গোপালনগরের তৃণমূল নেতা অরুণকুমার বিশ্বাস খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে সাত জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
শুক্রবার রাতে গোপালনগরের বিভিন্ন গ্রাম থেকে দিলীপ মণ্ডল, সুভাষ হোড়, নিতাই ঘোষ, সুজিত রায়, সইফুদ্দিন মণ্ডল, জিয়ারুল মণ্ডল ও ইয়াসিন মণ্ডল নামে ওই সাত জনকে ধরা হয়। শনিবার ধৃতদের প্রত্যেককে বনগাঁ আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের সাত দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। ধৃতদের পরিবারের লোকজনের অবশ্য দাবি, মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে সাত জনকে। তবে, কী কারণে অরুণবাবুকে খুন করা হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতেই সাত জনকে ধরা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
শুক্রবার ভোরে বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে রাস্তার ধারে গঙ্গানন্দপুরের বাসিন্দা অরুণবাবুর ক্ষতবিক্ষত দেহ মেলে। ২০০৯ সালে গোপালনগরে এক দুষ্কৃতীকে খুনের ঘটনায় তাঁর নাম জড়িয়ে যায়। এত দিন তিনি জামিনে মুক্ত ছিলেন। পুরনো শত্রুতার জেরে ওই দুষ্কৃতীর স্ত্রীর মদতে ১২ জন তাঁর স্বামীকে খুন করে বলে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নিহত অরুণবাবুর স্ত্রী কল্পনাদেবী।
যদিও শনিবার বনগাঁ আদালত চত্বরে হাজির ধৃত সুজিত রায়ের দাদা অমরবাবু বলেন, “ঘটনার দিন ভাই নিজের বাড়িতেই ছিল। ও সিপিএম সমর্থক। তাই ওকে রাজনৈতিক ভাবে ফাঁসানো হল।” আর এক ধৃত জিয়ারুলের বাবা আনারুল মণ্ডল বলেন, “কী কারণে পুলিশ ছেলেকে গ্রেফতার করল জানি না। ছেলে কোনও ভাবেই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়।” একই বক্তব্য বাকি পাঁচ ধৃতের পরিজনদেরও।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে আগেই খুনের ঘটনায় সিপিএমের লোকজন জড়িত বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। শনিবার নিহতের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে গিয়ে একই অভিযোগ তোলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ও। তিনি বলেন, “দোষীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাবে। দলের কোনও কর্মী খুন হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়ান, অরুণবাবুর ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হবে না।’’
মুকুলবাবুর কাছে সিআইডি তদন্তের দাবি জানান নিহতের ছেলে অমিত। তা নিয়ে অবশ্য মুকুলবাবু কোনও মন্তব্য করেননি। খুনের পিছনে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব রয়েছে বলে দাবি করেছেন সিপিএম নেতা অমিতাভ নন্দী। |