মানছে না পুলিশ
শব্দবাজিতে ফের কাঁপল শহর
শঙ্কা ছিল, রাত দশটার পরে বাড়বে শব্দবাজির দাপট। বাস্তবে কালীপুজোর সন্ধ্যা থেকেই শহর ও শহরতলির বিস্তীর্ণ এলাকায় তাণ্ডব চালাল শব্দদৈত্য। অলিগলি বা বহুতলের সামনে টহল দিয়েও সেই তাণ্ডব কার্যত সামলাতে পারল না পুলিশ। বরং সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত চলল চোর-পুলিশ খেলা।
প্রতি বছরের মতো এ বার কালীপুজোর আগে বহুতলের বাসিন্দাদের নিয়ে বৈঠক করেছিল পুলিশ। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পক্ষ থেকে বিশেষ ফর্ম বিলি করে বহুতলের আবাসিক কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকদের কাছ থেকে হলফনামা নেওয়া হয়েছিল। শব্দবাজি আটকাতে সংশ্লিষ্ট বহুতল আবাসিক কমিটি কী ব্যবস্থা নিয়েছে, ওই হলফনামায় তা জানাতে বলা হয়েছিল। এত ব্যবস্থা সত্ত্বেও কিন্তু কালীপুজোর সন্ধ্যা থেকেই শব্দবাজি নিয়ে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়েছে। যদিও কলকাতার পুলিশ কমিশনার রঞ্জিতকুমার পচনন্দা বলেন, “আমরা সারা রাত শহরে ঘুরেছি। মানুষের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, গত বছরের তুলনায় এ বার কম শব্দবাজি ফেটেছে।” শব্দবাজি নিয়ে সাধারণ মানুষ আগের থেকে সচেতন হয়েছেন বলেও তাঁর দাবি।
পুলিশের এই দাবির সঙ্গে কিন্তু বাস্তবের ফারাক রয়েছে বলে শহরের বাসিন্দারা জানান। তাঁরা জানিয়েছেন, পুলিশের টহলদার গাড়ি যেতেই ফের শুরু হয়েছে শব্দবাজির দৌরাত্ম্য। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত টহল দিয়েছে পুলিশ। সরকারি হাসপাতাল চত্বরেও দেদার শব্দবাজি ফেটেছে। পিজি, এনআরএস হাসপাতাল চত্বরে বাজির দাপটে আঁতকে উঠেছেন রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা। ফুলবাগানে বিধানচন্দ্র শিশু হাসপাতাল চত্ত্বরে শব্দবাজির তাণ্ডব চলে সারা রাত। সল্টলেকের দু’টি বেসরকারি হাসপাতাল শব্দবাজির তাণ্ডবে অতিষ্ঠ হয়ে পুলিশে লিখিত অভিযোগ জানায়।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কন্ট্রোল রুমে বুধবার ভোর চারটে পর্যন্ত অভিযোগ জমা পড়েছে ৬৬টি। পরিবেশ কর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’ পেয়েছে ৭৬টি অভিযোগ। পর্ষদের পক্ষ থেকে শব্দবাজির তাণ্ডব এ বার অনেক কমে যাওয়ার দাবি করা হলেও সবুজ মঞ্চের টহলদার দলের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।
দক্ষিণ শহরতলির বাইপাস সংলগ্ন এলাকার বহুতল আবাসনগুলির সামনে সন্ধ্যা নামতেই শব্দবাজির বিকট আওয়াজ শুরু হয়। আমতলা-বেহালা-ঠাকুরপুকুর এলাকায় ডায়মন্ড হারবার রোডে দেদার ফেটেছে শব্দবাজি। গভীর রাতে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের মোড়ে মোড়ে যুবকদের শব্দবাজি ফাটাতে দেখা গিয়েছে। বাজির দাপটে অতিষ্ঠ হাওড়া, সল্টলেক-সহ কলকাতা সংলগ্ন জেলার বাসিন্দারাও। বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, ইই, করুণাময়ী, কেবি, এফডি, সিবি, এই ব্লকে শব্দবাজি ফেটেছে বলে অভিযোগ। সল্টলেক সংলগ্ন মহিষবাথান, দত্তাবাদ, লেকটাউন, নয়াপট্টি, গোলাবাড়ি, ভিআইপি রোডে শব্দবাজি ফেটেছে দেদার। উত্তর শহরতলির দমদম, বরাহনগরেও একই ছবি।
নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগে কলকাতা পুলিশ মঙ্গলবার রাতে মোট ৮২৯ জনকে গ্রেফতার করে। উদ্ধার করেছে ৫৭৩ কেজি নিষিদ্ধ শব্দবাজি। বিধাননগর কমিশনারেটের ন’টি থানা এলাকা থেকে ১১১ জনকে গ্রেফতার ও ২৬৫ কেজি নিষিদ্ধ বাজি আটক হয়।
পিছিয়ে ছিল না হাওড়া। রাত ৮টার পর থেকে ভোর পর্যন্ত শহর জুড়ে অবাধে চলেছে শব্দবাজির তাণ্ডব। মধ্য হাওড়া ও উত্তর হাওড়ায় বাজি ফেটেছে বেশি। নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগে কুড়ি জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক হয়েছে ১১০ কেজি নিষিদ্ধ শব্দবাজি। হাওড়া সিটি পুলিশেরও দাবি, গত বারের তুলনায় কম বাজি ফেটেছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.