কংগ্রেস-তৃণমূল জোট ভেঙে যাওয়ায় নিচু তলায় বাম-বিরোধী ভোট বিভাজনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
এই সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য জেলা নেতৃত্বকে এখন থেকেই তৎপর হওয়ার নির্দেশ দিলেন তিনি। আলিমুদ্দিনে সিপিএমের দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে বুদ্ধবাবু এ কথা বলেন। বৈঠকে দলের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট উপস্থিত ছিলেন।
বুদ্ধবাবুর মতে, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেস-তৃণমূল-বিজেপি-এসইউসি সব দল নিচু তলায় সিপিএমের বিরুদ্ধে এক হয়ে লড়েছিল। তৈরি হয়েছিল বাম-বিরোধী রামধনু জোট। কিন্তু এ বার প্রতিটি দলই পঞ্চায়েত নির্বাচনে পৃথক ভাবে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভোট বিভাজনের এই সুযোগ নিতে পারলে পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএমের ফল ভাল হতে পারে বলে বুদ্ধবাবু মনে করেন। সাধারণ ভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে দক্ষিণবঙ্গে বামেদের ফল খুবই খারাপ হওয়ার আশঙ্কা। তবে, ভোটভাগিতে কয়েকটি জেলা পরিষদ বামেরা জিততে পারে বলেও আলিমুদ্দিন মনে করছে। বুদ্ধবাবুর কথায় তা স্পষ্ট।
সিপিএম নেতৃত্বের ধারণা, এপ্রিলের আগে পঞ্চায়েত নির্বাচন করা সম্ভব নয়। আগামী পাঁচ মাসকে পুরোপুরি কাজে লাগানোর নির্দেশ দিল আলিমুদ্দিন। বুদ্ধবাবু বলেন, “বামফ্রন্ট সরকার পঞ্চায়েতের মধ্যে দিয়ে গ্রামীণ মানুষের হাতে যে অধিক ক্ষমতা দিয়েছিল, তা খর্ব করার প্রক্রিয়া চলছে। এর বিরুদ্ধে মানুষের দাবিকে সামনে রেখেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়তে হবে।” পঞ্চায়েত ভোটে যাতে বাম শরিকদের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ঐক্য হয়, তার উপরে জোর দেন বিমান বসু। গত বার শরিকি লড়াইয়েই দুটি জেলা পরিষদ হাতছাড়া হয়েছিল বলে মনে করে সিপিএম। এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৫০% আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। বৈঠকে বলা হয়েছে, চেষ্টা করতে হবে ৫০% -এর বেশি আসনে মহিলা প্রার্থী দিতে। এখন থেকেই স্থানীয় স্তরে মহিলা প্রার্থী ঠিক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ‘তৃণমূলের আমলে রাজ্যে নারী নির্যাতন বাড়ছে’ এই অভিযোগকে সামনে তুলে ধরে প্রচারে নামতে চায় সিপিএম। সেই কারণে মহিলাদের উপরে আক্রমণের প্রতিবাদে বামফ্রন্টের ডাকে ১৭ নভেম্বর কলকাতায় সমাবেশ করা হবে। |