সময়মতো তথ্য জমা করতে দেরি করায় ভাতা আটকে রয়েছে আশাকর্মীদের। পুরুলিয়ার আশাকর্মীরা বকেয়া ভাতার দাবিতে সম্প্রতি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে স্মারকলিপিও দেন। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার গুরুত্ব বাড়াতে আশা (অ্যাক্রিডিটেড সোশ্যাল হেলথ অ্যাকটিভিস্ট) কর্মীদের কাজে নামিয়েছে সরকার। তাঁরা মূলত স্বাস্থ্য পরিষেবায় সংযোগকারীর ভূমিকা পালন করেন। যেমন গর্ভবতী মহিলাদের নাম নথিভুক্তকরণ থেকে বাড়ি বাড়ি ঘুরে তাঁদের নির্দিষ্ট সময় অন্তর নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা করানোর কাজ দেখাশোনা করেন আশাকর্মীরা। সন্তান জন্মানোর পরে তাদের দেখাশোনার বিষয়টিও দেখতে হয় আশাকর্মীদের। এ ছাড়া শিশুদের টিকাকরণের বিষয়েও তাঁরা বাড়ির লোকেদের সময়মতো খবর দেন। প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত সরকারি সুযোগ সুবিধার কথা জানানোও তাঁদের দায়িত্ব।
পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়নের পুরুলিয়া জেলা শাখার সভাপতি কার্তিক মাজি বলেন, “জেলায় কমবেশি ১৬০০ আশাকর্মী নিয়মিত স্বাস্থ্য পরিষেবায় এত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। অথচ তাঁরা নিয়মিত উৎসাহ ভাতাটুকুও পাচ্ছেন না।” হুড়া ব্লকের আশাকর্মী শম্পা সেন বলেন, “পুজো পার হয়ে গেল। অথচ আমরা পুজোর আগে ভাতা পেলাম না।” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আশাকর্মীদের কাজের বিবরণ প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট ফর্মে লিখে সংশ্লিষ্ট উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এএনএমের মারফৎ ব্লকের বিএমওএইচের কাছে পাঠাতে হয়। ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ঘুরে তা জেলায় আসে। সেই তথ্য পাঠাতে হয় স্বাস্থ্যভবনে। তারপর আশাকর্মীদের ভাতা অনুমোদন হয়। কিন্তু ওই তথ্য পৌঁছনোর শৃঙ্খলায় ব্যাঘাত ঘটলেই ভাতা বরাদ্দ হতে দেরি হয়ে যায়। আর এমন ঘটনা মাঝেমধ্যেই হয়। ভাতা অনিয়মিত হওয়াতে তাই ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হচ্ছে আশাকর্মীদের মধ্যে। পুরুলিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপনকুমার ঝরিয়াতও বলেছেন, “আশাকর্মীদের এই ভাতা প্রতি মাসে আসে না। এ বার ঝালদা ২, মানবাজার ২, পুরুলিয়া ২, রঘুনাথপুর ১, ও আড়শা ব্লকের আশাকর্মীদের তথ্য আমাদের কাছে দেরিতে এসেছে। সে কারণেই ওদের ভাতা বরাদ্দ হয়নি।” কেন এই দেরি? তাঁর যুক্তি, অনেক ক্ষেত্রে ওই তথ্যে ত্রুটি থাকে। সে সব সংশোধন করে পাঠাতে হয়। তবে তাঁর আশ্বাস, শীঘ্রই ওই পাঁচটি ব্লকের আশাকর্মীরা ভাতা পেয়ে যাবেন। |