তখনও অনুষ্ঠান শুরু হয়নি। মঞ্চের পিছনে অভ্যর্থনা-কক্ষে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন অমিতাভ ও মমতা। একটু পরেই সে আড্ডায় যোগ দিলেন মিঠুন-শাহরুখ। রাজ্যের প্রশাসকের সঙ্গে কী কথা হচ্ছিল বাবুমশাইয়ের? জোর জল্পনায় আমলা-মহল থেকে উৎসবের উদ্যোক্তারা। শেষে হাঁড়ির খবর দিলেন মহাকরণের এক আধিকারিক। তাঁর দাবি, সংসদ-জীবনের স্মৃতি ঝালিয়ে নিচ্ছিলেন অমিতাভ-মমতা। অল্প সময়ের জন্য হলেও আশির দশকে অমিতাভও তো সাংসদ ছিলেন!
|
দাদা মিঠুন বলেছিলেন, না এলে তাঁকে নির্ঘাত হাইজ্যাক করে আনা হতো। আর ভাই বললেন, “কলকাতায় নিয়ে আসার জন্য আমায় হাইজ্যাক করার দরকার নেই। দিদিকে ছোটাছুটি করে কাজ করতে দেখার টানেই এখানে না এসে পারি না আমি!” ছোট্টখাট্টো চেহারার দিদির প্রাণশক্তি দেখে মুগ্ধ হন তিনি, অকপটে জানালেন ভাই শাহরুখ খান!
|
বাংলা-বাঙালির সিনেমাকে কুর্নিশ জানাল দেবজ্যোতি মিশ্রের পরিচালনায় সুরের মন্তাজ। মান্না দে-র ‘হয়তো তোমারই জন্য’ বেজে উঠতেই বিভোর হয়ে ঠোঁট নাড়লেন মমতা। ‘একলা চলো রে’ বাজার সময়ে জায়ান্ট স্ক্রিনে অমিতাভের মুখ। জনতার উচ্ছ্বাসে লাজুক হেসে হাত নাড়লেন তিনি। বন্দে মাতরমের সঙ্গে গুনগুন করলেন অনুষ্কা শর্মা। সঙ্গীত থামতেই উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি অভিভূত অমিতাভদের।
|
অলকানন্দা রায়ের পরিচালনায় সংশোধনাগারের বাল্মীকিপ্রতিভা তখন সবে শেষ। হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চ থেকে নামার সময়ে হাত বাড়িয়ে সাহায্য করতে গেলেন অমিতাভ। তাঁর হাত জড়িয়ে হারাধনবাবুর কথা আর থামতেই চায় না। ধৈর্য ধরে দাঁড়িয়ে শুনলেন অমিতাভ। তারপর নামলেন একই সঙ্গে।
|
উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান রঞ্জিত মল্লিক ইংরেজি বক্তৃতা পড়ছিলেন গড়গড়িয়ে। মঞ্চের নীচের জটলার অনবরত ফিসফিসানিতে রেগে চকিতে মাতৃভাষায় প্রত্যাবর্তন। “বারণ কর ওদের কথা বলতে! পাপ!” রঞ্জিতের বকুনিতে দোষীরা মুখ বুজলেও দর্শকেরা হেসে ফেললেন। পর্দায় সৎ, নির্ভীক বড়দার চরিত্রেও তো এ ভাবেই দুষ্টু ভাইদের বকেন তিনি।
|
ইন্ডোরে ঢোকার পর থেকেই চলছে তাঁর চরকিপাক। জনে জনে অতিথিদের সম্ভাষণ। অমিতাভ, মিঠুন ও শাহরুখ-বাহিনী চলে যাওয়ার পরে একটু ফুরসত। তত ক্ষণে উদ্বোধনী ছবি শুরু হয়ে গিয়েছে মিনিট কুড়ি। একটুও ছবি না দেখে যাবেন? মমতা প্রথম সারির আসনে বসে পড়লেন। শেষ অবধি দেখা অবশ্য তাঁর কপালে নেই। উৎসবের নৈশভোজে অতিথিরাও তাঁর পথ চেয়ে। তাই উঠতে হল। কর্ত্রী বলে কথা! |