মাঠের ধান খেতে গিয়ে সেচ কুয়োয় পড়ে সঙ্গীদের থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিল একটি দাঁতাল। পরে বনকর্মীরা মাটি কাটার যন্ত্র এনে কুয়োর পাড় কেটে তাকে উদ্ধার করে। দাঁতালটি ফিরে যায় সঙ্গীদের কাছে। রবিবার ভোরে ঝালদা থানার কনকপুর গ্রামের ঘটনা।
বছর তিনেক আগে এই এলাকার দুলমি গ্রামে মাঠকুয়োয় পড়ে যাওয়া একটি হস্তিশাবককে বন দফতর উদ্ধার করার পরেও তাকে দল ফিরিয়ে নেয়নি। শেষে তাকে উত্তরবঙ্গে বনদফতরের তত্ত্বাবধানে পাঠানো হয়। কুয়ো থেকে উদ্ধারের সময় মানুষের ছোঁয়া লাগাতেই সঙ্গীরা ওই হস্তিশাবককে ফিরিয়ে নেয়নি। তাই রবিবার কুয়ো থেকে হাতিটিকে উদ্ধার করার সময় তার গায়ে যাতে মানুষের ছোঁয়া না লাগে, সে ব্যাপারে সজাগ ছিলেন বনকর্মীরা।
ঝালদার রেঞ্জ অফিসার মাণিকচন্দ্র রায় বলেন, “গতবার হস্তিশাবকটির গায়ে মানুষের ছোঁয়া লাগায় দলে তার ঠাঁই হয়নি। এ বার তাই খুব সতর্ক ভাবে যন্ত্র দিয়ে মাটি কেটে হাতিটিকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার কাজ দেখতে আসা বাসিন্দাদেরও এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়। শেষ পর্যন্ত হাতিটি দলে ফিরে যাওয়ায় আমরা খুশি।” |
ঝাড়খণ্ড সীমান্ত পার হয়ে ৪২টি হাতির দল ডুড়গু পাহাড়ে এখন অবস্থান করছে। বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রের খবর, হাতির দলটি শনিবার রাতে কনকপুর এলাকায় মাঠে ধান খেতে এসেছিল। রবিবার ভোরে বাসিন্দাদের নজরে আসে, একটি হাতি বড় মাঠকুয়োর মধ্যে পড়ে গিয়েছে। বাসিন্দা জন্মেজয় মাহাতোর কথায়, “১০-১২ ফুট গভীর কুয়োয় ৪-৫ ফুট জল রয়েছে। হাতিটি উপরে ওঠার চেষ্টা করেও পারছিল না। বন দফতরকে খবর দেওয়া হয়।” রেঞ্জ অফিসার জানান, কুয়োর পাড় কিছুটা কাটতেই হাতিটি নিজেই উঠে জঙ্গলের দিকে চলে যায়। গ্রামবাসী মাধু মাহাতো, পঞ্চানন কুইরি, ঘাসিরাম মাহাতোরা বলেন, “আমরাও জানতাম মানুষের ছোঁয়া লাগা হাতিকে দল ফেরায় না। তাই দূর থেকেই হাতিটিকে দেখছিলাম। জঙ্গলের প্রাণী জঙ্গলে ফিরে যাওয়ায় আমরাও খুশি।” অথচ কয়েক দিন ধরে ওই হাতির দলের তাণ্ডবে এলাকার অনেকের ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এই হাতিটিকে শেষ পর্যন্ত তার দলে ফিরিয়ে দিতে পারায়, তাঁদের মুখেও এ দিন স্বস্থির ছাপ দেখা গেল। |