নিজস্ব সংবাদদাতা • ময়নাগুড়ি |
শিশু চুরি ও বিক্রির অভিযোগে পুলিশ দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার ময়নাগুড়ির আমগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ধওলাগুড়ি এবং খাগরাবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের নীরেন্দ্রপুর থেকে ওই দু’জনকে ধরা হয়। আলিপুরদুয়ারের নিউ টাউন থেকে উদ্ধার হয়েছে বিক্রি হয়ে যাওয়া দেড় বছরের পুত্র সন্তান। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম সুভাষ মণ্ডল ও তাপস রায়। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “ধৃতরা শিশু বিক্রির একটি বড় চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে মনে হচ্ছে। ওই ঘটনায় জড়িত এক তরুণীটির খোঁজ চলছে। প্রাথমিক ভাবে কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। আপাতত দু’জনকে ধরা হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের যে দম্পতি শিশুটিকে কিনেছেন তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পরে প্রয়োজনে গ্রেফতার করা হবে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত সুভাষ পেশায় কবিরাজ। তিনি যৌন রোগের চিকিৎসা করেন। পুজোর আগে তাঁর বাড়িতে এক তরুণী থাকতে শুরু করেন। ওই তরুণীর শিশুপুত্রকে বিক্রি করা হয়েছে বলে জেরার মুখে এ দিন সুভাষ দাবি করেন। যদিও পুলিশ কর্তারা শিশুটিকে অন্য কোনও এলাকা থেকে চুরি করে এনে ওই শিশুকে বিক্রি করা হয়েছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছেন। ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জেনেছে শিশু যে তরুণীর বলে সুভাষ দাবি করেছেন তিনি ময়নাগুড়ির বাসিন্দা। স্থানীয় কোনও কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
জেরার মুখে সুভাষ আরও জানায়, পুজোর আগে যৌন রোগের চিকিৎসার জন্য আলিপুরদুয়ারের এক নিঃসন্তান দম্পতিকে তাঁর কাছে নিয়ে যায় নীরেন্দ্রপুরের বাসিন্দা তাপস। সেখানে দেড় বছরের শিশুপুত্রটি দেখে দম্পতির পছন্দ হয়। একটি কাগজে লিখে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাঁরা তাকে কিনে নিয়ে চলে যান। শিশুটি বিক্রির পরে তরুণী কিছুদিন কবিরাজের বাড়ি ছিলেন বলে পড়শিদের সূত্রে পুলিশ জেনেছে। মঙ্গলবার এক ব্যক্তি ফোন করে গোপনে ঘটনার কথা পুলিশকে জানায়। পরে রাতে আলিপুরদুয়ারের নিউটাউন এলাকা থেকে শিশুটি উদ্ধার করা হয়। বুধবার সকালে ময়নাগুড়ি থানার আইসি অভিজিৎ সরকার সাদা পোশাকে সুভাষের বাড়িতে যান। সেখানে তাকে গ্রেফতারের পরে ধরা হয় তাপসকে। পুলিশ জানায়, শিশুটি বিক্রির পরে সুভাষ তাপসকে ১৭০০ টাকা দিয়েছে। ওই ঘটনার পিছনে শিশু শিশু চুরি চক্র আছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখতে তরুণীর খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। ঘটনার তদন্তে এ দিন দুপুরে ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ কর্তারা আলিপুরদুয়ারে যায়। সেখানে শিশুর ক্রেতা ও ব্যবসায়ী দম্পতিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে ময়নাগুড়ি থানায় আনা হয়। আলিপুরদুয়ারের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বিশ্বচাঁদ ঠাকুর এ দিন বলেন, “শিশুটিকে ময়নাগুড়িতে পাঠানো হয়েছে। সেখানে একটি হোমে রাখা হবে।” আটক নিউটাউনের ব্যাবসায়ী অসিতবরণ রক্ষিত বলেন, “আমার কোনও সন্তান নেই। অক্টোবর মাসে জানতে পারি ময়নাগুড়িতে একটি শিশু দত্তক দেওয়া হবে। এর পরে শিশুটিকে নিয়ে আসি।” |