|
|
|
|
ত্রিপুরায় ভোটে কাঠি |
প্রার্থী তালিকা নিয়ে কংগ্রেসে টানাপোড়েন |
আশিস বসু • আগরতলা |
বিধানসভা নির্বাচনে দলের ‘সম্ভাব্য’ প্রার্থী তালিকা নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের ৬০টি আসনের জন্য ১৭০ থেকে ১৮০ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর নামের একটি ‘খসড়া তালিকা’ প্রদেশ কংগ্রেস তৈরি করছে। এই তালিকা তারা পাঠাচ্ছে ত্রিপুরার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক লুইজিনহো ফেলেইরোর কাছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের নেতৃত্বে ত্রিপুরার জন্য যে ‘স্ক্রুটিনি কমিটি’ তৈরি করা হয়েছে, তারা এই তালিকা পর্যালোচনা করে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠাবে। উল্লেখ্য স্ক্রুটিনি কমিটিতে তরুণ গগৈ ছাড়াও রয়েছেন ফেলেইরো, জিতিন প্রসাদ, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুদীপ রায়বর্মণ ও কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতা রতনলাল নাথ।
সাধারণ ভাবে প্রদেশের তরফে আসন পিছু তিন জন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম প্রদেশ কংগ্রেস সুপারিশ করে। কিন্তু প্রতি আসনেই দাবিদারের সংখ্যা অনেক। কংগ্রেসের দল, গোষ্ঠী, উপদলে সেই কারণেই ক্ষোভ-বিক্ষোভ চরমে। অভিযোগের আঙুল উঠতে শুরু করেছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির বিরুদ্ধে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্যস্তরের এক শীর্ষ স্থানীয় নেতার বক্তব্য, সুদীপবাবু এই সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নিজের গোষ্ঠীর লোকেদেরই প্রাধান্য দিতে চাইছেন। অন্য গোষ্ঠীর নেতাদের কোণঠাসা করার চেষ্টা করছেন সুদীপবাবু। তবে প্রদেশ কংগ্রেসের এই অভিযোগ অস্বীকার করে প্রদেশ কংগ্রেসের এক সূত্রের বক্তব্য, এ বারের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় যুব ও মহিলা প্রার্থীদের অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। খসড়া তালিকায় দশ শতাংশ মহিলা প্রার্থী ছাড়াও ২৫ শতাংশ নামই কম বয়সী, উদ্যমী কংগ্রেস কর্মীদের।
প্রদেশ সভাপতি গত কয়েক মাস ধরে মাঝে মধ্যেই প্রদেশ নেতাদের একাংশের বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছেন। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীররঞ্জন বর্মণের ছেলে, সুদীপ রায়বর্মণ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার পরেও দল গোষ্ঠী কোন্দলে জর্জরিত। এ কথা মেনে নিয়েই প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতা জানান, ‘‘প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হচ্ছে রাজ্যের প্রভাবশালী নেতাদের পছন্দ মতো। কংগ্রেসের এলাকাভিত্তিক বুথ কমিটি এবং ব্লক কমিটির পছন্দ কোনও পাত্তাই পায়নি।” গোষ্ঠী কোন্দল এতটাই তীব্র হয়ে উঠছে যে প্রদেশ সূত্রের খবর, রাজ্যের বর্তমান দশ কংগ্রেস বিধায়কের মধ্যে দু’-তিন জনকে এ বার মনোনয়ন না দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলে প্রদেশ কংগ্রেসের বিরোধী গোষ্ঠীর নেতারাও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তাঁরা ইতিমধ্যেই পাল্টা একাধিক তালিকা তৈরি করে কেউ ফেলেইরোর কাছে, কেউ বা তরুণবাবুর কাছে পেশ করেছেন বলে রাজ্য কংগ্রেস সূত্রের খবর। গোষ্ঠী কোন্দলে খসড়া প্রার্থীর তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে।
এ ছাড়াও প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশালগড় কেন্দ্রে সমীররঞ্জন বর্মণ ছাড়া দ্বিতীয় কোনও নাম ‘খসড়া প্রার্থী তালিকা’য় না থাকায় প্রদেশ নেতাদের একাংশ এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। প্রশ্ন উঠেছে ধনপুরে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের বিরুদ্ধে শাহ আলম ছাড়া কোনও দ্বিতীয় নাম না রাখাতেও। আবার ত্রিপুরা রাজপরিবারের সদস্য, প্রদ্যোৎকিশোর খসড়া তালিকায় নিজের নাম দু’জায়গায় রাখতে বাধ্য করায় প্রদেশ কংগ্রেস দফতরেই শুরু হয়েছে গুঞ্জন।
রাজ্য-রাজনীতির এই পরিস্থিতিতে তরুণ গগৈ কমিটির ভূমিকা কী হয় তা নিয়ে গভীর উদ্বেগে রয়েছে কংগ্রেসের সব গোষ্ঠীই। |
|
|
|
|
|