নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শিলিগুড়ি পুরসভার তরফে নোটিশের জবাবে বহুতল নির্মাতাদের একাংশ জানাচ্ছেন, বেআইনি নয়, তারা সংস্কার করছেন। কেউ বলছেন, অনেক আগে তৈরি ভবন নিয়ে হইচই করা হচ্ছে কেন তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না। এমনকী গ্যারেজ দখল করে দোকান তৈরির পরেও পুরসভার কাছে ছাড় চাইছেন কেউ কেউ। এখানেই শেষ নয়, নোটিশের উত্তরে এক নির্মাতা কবুল করেছেন তাদের কোনও নকশাই নেই। এতদসত্ত্বেও পুরসভা কেন নির্বিকার তা নিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে নানা প্রশ্ন উঠছে।
পুরসভা সূত্রে খবর, সম্প্রতি চানাপট্টি এলাকায় অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ পেয়ে ব্যবস্থা নিতে পুর কর্তৃপক্ষে অভিযোগ করেন কংগ্রেস কাউন্সিলর রুমা নাথ। অথচ সেই ভবন নির্মাণ চলছেই। রুমা দেবীর প্রশ্ন, পুরসভা তাদের দখলে রয়েছে, তিনি অভিযোগ করেছেন। তাও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না তিনি বুঝতে পারছেন না। এ ব্যাপারে পুরসভার তরফে এক বাস্তুকার জানান, প্রদীপ্ত সরকার ওই বাড়িটি করছেন বলে অভিযোগ উঠলেও বাস্তবে মালিক হলেন তাঁর ঠাকুমা রেণুকা দেবী। এক চিঠিতে রেণুকাদেবী পুরসভাকে জানিয়েছেন, বহু পুরনো বাড়ির কোনও নকশা তাদের কাছে নেই। তা হলে কী ভাবে ওই নির্মাণ হচ্ছে এবং পুরসভা তা বন্ধ করতে কোথায় বাধা পাচ্ছে সেই প্রশ্নে বাসিন্দাদের একাংশ আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন। একই ভাবে শেঠ শ্রীলাল মার্কেটে অনিল অগ্রবালের তৈরি একটি বাণিজ্যিক ভবনের অবৈধ নির্মাণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বাম আমলে তৈরি ওই ভবনে পার্কিংয়ের সমস্ত জায়গায় দোকান করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেবক রোডে মেয়র হোটেলে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছেন সিপিএম এবং কংগ্রেসের কয়েকজন কাউন্সিলর। বর্ধমান রোডে সত্যনারায়ণ অগ্রবালের বহুতল নিয়েও প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন কাউন্সিলরদের একাংশ। এমনকী সেবক রোডের দুই মাইলের সত্যজিৎ রায় লেনে একটি অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ পেয়েও পুরসভা হাত গুটিয়ে রয়েছে কেন সেই প্রশ্ন উঠেছে। ওই এলাকার বাসিন্দা প্রতাপ কেডিয়ার অভিযোগ, পার্কিংয়ের জায়গার একাংশে নির্মাণকাজ হয়েছে। পুরসভাকেও তা জানিয়েছি। যে নির্মাণকাজ নিয়ে অভিযোগ ওই ভবনের মালিকপক্ষের অন্যতম রাকেশ অগ্রবাল বলেন, “নিরাপত্তা রক্ষীদের জন্য পার্কিংয়ের একাংশে একটি ঘর তৈরি করা হয়েছিল।
পুর কর্তৃপক্ষ তা ভেঙে দিতে বলায় সময় চাওয়া হয়েছে। আমরাই তা ভেঙে দেব।” পাশাপাশি, প্রমোটার অনিল অগ্রবাল, সত্যনারায়ম অগ্রবাল এবং মেয়র হোটেল কর্তৃপক্ষ আলাদা ভাবে হলেও একই সুরে জানিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। প্রদীপ্তবাবু অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পুরসভার বল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা বলেন, “অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। কাউকেই ছাড়ব না।” পুর কমিশনার প্রভুদত্ত ডেভিড প্রধান জানিয়েছেন, নোটিশের জবাব নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |