অলিম্পিক দল নির্বাচন নিয়ে লিয়েন্ডার-মহেশের লড়াইয়ে কলকাতার ছেলে বেঙ্গালুরুয়ানের কাছে এক রকম হেরেছিলেন। লন্ডন অলিম্পিকে মহেশ তাঁর পছন্দের পার্টনার বোপান্নাকে নিয়েই খেলেন এবং লিয়েন্ডার বাধ্য হন অনভিজ্ঞ বিষ্ণু বর্ধনকে নিয়ে খেলতে। অলিম্পিক-উত্তর লি-হেশের কোর্টের ভেতরের লড়াই কিন্তু ১-১ থেকে গেল এ বছরে। সাংহাই মাস্টার্সে মহেশ-বোপান্না জুটিকে ফাইনালে হারিয়েছিলেন ইন্দো-চেক জুটি লিয়েন্ডার-স্টেপানেক। এক মাসের মধ্যেই মহেশ-বোপান্নার খাঁটি ভারতীয় জুটি ওয়ার্ল্ড ট্যুর ফাইনালস-এর সেমিফাইনালে লিয়েন্ডারদের ৪-৬, ৬-১, ১২-১০ হারিয়ে শোধ তুললেন।
সঙ্গে প্রশ্ন উঠে গেল, লি বনাম হেশ হলেই কি প্রথমে যাঁকে কোর্টে দুর্ধর্ষ দেখাবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচে তিনি হারবেন? ২০০৯ যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ফাইনাল কিংবা এ বছর সাংহাই কিংবা এ দিন লন্ডনে ও-টু ইন্ডোর হার্ডকোর্টে একই ছবি। প্রথম দু’বার মহেশরা এক সেট এগিয়েও ম্যাচে হেরেছিলেন। এ দিন লিয়েন্ডারদের একই দশা হল। গ্রুপে লি-রা তিনটে ম্যাচই জিতেছিলেন। আর মহেশরা গ্রুপ লিগে ২-১ করে কোনও ক্রমে শেষ চারে উঠেছিলেন। কিন্তু আপাতত ১৯৯৭, ’৯৯ ও ২০০০-এর পরে (তিন বারই লি-হেশ জুটি) ফের একটি ভারতীয় জুটির সামনে ওয়ার্ল্ড ট্যুর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ। ফাইনালে মহেশদের হারাতে হবে স্প্যানিশ জুটি মার্সেল গ্র্যানোলার্স-মার্ক লোপেজকে। লিয়েন্ডার, মহেশদু’জনই চার বার করে এই টুর্নামেন্টের ডাবলস ফাইনাল খেলে এক বারও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি। বেঙ্গালুরুরই বোপান্না প্রথম বার বিশ্ব মিটে নেমেই মহেশের ‘লাকি ম্যান’ হতে পারেন কিনা সেটাই দেখার। খানিকটা ‘ভাগ্য’ অবশ্য বোপান্না সেমিফাইনালেই ভারতীয় জুটির জন্য এনেছিলেন। মহেশ সুপার টাইব্রেকে একটি ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচিয়ে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জেতেন। প্রথম সেটে যদি মহেশের সার্ভিস ব্রেকের সুবাদে লিয়েন্ডাররা এগিয়ে যান, তা হলে দ্বিতীয় সেটে পাল্টা লিয়েন্ডারের সার্ভিস ভেঙে মহেশদের ম্যাচে সমতায় ফেরা। টাইব্রেকে একটা সময় ৫-৮ পিছিয়ে ভারতীয় জুটি প্রায় হারতে বসেছিলেন। কিন্তু মহেশ-বোপান্না সেখান থেকে ১০-১০ করার পরে আর পিছন ফিরে তাকাননি। লন্ডন অলিম্পিক-বিতর্কের জেরে ২০১৪-র জুন পর্যন্ত তাঁরা নির্বাসিত দেশের প্রতিনিধিত্ব করা থেকে। কিন্তু তাঁদের জুটি বিশ্ব ডাবলস খেতাব ভারতে নিয়ে এলে মহেশ-বোপান্নাকে মূল স্রোত থেকে কি আর ব্রাত্য করে রাখা সম্ভব? |