টাকা না দিলে ছেলেকে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া হবে। কিংবা স্কুলে যাওয়ার পথে অপহরণ করা হবে মেয়েকে। বালির এক গৃহবধূকে ফোনে এ রকম হুমকি দিয়ে ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল তিন যুবক। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। অভিযোগ পেয়ে শনিবার সকালে ফাঁদ পেতে অভিযুক্ত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম, পঙ্কজ শ্রীবাস্তব, অজিত মাহাতো ও মিঠুন পাল। তারা বালির বাসিন্দা। তাদের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। হাওড়া সিটি পুলিশের অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার (উত্তর) রশিদ মুনির খান বলেন, “জেরায় তিন জনেই অপরাধ কবুল করেছে। এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
পুলিশি সূত্রের খবর, মাস কয়েক আগে বালির পীতাম্বর ব্যানার্জি লেনের লোকনাথ আবাসনে ডেকরেটার্সের কাজ করতে গিয়ে কনক ভোরা নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার সঙ্গে পঙ্কজের পরিচয় হয়। পরে সে প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভাব জমিয়ে ভোরা পরিবারের ল্যান্ড ফোনের নম্বর জোগাড় করে।
কনকবাবু বড়বাজারের একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। তাঁর কলেজ পড়ুয়া ছেলে ও ১১ বছরের একটি মেয়ে আছে। পুলিশকে কনকবাবু জানিয়েছেন, গত মে মাসে তাঁদের বাড়ির ল্যান্ডলাইনে একটি ফোন আসে। ফোনে কনকবাবুর স্ত্রী গায়িত্রীদেবীকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, ২০ হাজার টাকা না দিলে তাঁর ছেলে দীনেশকে কলেজ যাওয়ার পথে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া হবে। এ কথা জানাজানি হলে মেয়ে ইনাকে অপহরণ করা হবে বলেও শাসায় দুষ্কৃতীরা। ভয় পেয়ে কনকবাবু ওই টাকা দিতে রাজি হয়। গায়িত্রীদেবী পুলিশকে জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীরা ২০ হাজার টাকা কাপড়ের পুঁটলির মধ্যে ভরে চলন্ত ট্রেন থেকে উত্তরপাড়া স্টেশনের ঠিক আগে একটা ফাঁকা জায়গায় ফেলে দিতে বলেছিল। গায়িত্রীদেবী সেই ‘নির্দেশ’ পালন করেন।
কিন্তু দুষ্কৃতীদের দাবি মতো টাকা দেওয়ার পরেও রেহাই পাননি ভোরা দম্পতি। কিছু দিন পরে ফের ফোন করে তোলাবাজরা বলে ২০ হাজার টাকার মধ্যে পাঁচ হাজার টাকা নকল। তাই আরও পাঁচ হাজার টাকা একটি ছোট ব্যাগে করে বালি হল্ট স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ওঠার মুখে ঝোপের মধ্যে ফেলে দিতে হবে। সেই মতো কাজ করেন গায়িত্রীদেবী। কয়েক দিন পরে আবার টাকা চেয়ে ফোন আসে ভোরা পরিবারের ল্যান্ডলাইনে। কনকবাবু বলেন, “ওদের দাবি বাড়ছে দেখে আমি বিষয়টি আত্মীয়-স্বজন ও পড়শিদের জানাই। জুন মাসে বালি থানায় লিখিত অভিযোগ করি।” |