প্রায় ৮ মাস ধরে ‘সহায়’ প্রকল্প বন্ধ থাকায় ভিক্ষা করে দিন কাটছে গোঘাট-২ ব্লকের শ্যামবাজার পঞ্চায়েত এলাকার ২৭ জন উপভোক্তার। তৃণমূলের বাধায় প্রকল্পটি চালু করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছে সিপিএম। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের দাবি, সিপিএম পরিচালিত ওই পঞ্চায়েত পরিকল্পিত ভাবে গরিব মানুষকে খাদ্য থেকে বঞ্চিত করে রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি খারাপ করতে চাইছে।
বিডিও শিবপদ দাশগুপ্ত বলেন, “প্রকল্পটি কেন বন্ধ তা জানতে চেয়ে ওই পঞ্চায়েতের প্রধানকে সপ্তাহ খানেক আগে শোকজ করা হয়েছে। এখনও জবাব মেলেনি। অবিলম্বে যাতে প্রকল্পটি চালু করা যায়, সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী মানুষদের খাদ্য নিরাপত্তা-সহ অন্যান্য সহায়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ২০০৭ সালের ২৭ অক্টোবর ‘সহায়’ প্রকল্পটির কথা ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। হুগলিতে প্রকল্পটি শুরু হয় এ বছরের ১৭ মার্চ। পঞ্চায়েতের উদ্যোগে মূলত দু’বেলা রান্না করা খাবার বিলি করার কথা উপভোক্তাদের মধ্যে। কিন্তু সিপিএমের অভিযোগ, এই পঞ্চায়েতে উপভোক্তাদের রান্না করার খাবারের পরিবর্তে তৃণমূল টাকা দেওয়ার দাবি তুলেছে। রান্না করার খাবার পরিবেশনে বাধাও দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ম বহির্ভূত। এর জেরেই এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে বন্ধ হয়ে যায় প্রকল্পটি।
পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের মাধবী দিগার বলেন, “একটি রাজনৈতিক দলের ইন্ধনে গোলমাল হওয়ায় সহায় প্রকল্প বন্ধ রাখতে হয়েছে। ব্লক প্রশাসন টাকা দেওয়ার ব্যাপারে কোনও নির্দেশিকা দেয়নি।” বিডিও জানান, ‘সহায়’ প্রকল্পে শুধু রান্না করা খাবার দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। সেই খাবার পরিবেশনে যাঁরা বাধা দিচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা নিতাই নন্দী বলেন, “দলের কেউ কেউ হয়ত প্রথমে হঠকারিতা করে ফেলেছিল। বিষয়টি আমাদের জানানোর পর আমরা রান্না করা খাবারই খাওয়াতে বলি। তারপরও কেন ওই প্রকল্প বন্ধ বুঝতে পারছি না। মনে হয় সিপিএম রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি খারাপ করতে চাইছে।” উপভোক্তাদের মধ্যে লালপুর গ্রামের হাফিসা বিবি, জহুরা বেগম, অনন্তনগরের আরতি সাঁতরা, মামুদপুরের হারাধন আড়িরা জানান, খাবারের অভাবে তাঁদের ভিক্ষা করতে হচ্ছে। |