খুড়তুতো ভাইয়ের কাছ থেকে চুয়ান্ন হাজার টাকা ধার নিয়েছিল দাদা। ফেরত দেওয়ার জন্য বারবার তাগাদা দিচ্ছিল ভাই। টাকা যাতে ফেরত দিতে না হয়, সে জন্য ভাইকে সে খুন করেছে বলে জেরায় স্বীকার করেছে মান্নান শেখএমনটাই দাবি পুলিশের। গত ২০ অক্টোবর কালনার দফরপুরে একটি ধানখেত থেকে উদ্ধার হয় ফিরোজ শেখ নামে এক যুবকের দেহ। সেই ঘটনাতেই ফিরোজের দাদা মান্নানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত খুনের কথা কবুল করেছে। এই ঘটনায় আরও কয়েক জনের নাম উঠে এসেছে। তাদের খোঁজ চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তেত্রিশের মান্নান ও তার থেকে বছর চারেকের ছোট ফিরোজ গরু কেনাবেচার কাজ করতেন। সেই ব্যবসার সুবাদেই হুগলির পান্ডুয়া-সহ নানা জায়গায় গরুর হাটে তাঁরা এক সঙ্গে যাতায়াত করতেন। ১৬ অক্টোবর গরুর হাটে যাওয়ার নাম করে তাঁরা বাড়ি থেকে বেরোন। তার পর থেকে ফিরোজ আর বাড়ি ফেরেননি। ২০ অক্টোবর বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি ধানখেত থেকে দুর্গন্ধ পান স্থানীয় মানুষজন। তাঁরা খবর দেন কালনা থানায়। ফিরোজের বাবা মোমিন মিঁয়া পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন, ছেলেকে কে বা কারা পরিকল্পিত ভাবে খুন করেছে।
পুলিশ জানায়, তদন্তে নেমে জানা যায়, ফিরোজ ব্যবসায়িক প্রয়োজনে দাদাকে চুয়ান্ন হাজার টাকা ধার দিয়েছিল। এই টাকার জন্য মাঝে-মধ্যেই দু’জনের মধ্যে বচসা বাধত। এ কথা জানতে পেরে পুলিশ মান্নানের মোবাইল ফোনটির খোঁজ করে। কিন্তু মান্নান পুলিশকে জানায়, তার মোবাইলটি দিন কয়েক আগে হারিয়ে গিয়েছে। তাতে পুলিশের সন্দেহ আরও বাড়ে। এলাকা থেকে পুলিশ মান্নানের মোবাইল নম্বরটি জোগাড় করে। সেই নম্বরের কল লিস্ট ঘেঁটে পুলিশ জানতে পারে, ফিরোজ নিখোঁজ হওয়ার আগে তাঁর মোবাইলে শেষ যে ফোনটি এসেছিল, সেটি মান্নানের।
এর পরেই মান্নানকে জেরা করা শুরু করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে ভেঙে পড়ে মান্নান। সে জানায়, ফিরোজের থেকে ধার নেওয়া টাকা যাতে ফেরত না দিতে হয়, সে জন্য সে খুনের ছক কষে। ফোন করে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে ডেকে আনে ফিরোজকে। তার পরে ধানখেতে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয় তাঁকে। পুলিশ জানায়, মান্নানকে জেরা করে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় আরও কয়েক জন জড়িত ছিল। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম জানাতে চায়নি পুলিশ। |