নয়া নিয়মেও প্রশ্ন মান নিয়ে
জয়েন্টে শূন্যের উপরে উঠলেই তালিকায় নাম
ম্বর শূন্য বা তার নীচে। তবু সবার জন্য দরজা খোলা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের। এমন আগল খোলা ব্যবস্থায় যে মানের সঙ্গে আপস হচ্ছে, এত দিনে তা মেনে নিল রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। তাতে ইতি টানা হচ্ছে এ বার। বোর্ডের সিদ্ধান্ত, জয়েন্টে কোনও বিষয়ে শূন্য পেলে আর নাম উঠবে না মেধাতালিকায়।
এ বছর জয়েন্টে সব পরীক্ষার্থীর র‌্যাঙ্ক জানিয়েছিল বোর্ড। প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার পরীক্ষার্থীর সকলেই মেধাতালিকায় ঠাঁই পেয়েছিলেন। জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের চেয়ারম্যান ভাস্কর গুপ্ত স্বীকার শনিবার করলেন, সব ছাত্রকেই মেধাতালিকায় ঠাঁই দিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ করে দেওয়ায় মানের সঙ্গে আপস করা। বলেন, “এমন একটা শঙ্কার কথা অনেকেই বলছিলেন। কথাটা ভুল নয়।” চেয়ারম্যান জানান, আগামী বছর থেকে ‘র‌্যাঙ্ক’ পেতে হলে অঙ্ক, পদার্থবিদ্যা, রসায়নে শূন্যের বেশি পেতে হবে। সর্বাধিক ৯০ হাজারের নাম মেধাতালিকায় থাকবে।
তবে এক-আধ নম্বর পাওয়া পড়ুয়াদের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাঠ দেওয়াও কি মানের সঙ্গে আপস নয়? এক বোর্ড কর্তার ব্যাখ্যা, “জয়েন্টে নেগেটিভ মার্কিং, অর্থাৎ ভুল উত্তরে নম্বর কাটার ব্যবস্থা থাকায় এত দিন শূন্যের কম পেয়েও অনেকে র‌্যাঙ্ক পেয়েছেন। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তিও হয়েছেন। নতুন পদ্ধতিতে তা হবে না।” কিন্তু শূন্য ও এক পাওয়া পড়ুয়ার মধ্যে মানের দিক থেকে বিরাট ব্যবধান রয়েছে, মানছেন না অভিজ্ঞ শিক্ষকরা।
এখন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আসন প্রায় ৩২ হাজার। ইঞ্জিনিয়ারিং এবং এআইইইই-র মতো পরীক্ষার মেধাতালিকা থেকে ছাত্র ভর্তির পরে ফাঁকা থেকে যাওয়া আসনে উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০% নম্বর পাওয়া পড়ুয়াদের ভর্তি করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয় গত বছর। এ বছরও সেই পদ্ধতিতে ছাত্রভর্তি হয়েছে।
জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড জানিয়েছিল, শুধুই উচ্চ মাধ্যমিকের নিরিখে না করে অন্তত জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মেধাতালিকায় নাম থাকা পড়ুয়াদের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে নিলে ন্যূনতম মান বজায় থাকবে। সব পড়ুয়ারই র‌্যাঙ্ক জানার অধিকার রয়েছে। তাতে এ বছর সবার র‌্যাঙ্ক ঘোষণা হয়। তার পর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের হাজার চারেক আসন ফাঁকা বলে উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর।
সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের আসন কাউন্সেলিংয়ের শুরুতেই ভরে যায়। বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের আসন ভরাতেই মানের সঙ্গে আপস করে অস্বাভাবিক লম্বা মেধাতালিকা করা হয় বলে অভিযোগ। প্রশ্ন উঠেছে, বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের আসন ভরানোর দায়িত্ব সরকার কেন নেবে?
জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের এক প্রাক্তন চেয়ারম্যান মনে করেন, ন্যূনতম নম্বর পাওয়ার ব্যবস্থা চালু হলে ভালই হয়। অন্তত ১০% নম্বর পাওয়া বাধ্যতামূলক করা উচিত। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রাক্তন ডিন মনোজ মিত্র বলেন, “জয়েন্টে যেহেতু সবাই র‌্যাঙ্ক পায়, তাই অনেকে যা-হোক কিছু লিখে দেয়। র‌্যাঙ্কের জন্য শূন্যের বেশি পাওয়া বাধ্যতামূলক হলে সেই প্রবণতা কমবে। পড়ুয়ারা উত্তরের একটু বেশি যত্নবান হবে। এটুকুই লাভ।”

জয়েন্টের নয়া তথ্য
আগামী বছর জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা হবে ২১ এপ্রিল। ন’টার বদলে পরীক্ষা শুরু হবে সাড়ে ন’টায়। সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত হবে অঙ্ক, সাড়ে ১২টা থেকে ২টো পর্যন্ত পদার্থবিদ্যা এবং ৩টে থেকে সাড়ে ৪টে পর্যন্ত রসায়নের পরীক্ষা হবে। পদার্থবিদ্যা ও রসায়নের পরীক্ষা এতদিন একটিই পত্রে হত, আগামী বছর পরীক্ষা হবে আলাদা ভাবে। এক একটি পত্রে থাকবে ৭৫ নম্বর। অভিন্ন প্রবেশিকার মাধ্যমে মেডিক্যালে ভর্তি চালু হওয়ায় ২০১৩-য় রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড কেবল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য পরীক্ষা নেবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.