এফআইআর নিয়ে গড়িমসির নালিশ
অ্যাসিডে পুড়ে গিয়েছে পিঠ-হাত। সেই অবস্থাতেই থানায় ছুটে গিয়েছিলেন এক গৃহবধূ। অভিযোগ, এফআইআর না নিয়ে উল্টে গালমন্দ করে তাঁকে ফিরিয়ে দেন হুগলির মগরা থানার পুলিশ কর্মীরা। সেই থানাই তিন দিন পরে ওই অভিযোগ নিল। তবে, পদস্থ পুলিশ অফিসারদের হস্তক্ষেপে। গ্রেফতারও করা হল অভিযুক্ত স্বামীকে। থানার ভূমিকার কথা লিখিত ভাবে পুলিশকর্তাদের জানিয়েছেন মঞ্জু চক্রবর্তী নামে ওই বধূ। ডিএসপি (ডি অ্যান্ড টি) দেবশ্রী সান্যাল বলেন, “বিষয়টি গোচরে আসতেই থানাকে এফআইআর নিতে বলি।” অন্য এক অফিসার বলেন, “পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
বছর ছাব্বিশের মঞ্জুদেবী স্বামী কামাখ্যা চক্রবর্তী এবং দুই ছেলেকে নিয়ে ত্রিবেণীর কোচাটিতে থাকতেন। বছর তেরো আগে তাঁদের বিয়ে হয়। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন স্বামী। স্বামীর মারে জখম হয়ে বহু বার হাসপাতালে যেতে হয়েছে তাঁকে। মাস কয়েক আগে বধূ নির্যাতনের মামলাও করেছিলেন। যদিও, পরে নিজেই জামিনে ছাড়িয়ে এনেছিলেন স্বামীকে। অত্যাচার অবশ্য বেড়েই চলে অতিরিক্ত পণের দাবিতে।
মাস কয়েক আগে মঞ্জু সোমড়া বাজারে মামার বাড়িতে চলে যান। দুই নাবালক ছেলে ত্রিবেণিতে বাবার কাছেই থাকছিল। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৬ অক্টোবর দুপুরে ছোট ছেলে মঞ্জুদেবীকে ফোন করে বলে, কামাখ্যাবাবু বড় ছেলেকে বেধড়ক মারধর করছেন। তা শুনে মঞ্জু মা রীনাদেবীকে সঙ্গে নিয়ে কোচাটিতে চলে আসেন। কামাখ্যার সঙ্গে তাঁদের ঝগড়া হয়। অভিযোগ, তখনই স্ত্রী-শাশুড়ির উপরে চড়াও হন ওই যুবক। লাঠির বাড়ি মেরে রীনাদেবীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। নাক-মুখে ঘুঁসি মারা হয়। পড়ে গেলে বুকে-পেটে লাথি মারা হয়। মঞ্জুকেও মারধর করা হয়। স্বামীর মূর্তি দেখে তিনি রক্তাক্ত রীনাদেবীকে নিয়ে কোনও রকমে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন। তিনি বলেন, “বাইরে বেরোতেই স্বামী এক মগ অ্যাসিড ছুড়ে দেয় আমার দিকে। মুখ সরিয়ে নিই।” অ্যাসিডে পিঠ, বাঁ হাত এবং শরীরের অন্য অংশ পুড়ে যায় তাঁর।
মা-মেয়ে মগরা থানায় যান অভিযোগ দায়ের করতে। মঞ্জুদেবীর অভিজ্ঞতা, “আমাকে দেখে অফিসারেরা বলতে থাকেন, ‘সেই মেয়েছেলেটা আবার এসেছে’। অনেক কটূ কথা বলেন।” অনেক কাকুতি-মিনতিরর পরে রীনাদেবীর থেকে একটি জেনারেল ডায়েরি লিপিবদ্ধ করা হয় মাত্র। পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, যে ধরনের অভিযোগ ছিল, তাতে এফআইআর নিয়ে অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করা উচিত ছিল। থানা থেকে বেরিয়ে ত্রিবেণী বিটিপিএস হাসপাতালে চিকিৎসা করান মা-মেয়ে। বলাগড়ের হাসপাতালে দুই ছেলের চিকিৎসা করানো হয়। পর দিন মঞ্জুদেবী কৃষ্ণনগরে মামার বাড়িতে চলে যান। সেখানে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা হয়। ৮ তারিখে ছাড়া পান।
মঞ্জুদেবী ৯ তারিখে আবার মগরা থানায় যান। সেখানে তখন উপস্থিত ছিলেন দেবশ্রীদেবী। তাঁর হস্তক্ষেপেই শেষ পর্যন্ত এফআইআর নেয় থানা। শনিবার মগরার সার্কেল ইনস্পেক্টরের (সিআই) নন্দন পানিগ্রাহীর সঙ্গে দেখা করে গোটা ঘটনার কথা জানান মঞ্জু। ওই দিনই একাধিক অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় কামাখ্যাকে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.