ইস্টবেঙ্গল- ৩ (হরমনজিৎ-২, পেন)
এয়ার ইন্ডিয়া- ০ |
প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাড়া করছেন ট্রেভর জেমস মর্গ্যান! খুব আশ্চর্য শোনালেও, দীর্ঘ চল্লিশ বছর পরে লাল-হলুদের গাড়ির চাকা ফের সে দিকেই ছুটছে। অনন্য নজিরের খোঁজে।
১৯৭২ সালে কোচ প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অধিনায়ক সুধীর কর্মকারের যুগলবন্দিতে টানা তিরিশেরও বেশি ম্যাচে অপরাজিত থাকার নজির গড়েছিল ইস্টবেঙ্গল। শনিবার পুণের বলেওয়ারি স্টেডিয়ামে এয়ার ইন্ডিয়াকে হারিয়ে সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করার দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল ট্রেভর মর্গ্যানের লাল-হলুদ ব্রিগেড। ঘরের টুর্নামেন্টে এখন টানা ২৭ ম্যাচ অপরাজিত পেন-মেহতাবরা। আধুনিক ইস্টবেঙ্গলকে দেখে স্বর্ণযুগের অধিনায়ক সুধীর কর্মকার বলছিলেন, “বাহাত্তরের সঙ্গে মর্গ্যানের এই দলে একটাই মিল খুঁজে পাচ্ছি। হার না মানা মনোভাব। বিপক্ষ ছোট হোক কিংবা বড়, আমরা খুব সতর্ক হয়ে খেলতাম।”
আই লিগে ট্রেভর মর্গ্যানের গত দু’বারের মার্কশিট ঘাঁটলে দেখা যাবে, প্রথম পাঁচ ম্যাচ থেকে দশ পয়েন্টের বেশি আদায় করতে পারেননি ব্রিটিশ কোচ। |
প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯৭২)
টানা তিরিশেরও বেশি
ম্যাচে অপরাজিত। |
|
|
ট্রেভর মর্গ্যান (২০১২)
ঘরের মাঠে টানা সাতাশ ম্যাচ
অপরাজিত (৩ মার্চ-১০ নভেম্বর)। |
|
|
কিন্তু এ বার শুরুর পাঁচ ম্যাচ থেকে এগারো পয়েন্ট পাওয়াটাকে শুভ সঙ্কেত বলে মনে করছেন তিনি। শনিবার ম্যাচের পরে মর্গ্যান বললেন, “দেখবেন, এই এক পয়েন্টটাই আই লিগে পার্থক্য গড়ে দেবে। আই লিগ জেতার লক্ষ্যে এ বার শুরু থেকেই যে সব পরিকল্পনা নিয়েছিলাম, তার প্রথম ধাপে আমরা সফল।”
ওপরের স্কোরলাইনে একতরফা ম্যাচের গন্ধ লেপ্টে থাকলেও, বাস্তবে কিন্তু প্রথম ধাপ পেরোতে প্রচুর পরিশ্রম করতে হল চিডি-পেনদের। বিশেষ করে ম্যাচের প্রথমার্ধে। বিমানকর্মীরা শুরু থেকেই রক্ষণ অটুট রেখে চিডিকে শক্ত ম্যান মার্কিংয়ে রেখেছিলেন। নিটফল, গোলের মুখটাই বন্ধ হয়ে গেল। মুহুর্মুহু আক্রমণ করেও ভাঙা যায়নি এয়ার ইন্ডিয়ার রক্ষণ-গেট। অবশেষে বিরতির ঠিক আগে হরমনজিৎ সিংহ খাবরার লম্বা দূরপাল্লার শটে প্রথম গোললাভ হয় ইস্টবেঙ্গলের।
তার পরই মর্গ্যানের একটা মাস্টারস্ট্রোক হাট করে খুলে দিল লাল-হলুদের গোলের দরজা। ইসফাক ও মননদীপের জায়গায় সঞ্জু ও লালরিন্দিকাকে একসঙ্গে নামিয়ে মাঝমাঠে লোক বাড়িয়ে দিলেন। ব্যাস, আর কী? মেহতাবদের ছোট ছোট পাসে নিমেষের মধ্যে ভেঙে পড়ল এয়ার ইন্ডিয়া রক্ষণ। মাত্র তেরো মিনিটের ব্যধানে দু’টো গোল করে বেরিয়ে গেলেন খাবরা ও পেন।
ইস্টবেঙ্গল এখন অশ্বমেধের ঘোড়ার মতো দৌড়চ্ছে! তবে প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে টপকাতে পারেন কি না মর্গ্যান, সেটা তো সময়ই বলবে। |