বঙ্গ সংস্কৃতি উৎসবে তিনি আর আসবেন না। তরুণ কবিদের খাতা টেনে শব্দের জোড়াতালিও দেবেন না।
তিনি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। শনিবার যাঁর স্মরণসভায় কবিতা, গান, গল্পকথায় স্মৃতির রাজ্যে হারিয়ে গেল আসানসোল। শহরের শরৎমঞ্চে আয়োজিত এই স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ ও নবীন প্রজন্মের শ’পাঁচেক সুনীল-সাহিত্য অনুরাগী। প্রেক্ষাগৃহে জায়গা না পেয়ে বাইরেও ছিলেন কিছু গুণমুগ্ধ। তাঁরই লেখা কবিতা, গল্প, উপন্যাস আর কবিতায় গানের সুর দিয়েই তাঁকে স্মরণ করল আসানসোল। |
কবির দীর্ঘদিনের সহযোগী, এ প্রজন্মের কবি পিনাকি ঠাকুর জানালেন তাঁর কবিজীবনে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রভাবের কাহিনী। শোনালেন, ‘নারী তুমি বুকের সিন্দুক খুলে একটু দুঃখ দিও। ভালোবাসা তার চেয়ে বড় নয়।’ ভাষা শহিদ স্মারক সমিতির আসানসোল শাখার সভাপতি তথা চিকিৎসক প্রতিভারঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, “সুনীল এক বার আমার হাতটা চেপে ধরে বলেছিলেন, বাংলা ভাষাটার জন্য কিছু একটা করতে হবে বুঝলেন। একটু উঠেপড়ে লাগুন না আসানসোলে। তাঁর কথায়, “শহরে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ব্যবহারকে আরও শক্তিশালী করার ইচ্ছা তো ছিলই, সুযোগও মিলল। আসানসোলে শুরু হয়ে গেল বঙ্গ সংস্কৃতি উৎসব।” প্রতিভারঞ্জনবাবুর আক্ষেপ, “উৎসব এ বারও হবে। সুনীল থাকবেন না। বড় তাড়াহুড়ো করে চলে গেলেন।”
দেশ পত্রিকায় প্রথম লেখা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত ধরেই। স্মৃতিচারণায় সে কথা স্বীকার করলেন কবি বিকাশ গায়েন। তিনি বলেন, “সুনীল তখন দেশ পত্রিকার দায়িত্বে ছিলেন। আমি লেখা পাঠালাম। বেশ কিছুদিন পরে তাঁর পাঠানো চিঠিতে জানলাম, তিনি বিবেচনা করেছেন আমার কবিতা।” সংস্থার অন্যতম কর্ণধার আসানসোলের একটি কলেজের বাংলার অধ্যাপিকা বৈজয়ন্তী মুখোপাধ্যায়ের স্বাগত ভাষণের আগে গান শোনালেন শিল্পী চট্টোপাধ্যায়, ‘আমার ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে, আছো তুমি হৃদয় জুড়ে।’
হৃদয় জোড়া শূন্যতা নিয়েই বাড়ির পথ ধরলেন সুনীল-সাহিত্য অনুরাগীরা। |