|
|
|
|
নিতিন: সঙ্ঘ-বিজেপি কথা হবে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের সমর্থন থাকলেও বিজেপি সভাপতির পদ থেকে সরে যাওয়ার চাপ ক্রমশই বাড়ছে নিতিন গডকড়ীর উপর। দীপাবলির পর এই বিষয়ে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করবেন সঙ্ঘ নেতৃত্ব।
গডকড়ীকে সভাপতি পদ থেকে না সরালে ৯ ডিসেম্বর নতুন দল গড়ার ব্যাপারে এখনও অনড় কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা। বিজেপি সূত্রের খবর, দলের রাজ্যসভার নেতা অরুণ জেটলি গত কাল রাতে ইয়েদুরাপ্পার সঙ্গে বৈঠক করে তাঁকে দল না ছাড়ার আর্জি জানান। কিন্তু ইয়েদুরাপ্পা তাঁর অবস্থান থেকে সরে আসতে নারাজ।
জেটলির সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কথা কিন্তু অস্বীকার করেছেন ইয়েদুরাপ্পা। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, কর্নাটকের সমৃদ্ধির ব্যাপারে তাঁর যে স্বপ্ন ছিল, বিজেপি-তে থেকে তা পূরণ করা সম্ভব হবে না। আর সেই কারণেই নতুন দল গড়ার সিদ্ধান্ত থেকে আর পিছিয়ে আসা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। ইয়েদুরাপ্পার এই অনড় মনোভাব দেখে বিজেপি নেতৃত্ব এখন একটাই চেষ্টা চালাচ্ছেন। সেটা হল, এই লিঙ্গায়েত নেতা যদি নতুন দল গড়েনও, তাতে যেন বিজেপি-র খুব বেশি সংখ্যক নেতা-কর্মী সামিল না হন।
রাম জেঠমলানীদের প্রকাশ্য বিদ্রোহের পর গডকড়ী সম্পর্কে কোনও মন্তব্য না করার ফরমান জারি করেছিল বিজেপি। কিন্তু সেই নির্দেশ উড়িয়ে শুধু ইয়েদুরাপ্পা নন, সঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত বিজেপি-র কর্মসমিতির সদস্য জগদীশ শেট্টিগারও এখন প্রকাশ্যে নিতিনের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
শেট্টিগারের মতে, দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর গডকড়ীর উচিত ছিল সভাপতি পদ থেকে সরে গিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা। ঠিক যেমনটি হাওয়ালা কাণ্ডে অভিযোগ ওঠার পর লালকৃষ্ণ আডবাণীর মতো নেতা পদ ছেড়ে নজির গড়েছিলেন। শেট্টিগারের মতে, সঙ্ঘের স্বয়ংসেবক হয়েও গডকড়ীর এ ভাবে পদ আঁকড়ে বসে থাকাটা জনসাধারণের কাছে সঠিক বার্তা দেবে না।
এর আগে রাম জেঠমলানী যখন বিদ্রোহের তালিকায় যশোবন্ত সিংহ, যশবন্ত সিন্হার মতো নেতাদের নামও সামিল করেছিলেন, সেই সময় দলের অনেকেই কটাক্ষ করেছিলেন।
দলের অনেকেই তখন বলেছিলেন, সঙ্ঘের বিচারধারার সঙ্গে এই নেতাদের কোনও সম্পর্ক নেই। নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অনেক পরে এঁরা বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। সেই অবস্থায় উমা ভারতীর মতো নেত্রীও গডকড়ীর সমর্থনে এগিয়ে এসে বলেছেন, বিজেপি-তে জেঠমলানীর মতো নেতাদের কোনও অস্তিত্বই নেই। কিন্তু এখন শেট্টিগারের বিদ্রোহের পর সে কথা বলতে বাধছে এই নেতাদের।
গডকড়ীকে নিয়ে বিজেপি-র মধ্যে অসন্তোষ বাড়লেও মোহন ভাগবত কিন্তু এখনও সভাপতি পরিবর্তনের পক্ষে রায় দেননি। গত দু’দিন তিনি দিল্লিতে ছিলেন। কিন্তু গডকড়ী-সহ লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশীদের মতো নেতারা গত কাল দিল্লিতে ছিলেন না। ফলে ভাগবতের সঙ্গে তাঁদের সঙ্গে বৈঠক হয়নি। তবে সঙ্ঘের সঙ্গে জড়িত বিশিষ্ট জনদের সঙ্গে দেখা করে গডকড়ী নিয়ে জল মাপার কাজটি এই অবসরে সেরে ফেলেছেন ভাগবত।
ঘরোয়া স্তরে ভাগবত-ঘনিষ্ঠ সঙ্ঘ নেতারা বলছেন, গডকড়ীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তার কোনও বিরূপ প্রভাব বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকদের উপরে পড়বে না। যদিও গডকড়ী নিয়ে অসন্তোষ ক্রমশ বাড়তে থাকায় আগামী সপ্তাহে সঙ্ঘের নেতা ভাইয়াজি জোশী বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করতে আসবেন।
ভাগবত এই মাসের মধ্যেই রাজ্যে-রাজ্যে বিজেপি-র সাংগঠনিক নির্বাচন শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ, অন্তত পঞ্চাশ শতাংশ রাজ্যে সাংগঠনিক নির্বাচন সম্পূর্ণ হওয়ার পরেই কেন্দ্রীয় স্তরে সভাপতির নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। |
|
|
|
|
|