সচিন তেন্ডুলকর ভারতীয় ক্রিকেট দলের যে সংসারকে নিজের মতো করে পরম মমতায় সাজিয়ে দিচ্ছেন। সেখানে সিরিজ জুড়ে শান্তি অক্ষুণ্ণ থাকবে তো? সিরিজ শুরুর আগের দিন তা নিয়ে সংশয় তুলে দিলেন স্বয়ং অধিনায়ক ধোনি।
যুবরাজ সিংহের সঙ্গে তাঁর শীতল সম্পর্ক নিয়ে সেই অনেক দিন ধরেই গুঞ্জন। যুবরাজ ঘনিষ্ঠরা মনে করেন অসুস্থ থাকাকালীন যে ক’জন নিয়মিত খোঁজখবর নিয়ে গিয়েছেন, সেই অগ্রগণ্য তালিকায় ধোনি ছিলেন না। এর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যুবরাজ দলে ঢুকলেও শোনা যায় ভারত অধিনায়কের সর্বান্তঃকরণে পৃষ্ঠপোষকতা পাননি। একটা ম্যাচে তো ব্যাটিং অর্ডরে তাঁকে নামিয়ে দেওয়ায় ডাগআউটে বসা যুবরাজ হেলমেট ছুড়ে দেন। এত জোরে ছোড়েন যে হেলমেট ভেঙে যায়।
এর পর দেশে ফিরে ধোনি সাক্ষাৎকারে যুবরাজের টেস্ট ফিটনেস নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করতে থাকেন। বলেন, “দীর্ঘ সময়ের ক্রিকেটে খেলার মতো ফিটনেস ওর এখনও আসেনি।” অধিনায়কের প্রকাশ্য এমন মন্তব্য করা যুবরাজের অবশ্যই ভাল লাগেনি। বিশেষ করে অদূরেই যখন টেস্ট টিম নির্বাচন তখন তাঁর শিবিরের ভয় ছিল, এতে নতুন নির্বাচকেরা প্রভাবিত হয়ে পড়তে পারেন। |
এত কাছে, তবু কত দূরে। বুধবার মোতেরায়। ছবি: উৎপল সরকার |
টানা ঘরোয়া ক্রিকেটে রান। ডাবল সেঞ্চুরি। পাঁচ উইকেট। এত সবে যুবরাজ নিজের নির্বাচন নিশ্চিত করে নেন। বাদ পড়ে যান ক্যাপ্টেনের ঘনিষ্ঠ সুরেশ রায়না। ধোনি নাকি এতে খুব খুশি নন, এমন খবর রটেছিল। বুধবার ভারতীয় সাংবাদিক সম্মেলনে যা ঘটল তার পর কথাটাকে আর রটনা বলে উড়িয়ে দেওয়ার উপায় নেই। সিরিজে তাঁর প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনেই তো ঝোলা থেকে বেড়াল বার হয়ে যাওয়ার মতো ধোনির যুবরাজ-উষ্মা প্রকাশ্য হয়ে গেল।
এক সাংবাদিক হিন্দিতে জিজ্ঞেস করেছিলেন, পারবে তো যুবরাজ প্রয়োজনে দু’দিন ফিল্ডিং করার ধকল নিতে? ধোনি বললেন, “আপনাকে উত্তর দেব কী। আপনি তো ঠিক আমার মুখের কথাটাই কেড়ে নিয়েছেন। দেখতে হবে এখন যাতে দু’দিনের কমে আমরা ওদের অল আউট করতে পারি।” বলা মাত্র গোটা ঘর নিস্তব্ধ হয়ে যায়। এটা কী বললেন ধোনি? এ তো পরিষ্কার অনাস্থা প্রকাশ।
সুচতুর ধোনি নিজেও বোধহয় বুঝেছিলেন, মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় পড়ে যেতে পারে। দ্রুত তিনি ইংরেজিতে বাকি উত্তর দেন। যুবরাজ সম্পর্কে ভাল ভাল কথা বলতে থাকেন। ব্রিটিশ সাংবাদিকেরা এই মন্তব্যগুলোই লিখেছেন। তাঁরা তো আর হিন্দিতে করা ব্যঙ্গ বোঝেননি।
যুবরাজ-শিবিরের কানে গিয়েছে এই মন্তব্যের কথা। তাঁরা প্রথমে ইন্টারনেটে ধোনির করা মন্তব্যের দ্বিতীয় ভাগটা দেখেন, যেখানে শুধুই ভাল ভাল কথা। এর পর রাতের দিকে জানতে পারেন, বক্তব্যের প্রথম অংশটা কী অসম্ভব বিতর্কিত। রাতে টিম হোটেলে দাঁড়িয়ে যুবরাজের ঘনিষ্ঠ বন্ধু বললেন, “কী হয়েছে ধোনির! এটা তো শকিং!” |