প্রয়াত কংগ্রেস নেতা আবু বরকত আতাউর গনি খান চৌধুরীর দুই ভাই বিদেশ থেকে মালদহে ফিরে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন। ভোটে জিতে এক জন রাজ্যের মন্ত্রী হন। অন্য জন এখন কেন্দ্রের মন্ত্রী। এবার গনি খান চৌধুরীর দুই ছেলেমেয়ে বিদেশের পাততাড়ি গুটিয়ে দেশে ফিরে বাবা-কাকাদের পথেই হাঁটার প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেন। অন্তত বুধবার দুপুরে কোতোয়ালিতে কাকা আবু হাসেম খান চৌধুরী ও দিদি জাসমিনকে পাশে বসিয়ে গনি খানের ছেলে সাইমন হায়াত খান চৌধুরী বলেন, “এখনই রাজনীতিতে নামছি না। ভবিষ্যতে লন্ডন থেকে মালদহে ফিরে এসে রাজনীতি করব। বাবা গনিখান চৌধুরী মালদহ জেলার জন্য অনেক সামাজিক কাজ করেছেন। অনেক উন্নয়ন করেছেন। আমি রাজনীতিতে নেমে বাবার আদর্শে মালদহ জেলার উন্নয়ন করতে চাই।” পাশে বসে থাকা জেলা কংগ্রেস সহ সভাপতি তথা রাজ্যে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী আবু নাসের খান চৌধুরী জানান, গনি খানের ছেলের আগে রাজনীতিতে একদম আগ্রহ ছিল না। তাঁর কথায়, “আমি চাই দাদার ছেলে সাইমন রাজনীতিতে যোগ দিক। |
মালদহের মানুষও চাইছেন, গনি খানের ছেলে রাজনীতিতে আসুক। সাইমন দাদার একমাত্র ছেলে। ও রাজনীতিতে যোগ দিলে জেলার উন্নয়ন আরো দ্রুত হবে। সাইমন যাতে রাজনীতিতে ঢোকে সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।” পাশাপাশি, গনি খান চৌধুরীর মেয়ে জাসমিনও রাজনীতিতে আসার ব্যাপারে আগ্রহ দেখান। তিনি বলেন, “আমি আগে একবার এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছি। এ বার ভাইকে নিয়ে ফের করতে চাই। কারণ, উনি (মমতা বন্দোপাধ্যায়) খুব ভাল কাজ করেছেন।” আবু নাসের খান চৌধুরী জানান, কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী একবার দাদার ছেলের খোঁজ নেন।
এই ব্যাপারে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা রাজ্যের নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “সাইমন ও জাসমিন এরাই তো গনিখান চৌধুরীর প্রকৃত উত্তরাধিকারী। ওঁরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ দেখিয়েছেন। আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।”
দীর্ঘদিন বিদেশে থাকার ফলে ইংরেজি ও জার্মানি ছাড়া কথা বলতে পারেন না সাইমন। প্রায় ৪০ বছর ধরে লন্ডনে রয়েছেন তিনি। আবু নাসের খান বলেন, “দাদা গনি খান ছাড়া পরিবারের বেশির ভাগ সদস্য বিদেশ বসবাস করতেন। পরে সবাই বিদেশ থেকে মালদহে ফিরে এসে রাজনীতি করছে। আমি ইউরোপে ৩৫ বছর ছিলাম। সেখানে থেকে মালদহ ফিরে এসেছি। রুবি (নূর) দীর্ঘদিন কানাডায় বসবাস করেছে। কানাডা থেকে মালদহে ফিরে এসে বিধায়ক হয়েছিল রুবি। ডালু (আবু হাসেম খান চৌধুরী) ২৫ বছর কানাডায় ছিল। কানাডার নাগরিক ছিল, সেও মালদহে ফিরে এসে রাজনীতি করছে। এখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। ডালুর ছেলে ঈশা ও তো কানাডায় দীর্ঘদিন ছিল। তাই গনি খানের ছেলে ৪০ বছর পর বিদেশ থেকে মালদহে ফিরে রাজনীতিতে নামতেই পারে।” মালদহে জন্ম হলেও পাঁচ বছর বয়সে আবু নাসের খান চৌধুরীর হাত ধরে দুই দিদি নীলম ও জাসমিনের সঙ্গে ইংলন্ডে পাড়ি দিয়েছিলেন সাইমন। তার পর ইংলন্ডেই পড়াশোনা করে এখন ট্রান্সপোর্টের ব্যবসা করছেন। ২০০৬ সালের পর সাইমন মঙ্গলবার রাতে মালদহে এসেছে। দু’সপ্তাহ মালদহে থেকে ফের লন্ডনে ফিরে যাবেন। |