পশ্চিমবঙ্গে টেলিভিশনে সেট টপ বক্স লাগানোর সময়সীমা এ বার টেনে নিয়ে যাওয়া হল চলতি বছরের শেষে। আগামী
৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই সময়সীমা বাড়ানো হল বলে বুধবার রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে। এমএসও এবং অপারেটর-সূত্রের ইঙ্গিত, রাজ্যের কাছে আবেদন করে তা আগামী মার্চ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। এক এমএসও-সূত্রের কথায়, “কেন্দ্র কড়া না-হলে সময়সীমা দফায় দফায় আরও বাড়িয়ে নেওয়াও অসম্ভব নয়।”
বস্তুতই বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হাতছাড়া করেও রাজ্য সরকার বার বার কেন সময় বাড়িয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের কর্তারাও বিভ্রান্ত। রাজ্যের চাপেই সেট টপের সময়সীমা প্রথম দফায় ৩১ জুলাই থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় বাড়ে ১৫ দিন। আজ, বৃহস্পতিবার সেই বর্ধিত মেয়াদ ফুরনোর কথা ছিল। তার আগেই তৃতীয় দফায় তা টেনে নিয়ে যাওয়া হল আরও দেড় মাস! এ দিন রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়: এমএসও, অপারেটরেরা সেট টপ বক্স লাগানোর মেয়াদ আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, রাজ্য যা সমর্থন করে।
কেন এই সমর্থন?
এ ক্ষেত্রে সরকার দিচ্ছে সেই পুরনো যুক্তিই যথেষ্ট সংখ্যক সেট টপ বক্স নেই। এবং এই পরিস্থিতিতে সেট টপ বক্স বাধ্যতামূলক হলে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে প্রশাসনের আশঙ্কা।
রাজ্যের নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এ দিন বলেন, “কেন্দ্র
যাই বলুক, আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের দায়িত্ব। টেলিভিশনে সিগন্যাল বন্ধ হয়ে গেলে লোক এখানে রাস্তায় নেমে আসবে। দিল্লি তার দায়িত্ব নেবে?” মন্ত্রীর দাবি: দিন দুয়েক আগে এমএসও-রা তাঁকে অনুরোধ করে বলেছিলেন, সেট টপ বক্স লাগানোর সময়সীমা এ বছরের শেষ তারিখ অবধি বাড়ালে সবচেয়ে ভাল হয়। “আমরা তো এ নিয়ে সরকারি
ভাবে কিছু বলতে পারি না।
সময়সীমা বাড়ানো-কমানোর দায়িত্বও আমাদের নয়। তবে এখানে টেলিভিশনের চ্যানেল বন্ধ করলে যে বিরাট হাঙ্গামা ছড়িয়ে পড়বে, সে দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে।” মন্তব্য ফিরহাদের।
এবং রাজ্য সরকারের তরফে দিল্লিকে এ কথাই জানানো হয়েছে। এমতাবস্থায় দিল্লি কী করবে?
কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের এক সূত্রের দাবি: চার মেট্রো শহরে (কলকাতা-দিল্লি-চেন্নাই-মুম্বই) কেব্ল টিভিতে ডিজিট্যাল সম্প্রচার বাধ্যতামূলক করার লক্ষ্যে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি হচ্ছে। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় তথ্য-সচিব উদয় ভার্গব, সম্প্রচার বিভাগের যুগ্ম সচিব সুপ্রিয়া সাহু-সহ মন্ত্রকের আধিকারিকেরা গত সোমবার দিল্লিতে চ্যানেল-কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, কলকাতা, দিল্লি ও মুম্বইয়ের এমএসও-রা যাতে ডিজিট্যাল অ্যাকসেস সিস্টেম (ড্যাস)-এর লাইসেন্স নিয়ে মেট্রো এলাকার বাইরের অ্যানালগ সিগন্যাল মেট্রোয় চালাতে না-পারেন, তার ব্যবস্থা হবে। বিভিন্ন এমএসও-র বিরুদ্ধে এমন অভিযোগই উঠেছে। মন্ত্রকের এক মুখপাত্র এ দিন দিল্লি থেকে বলেন, আইন লঙ্ঘন করে মেট্রো এলাকার বাইরের জন্য বরাদ্দ অ্যানালগ বাক্স থেকে মেট্রো এলাকায় সম্প্রচার চালু রাখার প্রমাণ পেলে ‘দোষী’ এমএসও-র লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হবে। |