নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
অষ্টম শ্রেণি পেরোনো লোকেরাও কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি হয়ে বসছেন বলে মন্তব্য করে কিছু দিন আগেই শোরগোল ফেলেছিলেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর ছিল অন্য মত। তিনি মনে করেন, প্রথাগত শিক্ষা কার কত দূর, সেটা বড় কথা নয়। দেখা উচিত শিক্ষার উন্নতির জন্য সেই ব্যক্তির চেষ্টা কতখানি। কিন্তু এই বিতর্কে যে তিনি এখানেই ইতি টানতে রাজি নন, শনিবার হাওড়ার বালিতে প্রধান শিক্ষক সমিতির এক সভায় সৌগতবাবু পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন। এ দিন তিনি আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেছেন, পরিচালন কমিটিতে থাকতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতার নির্দিষ্ট একটি মাপকাঠির প্রয়োজন আছে। না হলে সমস্যা বাড়বে। তাঁর বিচারে সেই মাপকাঠি হল কমপক্ষে স্নাতক হওয়া। ওই যোগ্যতা-মান বেঁধে দেওয়ার জন্য শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আর্জিও জানিয়েছেন তিনি।
সৌগতবাবুর প্রস্তাব রাজ্যের কী ভাবনা? শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এ দিন জানিয়েছেন, বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে। এ দিনের ওই সভায় নাম না করে সিপিএম-কে আক্রমণ করেন সৌগতবাবু। বলেন, “আগে একটি দলের পছন্দের লোকেরাই পরিচালন কমিটিতে আসতেন। কিন্তু নীতিগত ভাবে বলা যায়, পরিচালন কমিটিতে থাকতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতার নির্দিষ্ট একটি মাপকাঠির প্রয়োজন আছে। না হলে সমস্যা বাড়বে।”
গত মাসে আশুতোষ কলেজে অধ্যক্ষ পরিষদের একটি অনুষ্ঠানে সৌগতবাবু আক্ষেপ করে বলেছিলেন, অষ্টম শ্রেণি পাশ করেই অনেকে কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি হচ্ছেন। তাই পরিচালন সমিতির সভাপতি হওয়া আরও কোনও গর্বের ব্যাপার নয়। এর কিছু দিন আগেই ভাঙড় কলেজে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি দুর্ব্যবহারের, এমনকী এক শিক্ষিকার দিকে জলের জগ ছোড়ার অভিযোগ উঠেছিল কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে। পরিচালন সমিতির সভাপতির ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা কী হওয়া উচিত, সেই বিতর্ক তখনই সামনে আসে। আশুতোষ কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা ওই কলেজেরই প্রাক্তন শিক্ষক সৌগতবাবুর মন্তব্যের তাৎক্ষণিক নিশানা আরাবুল বলেই অনেকে মনে করেছিলেন।
সৌগতবাবুর মন্তব্যের কিছু দিন পরে ব্রাত্যবাবু অন্য একটি সভায় বলেন, কোনও ব্যক্তি একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতি মানসিক ভাবে কতটা যুক্ত, সেটাই বিবেচ্য। প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রিই সব নয়। ব্রাত্যবাবু বলেন, যাঁর লেখা পড়ে বাংলা শেখা হয়, যাঁর সার্ধশতবর্ষ চলছে (নাম না করে তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথাই বলেন), তিনিও কখনও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যাননি। প্রশ্ন ওঠে, সৌগতবাবু নাম না করে আরাবুলের দিকে ইঙ্গিত করেন বলেই কি ব্রাত্যবাবু নাম না করে রবীন্দ্রনাথের প্রসঙ্গ টেনে পাল্টা জবাব দিলেন? এই নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি।
শনিবারের অনুষ্ঠানের পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সৌগতবাবু বলেন, “শিক্ষা ক্ষেত্রে রাজনীতি বন্ধ করা একান্ত ভাবে প্রয়োজন। শিক্ষিত লোক না থাকলেই সমস্যা হবে। পরিচালন কমিটিতে যেমন যোগ্যতার মাপকাঠি বেঁধে দেওয়ার জন্য শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।” ব্রাত্যবাবু জানান, পরিচালন সমিতির প্রতিনিধিদের যোগ্যতা বেঁধে দেওয়ার বিষয়টি তাঁরা বিবেচনা করছেন। তিনি বলেন, “সৌগত রায় ও তাঁর আবেদনকে স্বাগত।”
|
পঞ্চায়েত ভোটে ঐক্য গড়তে বৈঠক বামফ্রন্টের
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
পঞ্চায়েত ভোটে প্রতিটি আসনে ঐক্য নিশ্চিত করতে বামফ্রন্টের বৈঠক ডাকল আলিমুদ্দিন। ২০০৮-এর পঞ্চায়েত ভোট থেকে শিক্ষা নিয়ে সিপিএম এবার প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে সার্বিক জোট গড়ে তুলতে মরিয়া। সে বার সার্বিক জোট না হওয়া ৩ জেলা পরিষদ বামেদের হাত ছাড়া হয়। মঙ্গলবার, কালীপুজোর দিন সকালে বামফ্রন্টের বৈঠকে নিচুতলা থেকে সার্বিক জোট গড়ার ব্যাপারে কথা হবে। বামেরা ক্ষমতায় থাকাকালীন ৩৪ বছর পঞ্চায়েত ভোটে কখনও সার্বিক ঐক্য হয়নি। ক্ষমতাচ্যুত সিপিএম সে কাজ করতে পারে কিনা, সেটাই দেখার। শেষ পর্যন্ত শরিক দলগুলি কী অবস্থান নেয়, সেটাও প্রশ্ন। তবে, প্রাথমিক ভাবে শরিক দলের নেতারা জানান, এ বার ভিন্ন পরিস্থিতি। তাই নিচুতলা থেকে সার্বিক জোট গড়া না হলে তৃণমূলের মোকাবিলা অসম্ভব। সদ্য সমাপ্ত সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে দলের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু ওমুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য দু’জনেই গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর থেকে প্রতিটি আসনে সার্বিক ঐক্য গড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। |