নিজস্ব জমি ও ঘরবাড়ির ব্যবস্থা না করে একের পর এক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চালু হওয়ায় বিপাকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। প্রতিমাসে কেন্দ্রগুলির বাড়ি ভাড়ার টাকা মেটাতেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে প্রশাসনকে। জেলার সদর শহর বালুরঘাটে ২৭১টি অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্র চলছে ভাড়া বাড়িতে। অভিযোগ, বাম আমলে দুই দশকের বেশি সময় ধরে সমাজ কল্যাণমন্ত্রী ছিলেন বিশ্বনাথ চৌধুরী। দেদার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র খুলে কর্মী নিয়োগ করে আরএসপি সংগঠন তিনি মজবুত করেন। যদিও বিশ্বনাথবাবু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এখন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। সরকারি নিয়ম মেনে বালুরঘাট সহ রাজ্যের সর্বত্র সমহারে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চালু করা হয়। ৩০০ জনসংখ্যা পিছু একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চালুর কেন্দ্রীয় নির্দেশ ছিল। সব শিশু ও মায়েদের পুষ্টির লক্ষ্যে ওই জনসংখ্যা আরও কমিয়ে কেন্দ্র চালুর উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছিল।” প্রশাসনিক সূত্রের খবর, একদিকে যেমন অঙ্গনওয়াড়িগুলির জন্য নিজস্ব বাড়ি তৈরির জন্য জমি মিলছে না, তেমনিই ভাড়া বাড়িগুলির ১৬ মাসের বকেয়া ভাড়া মেটাতে আধিকারিকদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। বালুরঘাটের সিডিপিও আল্পনা দাস বলেন, “টাকা না আসায় সমস্যা হয়েছে। ৩ মাসের বাড়ি ভাড়ার টাকা বাড়ির মালিকদের দেওয়া হচ্ছে। বাকি ১৩ মাসের বকেয়ার জন্য টাকার বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে জানানো হয়েছে।” প্রশাসনিক সূত্রে খবর, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে প্রায় ৭০ শতাংশ অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রের নিজস্ব ঘরবাড়ি নেই। কোথাও ভাড়া বাড়িতে বা গাছতলায় কেন্দ্রগুলি চলছে। গত অগস্ট মাসে জেলা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রের জন্য বাসিন্দাদের স্বেচ্ছায় জমি দেওয়ার আবেদন করেন। তাতে চাকরি ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার-সহ নানা প্রতিশ্রুতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেও একজনও এগিয়ে আসেননি বলে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন। জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক কমলেশ বিশ্বাস বলেন, “বাড়ি তৈরির টাকার অভাব নেই। কিন্তু জমি পাওয়া যাচ্ছে না। আবার ভাড়ার টাকার বোঝাও বাড়ছে।” রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বিশ্বনাথবাবু জানান, কেন্দ্র তৈরির জন্য বিনামূল্যে কেউই জমি দেবেন না। কেন্দ্রের কাছে গ্রামের ক্ষেত্রে কেন্দ্র পিছু ৪০ হাজার টাকা এবং শহরের জন্য আরও একটু বেশি টাকা জমি দাতাদের ক্ষতিপুরণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। আর বাড়ি ভাড়া বাবদ টাকা তো কেন্দ্রীয় সরকার দেয়। তাই তা মিটিয়ে দিতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। |