকাতা থেকে এম টেক পাশ করে তিরুঅনন্তপুরমে পড়তে গিয়েছেন। বললেন, “বাঙালি-অবাঙালি নির্বিশেষে আমার সব বন্ধুরা এখন ‘নেনজুকুলে’ গাইছে। ‘নেনজুকুলের’ অর্থ হল হৃদমাঝারে...।” শক্তিশ্রীর গান এই ভাবে সাড়া ফেলায় আপ্লুত রহমান নিজেও। ট্যুইটারে লিখেছেন, ‘ও মাই গড...ও মাই গড...ডিডন্ট এক্সপেক্ট সাচ কাইন্ড অফ রিমার্কস...। থ্যাঙ্কস সো মাচ ফর অল ইওর লাভ।”
শক্তিশ্রী এখন বাংলায় গান গাইতে আগ্রহী। ‘কহানি’-তে অমিতাভ বচ্চনের গাওয়া ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে’ শুনে দারুণ অনুপ্রাণিত। “সঙ্গীত সব সময় ভাষার ব্যবধান ঘুচিয়ে দেয়। টলিউড ভাল সুর করলে বাংলায় গাইব,” বলছেন তিনি।
সুদূর আর্জেন্তিনার একটি গ্রামে বসে সুরকার শান্তনু মৈত্র এখন শুনছেন ‘নেনজুকুলে’। শান্তনু বললেন, “একটা ভাল গান ভাইরাল হিট হয়েছে দেখে আনন্দ হচ্ছে। গায়িকার গলায় দরদ আছে। ওর সঙ্গে বাংলা আর হিন্দি দুটো ভাষাতেই কাজ করতে চাই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.