তল্লাশির গাফিলতি, পর্ষদ অভিযুক্ত
লদ গোড়াতেই। যার হাত ধরে শহরে ফিরল শব্দবাজির পুরনো তাণ্ডব।
অন্যান্য বছর দীপাবলির অন্তত মাস তিনেক আগে থেকেই দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ শহরতলির বিভিন্ন বাজি কারখানায় হানা দিয়ে নিষিদ্ধ শব্দবাজি আটকের অভিযান শুরু করে। এ বছর পর্ষদের তরফে তেমন উদ্যোগ দেখা যায়নি। তাতেই দীপাবলির রাতে শব্দের দাপাদাপিতে কেঁপেছে মহানগরের উত্তর থেকে দক্ষিণ।
বর্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় বাজি তৈরির কাজ। ফি-বছর রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অভিযানও শুরু হয় তখন থেকেই। অন্য বছর দুর্গাপুজোর তিন মাস আগে থেকেই বিভিন্ন জেলায় বাজির কারখানা ও গুদামে অভিযান চালায় পর্ষদ। এ বছর তেমন অভিযানও হয়নি। নিষিদ্ধ শব্দবাজি নিয়ে পর্ষদের এই গাফিলতিতে শঙ্কিত পরিবেশকর্মীরা সরকারের কাছে তাঁদের আশঙ্কার কথা আগাম জানিয়েছিলেন। পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর অভিযোগ, উৎপাদক এবং ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে শব্দবিধি শিথিল করতে চাইছে প্রশাসন।
সেই অভিযোগকেই কার্যত সত্য প্রমাণ করে এ বছর দেদার ফেটেছে শব্দবাজি। ‘সবুজ মঞ্চ’-এর তরফে যে পরিবেশকর্মীরা শব্দবাজির তাণ্ডবে সাধারণ মানুষের হয়রানি দেখতে পথে নেমেছিলেন, তাঁদেরও একই অভিজ্ঞতা। ওই মঞ্চের আহ্বায়ক নব দত্ত বলেন, “শব্দবাজির তাণ্ডব এ বছর মাত্রা ছাড়িয়েছে। শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল চত্বরে যে পরিমাণ শব্দবাজি ফেটেছে, তা-ও নজিরবিহীন।” দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান বিনয়কান্তি দত্ত অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, শব্দবাজি নিয়ন্ত্রণে পর্ষদ এ বার অনেক বেশি সফল। তাঁর কথায় “গত বছরের তুলনায় এ বার অর্ধেকেরও কম শব্দবাজি ফেটেছে। অফিসারদের কাছে ও ব্যক্তিগত ভাবে খবর নিয়েছি, এ বছর শব্দবাজি ফেটেছে খুবই কম।”
পর্ষদের এক অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক জানান, বাজি তৈরি শুরুর সময়েই কয়েক বার অভিযান চালালে নিষিদ্ধ বাজির উৎপাদকেরা ভয়ে কিছুটা নিরস্ত হন। সাধারণ ভাবে অগস্টে অভিযান শুরু হলেও পুলিশের সঙ্গে বৈঠক হয় জুলাইয়ে। এ বছর পর্ষদ তেমন অভিযানই চালায়নি। পুলিশের সঙ্গে বৈঠকও দেরিতে হয়েছে। তবে কলকাতা পুলিশ বিভিন্ন বাজারে হানা দিয়ে কিছু নিষিদ্ধ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করেছিল।
পর্ষদের ওই প্রারম্ভিক গাফিলতিতেই এ বছর শব্দবাজির এই বিপুল তাণ্ডব বলে মত ‘সবুজ মঞ্চে’র। নববাবুর অভিযোগ, “অভিযান বন্ধ রেখে পরোক্ষে নিষিদ্ধ শব্দবাজি তৈরিতেই উৎসাহ দিয়েছে পর্ষদ। সেই বাজি অবাধে ঢুকেছে শহরে।” মঞ্চের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে শব্দবিধি শিথিল না করার আবেদন জানানো হয় আগেই। নববাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছি, শব্দবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে রাজ্যে কয়েক জনের মৃত্যুও হয়েছে। ওই শহিদদের স্মরণ করেও সরকারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
শব্দবাজি মূলত মেলে পাড়া ও ফুটপাথের ছোট দোকানে। এগুলি যাতে সহজে না মেলে, তা নিশ্চিত করতে এ বছর শহরে ৩টি বাজি বাজার তৈরি করে কলকাতা পুলিশ। তা সত্ত্বেও শহর জুড়ে ছোট বাজির দোকানের অভাব ছিল না। আবার অনেক অত্যুৎসাহী হাওড়ার
বাঁকড়া বা দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলা থেকে গাড়ি ভর্তি করে নিষিদ্ধ শব্দবাজি কিনে এনেছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.