দাবি মতো তোলার টাকা না দেওয়ায় দু’জন ট্রাক চালককে বাঁশপেটা করে হাঁসুয়া দিয়ে কোপানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাতে ইংরেজবাজার থানার মহদিপুরে বাংলাদেশ সীমান্তে ঘটনাটি ঘটেছে। জখম দুই চালককে মহদিপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে। হামলার প্রতিবাদে ও দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে শনিবার সকাল থেকে বাংলাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য পণ্য রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে মহদিপুর সীমান্ত ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের পক্ষ থেকে ২৪ জন দুষ্কৃতীর নামে নির্দিষ্ট অভিযোগ জানানো হয়েছে। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “অভিযোগ পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের জন্য তল্লাশি চলছে।” পাশাপাশি, বিএসএফও ঘটনার গুরুত্ব বুঝে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে তৎপর হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরের হরমিত সিংহ ও গাজলের সুশীল রায় ওই রাতে মহদিপুর সীমান্তে ট্রাক নিয়ে রফতানির জন্য যাচ্ছিলেন। দুই চালকের অভিযোগ, খাসিমারির কাছে ৮-১০ জন দুষ্কৃতী হরমিত সিংহের গাড়ি আটকে দিয়ে ২২০০ টাকা দাবি করে। হরমিত সিংহ সেই টাকা দিতে অস্বীকার করলে দুষ্কৃতীরা তাঁর গলায় হাঁসুয়া দিয়ে কোপ মারে। সময়মতো সরে যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান। তাঁকে বাঁচাতে সুশীল রায় এগিয়ে গেলে বাঁশ দিয়ে পেটানো হয় বলে অভিযোগ। দুষ্কৃতীদের ধরতে পুলিশ এবং বিএসএফ যৌথভাবে মহদিপুর লাগোয়া খাসিমারি ও পিয়াসবাড়ি এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছে। বাংলাদেশে পণ্য রফতানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মহদিপুর সীমান্ত ৬০০ র বেশি পণ্য ভর্তি ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে।
মহদিপুর ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জালসু শেখ বলেন, “দুষ্কৃতীরা ব্যবসায়ীদের না পেয়ে ট্রাক চালকদের উপর হামলা করছে। অনেকদিন ধরে এমন হচ্ছে। পুলিশকে বহুবার জানিয়েছি। যারা ট্রাকচালককে মেরেছে পুলিশ তাদের গ্রেফতার না করলে বাংলাদেশে একটি ট্রাকও পণ্য নিয়ে যাবে না।” মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের সম্পাদক উজ্জল সাহা জানান, একদিন পণ্য রফতানি বন্ধ থাকলে গড়ে ৪ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়। উজ্জ্বলবাবু বলেন, “২৪ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। সকলকে গ্রেফতার করতে হবে। তাই মহদিপুর ট্রাক ওনার্সের ডাকা অনিদিষ্টকালের বন্ধকে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছি।”
মহদিপুর এক্সপোর্টার অ্যসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক সমীর ঘোষ জানান, তোলাবাজরা যে ভাবে ট্রাক চালকদের উপর হামলা করছে তাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে ব্যবসা করা যাচ্ছে না। সমীরবাবু বলেন, “তোলাবাজদের দৌরাত্ম্যে অনেক রফতানিকারক মহদিপুরে ব্যবসা করতে চাইছেন না। তোলাবাজি বন্ধ না হলে মহদিপুর সীমান্তে কেউ পণ্য নিয়ে আসার সাহস পাবে না। ফলে মহদিপুর সীমান্তে রফতানি বাণিজ্য ভেঙে পড়বে।” |