ফাইনালের প্রতিদ্বন্দ্বী জুড়ির নাম জানতে-জানতে তখনও বেশ কয়েক ঘণ্টা। কারণ উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন জোনাথন মারে-ফ্রেডেরিক নিয়েলসেন বনাম স্প্যানিশ জুটি মার্সেল গ্র্যানোলার্স-মার্ক লোপেজের অপর সেমিফাইনাল রবিবারের রাতের সেশনে। কিন্তু মহেশ ভূপতির তখনই জানা হয়ে গেছে ফাইনালের প্রতিপক্ষের নাম মহাসংঘাতে লিয়েন্ডারদের হারানোর আত্মপ্রসাদ! যে ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’কে মন থেকে যত তাড়াতাড়ি মুছে ফেলতে পারবেন ততই ফাইনাল তাঁদের নিজেদের পক্ষে যাবে বলে বিশ্বাস মহেশের।
“লিয়েন্ডারদের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে জেতাটা আমাদের কাছে অনবদ্য ঠিকই। তবে এখন আমাদের সমস্ত ফোকাস ফাইনালের দিকে। ফাইনালে হেরে গেলে আজকের এই অসাধারণ জয়ের কোনও দাম থাকবে না। ফাইনালে জিততে না পারলে তখন সবাই বলবে, ওই তো ধ্যাড়াল। চ্যাম্পিয়ন হতে তো আর পারল না!” ০-১ থেকে লিয়েন্ডারের সঙ্গে মহাসংঘাত ১-১ করে উঠে বলছিলেন মহেশ।
ম্যাচের পর কোনও কথা হল লিয়েন্ডার পেজের সঙ্গে? “না” সংক্ষিপ্ততম জবাব মহেশের। কিন্তু এমন একটা জয় সেলিব্রেট করেছেন তো নিশ্চয়ই! “হ্যাঁ, মাত্র এক ঘণ্টা। রোহন বোপান্নাকে নিয়ে এক ঘণ্টা ধরে খুব ভাল করে খেলাম। বলতে পারেন, ওটাই সেলিব্রেশন” জানালেন মহেশ। “আর ম্যাচটা জেতার পর শরীরের ভেতর দিয়ে একটা ভীষণ তৃপ্তির অনুভূতি বয়ে গিয়েছিল।” |
বোপান্নার এ মাসের শেষেই বিয়ে। কেউ কেউ এ দিন ম্যাচের পর তাঁকে বলেছেন, বিয়ের এত ভাল উপহার নিজেও নিজেকে দিতে পারতে না। কিন্তু মহেশ তাঁর পার্টনারকে সাফ বলে দিয়েছেন, “ও সব উপহার-টুপহার নিয়ে ফাইনালের পরে ভাবিস। এখন একদম নয়।” আবেগময় ম্যাচ জিততে শরীরের বাড়তি এনার্জি বেরিয়ে গেল তো নাকি? প্রশ্ন করলে মহেশ আবার বললেন, “ঠিক পুরোপুরি তা নয়। এটাকে আর একটা সেমিফাইনাল ধরে নিয়েছি। তবে আমাদের এই অসাধারণ জয় বেকার যাবে যদি এখন ফাইনালে ব্যর্থ হই। এই যে আপনি আজ ফোন করেছেন। ফাইনালে আমরা হেরে গেলে আপনি বা আপনারা আর করবেন না। সে জন্য এখন ফাইনাল ছাড়া আর অন্য কিচ্ছু নিয়ে ভাবছি না।” লিয়েন্ডারদের হারানোর ময়নাতদন্তে নেমে মহেশ বললেন, “তুমুল হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে আজ। যে কেউ জিততে পারত। সুপার টাইব্রেকেও আমরা পিছিয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু গোটা ম্যাচের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম মুহূর্তগুলোতে আমরা ভাল খেলায় ম্যাচটা জিতেছি। গত দু’মাস ধরে আমি আর রোহন ভাল খেলছি। সে দিক থেকে দেখতে গেলে এই জয়টা দারুণ বিস্ময়কর নয়, তবে ‘সুইট’ তো বটেই।” কথা শুনে বোঝা গেল, মর্যাদার ফাইনালের ট্রফি হাতে ধরে তিনি এখন কঠিন মনঃসংযোগের চেষ্টায়। আসল ফাইনালে না ফোকাসের অভাব হয়! |