ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের সাহায্যের ভাবনা
কাল বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত ধান চাষিদের বিকল্প চাষে সহায়তা দিতে চাইছে পুরুলিয়া কৃষি দফতর। মূলত সোমবারের ভারী বৃষ্টিতে মাঠে কেটে রাখা ধানের ক্ষতি হওয়াতেই কৃষি দফতর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পুরুলিয়ার উপ কৃষি অধিকর্তা অশ্বিনীকুমার কুণ্ডু বলেন, “চাষিরা কতটা পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন, তার হিসাব চলছে। আমরা চাষিদের বিকল্প হিসেবে রবি চাষের জন্য টোড়ি সর্ষে, সাদা সর্ষে, ছোলা, কলাইয়ের বীজ দেব।”
শনিবার থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত জেলায় গড়ে ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। কৃষি দফতর জানিয়েছে, ওই জলেই মাঠে কেটে রাখা ধানের ক্ষতির যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল। সোমবার বিকেলের ব্যাপক বৃষ্টিতে ক্ষতি বাড়বে বই কমছে না। ওই দিন কাশীপুর ব্লকেই ১০৬.৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সাঁতুড়িতে ৬০.৬ মিলিমিটার, নিতুড়িয়ায় ৬৫.২ মিলিমিটার, হুড়াতে ৮০.২ মিলিমিটার, পুরুলিয়াতে ২৭.৬ মিলিমিটার, জয়পুরে ৩৭.৬ মিলিমিটার, পাড়াতে ২১.২ মিলিমিটার, ঝালদায় ১৫ মিলিমিটার, পুঞ্চায় ১৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।
অকাল বৃষ্টি ও কুয়াশায় নষ্ট টমেটো। হুড়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
জেলা কৃষি দফতরের হিসেব অনুযায়ী, চলতি মরশুমে জেলায় গড়ে ৯২ শতাংশ চাষ হলেও কাশীপুর, সাঁতুড়ি ও মানবাজার ব্লকে গড়ে ৭০ শতাংশ চাষ হয়েছে। চাষের শুরুতে সেচের জলের অভাবের জন্যই ওই এলাকার চাষিরা এ বার চাষ কম করেছেন। একে চাষ কম হয়েছে, তার উপর সোমবারের বৃষ্টি কাশীপুর ও সাঁতুড়ির চাষিদের কপালে দুঃশ্চিন্তার ভাঁজ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গিয়েছে, জল থই থই খেত থেকে ধানগাছ তুলে চাষিরা জমির আলে জমা করে রাখছেন। হুড়া ব্লকের মধুবন গ্রামের নিমাই মাহাতো ও চাকলতা গ্রামের সুবল বাউরিরা বলেন, “ভারী বৃষ্টিতে জমিতে জল জমে গিয়ে আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেল। ধান বোধহয় পচে যাবে।” ক্ষতি এড়ানো যায়নি অন্য ফসলেরও। স্থানীয় কর্মাটাঁড় গ্রামের বাসিন্দা সুনীল হেমব্রম বলেন, “টমেটো চাষ করেছিলাম। প্রথমে কুয়াশায় টমেটোর গায়ে ফাটল ধরেছিল। পরে বৃষ্টিতে ভিতরে জল ঢুকে যাওয়ায় টমেটো নষ্ট হয়ে গিয়েছে।”
বিকল্প চাষের জন্য কৃষি দফতরের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাসের কথা শুনে ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদের মনে অতীত অভিজ্ঞতা থেকে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পুঞ্চা ব্লকের চরণডি গ্রামের রথুলাল মাহাতো, হুড়ার ছামনিগোড়ার সাধন মাহাতো বলেন, “সর্ষে, ছোলার চাষ তো করব। কিন্তু সময় মতো কী বীজ পাবো? তাতে ফলনই বা কেমন হবে?” কাশীপুর ব্লকের গড়চরের সুফল রাজোয়াড়ের প্রশ্ন, “অনেকেরই ধান নষ্ট হয়েছে। কিন্তু ওই বীজ বিলি করার সময় আবার অন্য ভাবে বাছবিচার করা হবে না তো?” কৃষি দফতরের আধিকারিকরা অবশ্য জানিয়েছেন, এ নিয়ে চাষিরা অহেতুক আতঙ্কিত হচ্ছেন।
জেলা উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিক সামন্ত লায়েক বলেন, “টাঁড় জমিতে যাঁরা সবজি চাষ করেছেন, তাঁদের কাছে এই বৃষ্টি খুব একটা ক্ষতির নয়। কিন্তু নিচু জমিতে যাঁরা সবজি চাষ করেছেন বা শীতের সবজি বোনার জন্য যাঁরা বীজতলা তৈরি করেছিলেন, তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আলু যাঁরা বুনেছিলেন তাঁরাও কমবেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।” তিনি জানান, এ রকম মেঘলা আবহাওয়া থাকলে সব্জিতে ছত্রাক সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। সংক্রমণ ঠেকাতে ছত্রাক নাশক ওষুধ ছড়াতে হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.