শিশু ও প্রসূতিদের ‘পরিপুরক ও পুষ্টিকর’ খাবার নিয়ে দুর্নীতি ও অপরিচ্ছন্ন খাবার দেওয়ার অভিযোগ তুলে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে তালা ঝুলিয়ে দিলেন কেতুগ্রামের সীতাহাটি পঞ্চায়েতের সুজাপুর গ্রামের বাসিন্দারা। দু’দিন পরে, বুধবার কেতুগ্রাম ২ ব্লকের যুগ্ম বিডিও আরিকুল ইসলামের নির্দেশে সুপারভাইজার তদন্তে যান। যুগ্ম বিডিও বলেন, “গ্রামবাসীদের তালা খুলে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” আজ, বৃহস্পতিবার দু’পক্ষকেই ব্লক অফিসে ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার সকালে।এ দিন সকালে প্রসূতির জন্য ওই অঙ্গলওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে খাবার নিয়ে যান এক গ্রামবাসী। পশ্চিম সুজাপুর গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই খাবারের ভিতরে একটি ট্যাবলেট মেলে। ট্যাবলেটটি খাবারের মধ্যে কী ভাবে এল, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ‘দিদিমণি’দের কাছ থেকে সদুত্তর মেলেনি। প্রতিবাদে ওই দিন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ হওয়ার পরে তাঁরা একজোট হয়ে ফের তালা বন্ধ করে দেন। ফলে মঙ্গলবার ও বুধবার কেন্দ্রটি খোলেনি। সহায়িকা ও কর্মীরা স্কুলে গিয়েও ফিরে যান। |
পশ্চিম সুজাপুর গ্রামের বাসিন্দা পিন্টু প্রধান, তুফান ঘোষদের অভিযোগ, “অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে যে খাবার দেওয়া হয়, তাতে প্রায় দিনই নোংরা থাকে। এক বার পেরেকও মিলেছিল। পরিচ্ছন্ন খাবার দিতে বলা হলেও তাতে কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।” অভিভাবিকা মৌসুমী প্রধান, অমিতা ঘোষদের আরও অভিযোগ, “বৃহস্পতিবার ডিম দেওয়া হয় না। ওই ডিম বাড়ি নিয়ে চলে যান দিদিমণিরা। সেই কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে গ্রামবাসীরা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে তালার উপরে তালা ঝুলিয়ে দেন।”
সোমবারই বিষয়টি নিয়ে সীতাহাটি পঞ্চায়েত প্রধান বিকাশ বিশ্বাসের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন গ্রামবাসীরা। বিকাশবাবু বলেন, “অভিযোগটি সিডিপিও-র কাছে পাঠানো হয়েছে।” সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের আধিকারিক (সিডিপিও)-র সঙ্গে বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সহায়িকা মিঠু প্রধানের দাবি, “আমি টানা ২২ বছর ধরে এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রয়েছি। এখানকার শিশুরা আমার নাতি-নাতনির মতো। তাদের কোনও ভাবেই অপরিচ্ছন্ন খাবার দিতে পারি না।”
যুগ্ম বিডিও-র দাবি, “এক বছর ধরে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ট্যাবলেট সরবরাহ করা হয়নি। তাই মনে হচ্ছে গ্রামবাসীদের অভিযোগ সঠিক নয়। তবুও নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তা লিখিত ভাবে জানাতে বলেছি।” |