চাকরির ঘোষণায় রেলকে ফাঁপরে ফেললেন সনিয়া
মি-জট কাটিয়ে সনিয়া গাঁধীর নির্বাচনী কেন্দ্র রায়বরেলীতে রেল-কোচ কারখানার কাজ অবশেষে শুরু হল। কিন্তু সেই কারখানার উদ্বোধন করতে গিয়েই রেলের জমি-নীতি নিয়ে নতুন করে জট পাকিয়ে তুললেন কংগ্রেস সভানেত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী হয়ে ঘোষণা করেন, রেলের প্রকল্পে জমি দিলে পরিবারের এক জনকে চাকরি দেওয়া হবে। ২০০৯-এ এটাই রেলের জমি অধিগ্রহণ-নীতি হিসাবে গৃহীত হয়। তার পরে বেশ কিছু প্রকল্পে জমিদাতাদের চাকরিও দেওয়া হয়েছে। এর পরে প্রায় এক যুগ বাদে রেল মন্ত্রক কংগ্রেসের হাতে ফিরেছে।
রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী সম্প্রতি জানিয়ে দিয়েছেন, জমিদাতাদের রেলে চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়। এটা অবাস্তবও। অধীরের মতে, চাকরির বিষয়টি জমি দেওয়ার শর্ত হওয়ার পরে অসন্তোষ বেড়েছে। এর ফলে জমি অধিগ্রহণও জটিল হয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস সভানেত্রী এ দিন নিজের কেন্দ্রে কারখানাটির শিলান্যাস করে জানান, আড়াই হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প গড়তে যে ১৪০০ কৃষক পরিবার জমি দিয়েছে, তাদের প্রত্যেকেটিরই এক জন করে সদস্য রেলে চাকরি পাবেন। রেল মন্ত্রক সূত্রে খবর, সনিয়ার ঘোষণার পরে আজ থেকেই বিষয়টি কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।

জমিদাতাদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিচ্ছেন সনিয়া গাঁধী। রায়বরেলীতে। ছবি: পিটিআই
ইউপিএ প্রথম বার ক্ষমতায় আসার পরে সনিয়ার পরামর্শে পিছিয়ে পড়া অঞ্চল রায়বরেলীতে একটি অত্যাধুনিক রেল কোচ কারখানা গড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ। তিনি জানান, প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষের সরাসরি কর্মসংস্থান হবে এই কারখানায়। সেই কারখানার জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজও শুরু হয়। কিন্তু ক্ষতিপূরণ নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে জমির মালিকরা আন্দোলনে নামায় কাজ থমকে যায়।
এর পরে মমতার জমি অধিগ্রহণ-নীতি গৃহীত হওয়ার পরে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। এই নীতি অনুযায়ী ২০০৯-এর পরে যে সব পরিবার কারখানার জন্য জমি দেয়, রেল তাদের চাকরি দেওয়ার অঙ্গীকার পত্র দেয়। আগে যারা জমি দিয়েছিল, তারাও তখন চাকরি চেয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। কিন্তু রেল মন্ত্রক জানিয়ে দেয়, তা সম্ভব নয়। কারণ তা হলে অন্যান্য সব রেল প্রকল্পে আগে যারা জমি দিয়েছে, তারাও চাকরির জন্য দরবার শুরু করবে।
এই জমি-জটে রায় বরেলীর কারখানা নির্মাণের কাজই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে সনিয়াও উদ্বিগ্ন হন। স্থানীয় কংগ্রেস নেতারা জমিদাতাদের বলেন, “প্রতি পরিবারের এক জনকে চাকরি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। কিন্তু কারখানা চালু না হলে তো কেউই চাকরি পাবেন না!” এর পরে বিক্ষোভ স্থগিত রাখা হয়। কারখানার নির্মাণ কাজও ফের শুরু হয়। নির্ধারিত সময়ের তিন বছর পরে আজ সেই কারখানার উদ্বোধন করে সনিয়া সব জমিদাতা পরিবারের এক জনকে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
সনিয়ার এই ঘোষণার পরে রায় বরেলীতে খুশির হাওয়া বয়ে গেলেও ভাঁজ পড়েছে রেল কর্তাদের কপালে। কারণটা স্পষ্ট, চাকরির দাবিতে থমকে থাকা প্রকল্পের সংখ্যা কম নয়। রায় বরেলীর নজির দেখিয়ে সব প্রকল্পের পুরনো জমিদাতারাও চাকরির দরবার শুরু করলে কী পরিস্থিতি হবে, সেটা ভেবেই এখন বিচলিত হচ্ছেন রেল কর্তারা। রেলমন্ত্রী পবন বনশল অবশ্য এ বিষয়ে কোনও প্রশ্নেরই জবাব দেননি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.