নজরদারির মধ্যেই সারা রাত শব্দবাজির দাপট |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
নজরদারি ছিলই, তবে তার মধ্যেও শব্দবাজি ফেটেছে মেদিনীপুর-খড়্গপুর দুই শহর ও শহরতলিতে। কয়েকটি এলাকায় বেশ রাত পর্যন্ত বাজি ফাটায় সমস্যায় পড়েছেন এলাকাবাসী। কিন্তু নজরদারি চালিয়েও শব্দবাজির তাণ্ডব ঠেকানো গেল না কেন? সদুত্তর নেই জেলা পুলিশের আধিকারিকদের কাছেও। তবে পুলিশের দাবি, অন্য বারের থেকে এ বার কম বাজি ফেটেছে। রাতভর রাস্তায় টহল চলেছে। ফলে অনভিপ্রেত ঘটনাও ঘটেনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল।
কালীপুজো ও দীপাবলি ঘিরে বুধবার দিনভরই উৎসাহ উদ্দীপনা ছিল মেদিনীপু-খড়্গপুরে। সন্ধ্যা হতেই পথে নেমেছেন সাধারণ মানুষ। মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড়, সমান তালে চলেছে বাজি ফাটানোও। কেউ বাড়ির ছাদে, কেউ বা রাস্তায় এসে বন্ধুদের সঙ্গে মেতেছে বাজি ফাটানোয়। মেদিনীপুর শহরের কেরানিতলা, মানিকপুর, বিধাননগর থেকে খড়্গপুরের ইন্দা, মালঞ্চ, খরিদা সর্বত্রই একই ছবি। উৎসব ঘিরে অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে দুই শহরের বিভিন্ন মোড়ে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত চলেছে কড়া নজরদারি। ফলে প্রকাশ্য কোনও ঝামেলা, বিশেষ করে মহিলাদের অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়নি। প্রতি বারের মতো রাতেও অনেকে সপরিবারে পুজো দেখতে বেরিয়েছেন। এই সময় সাধারণত মদ্যপদের উপদ্রব বাড়ে। ফলে মহিলাদের অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়। কেউ কেউ পথচলতি মানুষকে লক্ষ্য করে শব্দবাজিও ছুঁড়ে দেন। কিন্তু এ বার বাড়তি নজরদারির ফলে এমন ঘটনা ঘটেনি বলেই দাবি জেলা পুলিশের এক সূত্রের।
তবে শব্দবাজির তাণ্ডব ঠেকানো যায়নি বলেই অভিযোগ। মেদিনীপুরের বাসিন্দা সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, “শুধু নজরদারি চালিয়ে শব্দবাজি ফাটানো বন্ধ করা যাবে না। শহর ও শহরতলিতে বিকট শব্দের বাজি বিক্রি করা বন্ধ করা দরকার।” তিনি জানান, রাতে বিভিন্ন মোড়ে পুলিশ কর্মীরা ছিলেন। তবে কেরানিতলা, কোতবাজার-সহ নানা এলাকাতেই শব্দবাজি ফেটেছে। প্রায় একই বক্তব্য খড়্গপুরের অয়ন মুখোপাধ্যায়ের। তাঁর কথায়, “অবৈধ শব্দবাজি বিক্রি বন্ধ করতে পারলেই একমাত্র পরিস্থিতি পাল্টানো যেতে পারে। শহর ও শহরতলির বাজারে বিকট শব্দের বাজি না এলে খোলাবাজারেও তা বিক্রি হবে না। ফলে কেনার সুযোগও থাকবে না।” পুলিশ অবশ্য জানায়, তাঁদের তরফ থেকে তৎপরতার অভাব ছিল না। অবৈধ শব্দবাজির খোঁজে বিভিন্ন এলাকায় হানা দেওয়া হয়েছে। শুধু খোলাবাজার নয়, যেখানে বাজি তৈরি হয়, সেখানেও তল্লাশি চালানো হয়েছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেশ কিছু শব্দবাজি আটকও করা হয়েছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “সর্বত্রই নজরদারির বন্দোবস্ত ছিল। বাজি ফাটলেও তার মাত্রা অন্যান্য বারের থেকে কম ছিল। অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেনি। সকলে সুষ্ঠ ভাবে পুজো দেখেছেন। আনন্দ করেছেন।” |