আগাম অবসরের বিজ্ঞপ্তি উত্তরে |
দক্ষিণবঙ্গের তিন পরিবহণ সংস্থাকে এক করার ভাবনা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ভর্তুকি কমাতে সংস্কারের পথে পা রাখছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
উত্তরবঙ্গ সরকারি পরিবহণ নিগম কর্মীদের আগাম অবসর প্রকল্প চালু করে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে বুধবার। এই প্রকল্পে সামিল হতে ইচ্ছুক কর্মীদের আবেদন করতে হবে ৩০ দিনের মধ্যে। এ বার, সিএসটিসি, সিটিসি এবং ভূতল পরিবহণ নিগমরাজ্যের তিনটি পরিবহণ নিগমকে একত্রীকরণ করে পুনর্গঠন করার জন্য কাল, শুক্রবার রাজ্য মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব পেশ করা হচ্ছে। প্রস্তাবটি পাস হলে তিনটি নিগমের উদ্বৃত্ত কর্মীদের জন্য আগাম অবসর প্রকল্প চালু করার ঘোষণা শুধু সময়ের অপেক্ষা বলে জানিয়েছেন রাজ্য পরিবহণ দফতরের এক কর্তা।
দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গ পরিবহণ নিগম-সহ মোট পাঁচটি সরকারি পরিবহণ সংস্থার হাতে ৩০টিরও বেশি ডিপো রয়েছে। এই ডিপোগুলির অব্যবহৃত এবং উদ্বৃত্ত জমি সরকারি রাজস্ব আদায়ে কী ভাবে কাজে লাগানো যায়, সে ব্যাপারে পরামর্শদাতা নিয়োগের প্রস্তাবও মন্ত্রিসভার ওই বৈঠকে পেশ করবে পরিবহণ দফতর।
দফতরের এক কর্তা জানান, বিপুল লোকসানের দায় এড়াতে মূলত কলকাতা-কেন্দ্রিক তিনটি পরিবহণ নিগমকে একত্রিত করে একটি সংস্থায় পরিণত করা হবে, নাকি আলাদা আলাদা ভাবে সেগুলির পুনর্গঠন করা হবে-- তা ঠিক করার দায়িত্ব কোনও পরামর্শদাতা সংস্থার হাতে দিতে চায় রাজ্য সরকার। সে জন্য উপযুক্ত পরামর্শদাতা নিয়োগের প্রস্তাবও মন্ত্রিসভার বৈঠকে আনা হচ্ছে। অর্থ দফতরের কাছে পরামর্শদাতা সংস্থার যে অনুমোদিত তালিকা রয়েছে, তারই একটিকে বেছে নিতে পারে মন্ত্রিসভা।
পরিবহণ দফতরের বক্তব্য, ওই তিনটি নিগমের মিলিত আয় বছরে ১৩০ কোটি টাকা। আর ব্যয় হয় ৫০০ কোটি টাকা। ফলে ফি বছর সরকারকে ভর্তুকি দিতে হয় প্রায় ৩৭০ কোটি টাকা। পরিবহণ দফতরের মতে, সিএসটিসি, সিটিসি এবং ভূতল পরিবহণ নিগম মূলত কলকাতাতেই বাস ও ট্রাম চালায়। অথচ নিগমগুলির মধ্যে কোনও সমন্বয় নেই। দেখা যাচ্ছে, মোটামুটি একই এলাকায় ওই তিনটি সংস্থার বাস চলে। ফলে আয় বাড়ানোর সুযোগ কমছে। কর্মীদেরও উপযুক্ত ভাবে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। নতুন প্রস্তাবে সেই সমস্যা মিটবে। তিনটি নিগম মিলিয়ে কর্মীর সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার। মহাকরণের খবর, বাম আমলেও পাঁচটি সরকারি পরিবহণ নিগমকে পুনর্গঠনের প্রস্তাব উঠেছিল। সরকার নিযুক্ত পরামর্শদাতা সংস্থা তাদের সুপারিশও জমা দেয়। সেই সুপারিশ ধামাচাপা পড়ে যায়।
এখন তিনটি নিগমে মোট বাসের সংখ্যা প্রায় ১৪০০। এর মধ্যে দৈনিক গড়ে রাস্তায় বেরোয় ৮০০-রও কম বাস। সিটিসি-র কাছে কাগজে-কলমে ট্রাম রয়েছে ২৫০টির বেশি। দৈনিক রাস্তায় বেরোয় মাত্র ১২০ থেকে ১২৫টি। |