বন্ধ থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা মাইনিং অ্যান্ড অ্যালায়েড মেশিনারি কর্পোরেশনের (এমএএমসি) আবাসন এলাকায় নিয়ম বহির্ভূত সমস্ত নির্মাণ ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ)। বুধবার এডিডিএ-র পক্ষ থেকে আবাসনের বেআইনি নির্মাণ চিহ্নিত করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। তবে কবে অভিযান হবে, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনও দিনের উল্লেখ করা হয়নি নোটিসে।
এমএএমসি কারখানা বন্ধ হয়ে যায় ২০০২ সালের ৩ জানুয়ারি। কারখানার প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক-কর্মচারীকে স্বেচ্ছাবসর দেওয়া হয়। ২০০৩-এর ২৪ জুন কলকাতা হাইকোর্ট কারখানা ও আবাসন এলাকা পৃথক করে দেয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেই বছরের ১ জুলাই রাজ্য সরকারের মাধ্যমে আবাসন এলাকার দায়িত্ব পায় এডিডিএ। আবাসিকেরা আবাসনের মালিকানার দাবি জানাতে শুরু করেন। |
২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি আদালত তা অনুমোদন করে। এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আবাসিকেরা ৯৯৯ বছরের জন্য আবাসন ‘লিজ’ পাবেন। ২০০৫-এর জানুয়ারি থেকে ২০১০-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি বর্গ ফুটে ১ টাকা হিসেবে মোট ভাড়ার ১৫ শতাংশ দিতে হবে আবাসিককে। যে সমস্ত আবাসিকের লিক্যুইডেটরের কাছে বকেয়া পাওনা রয়েছে তাঁদের তা দিতে হবে না। তাঁদের বকেয়া থেকে এই টাকা কেটে নেওয়া হবে। তা ছাড়া এত দিন পরিষেবা না মেলার অভিযোগ তুলে পুরকর দিতেন না অনেকেই। এখন থেকে আবাসিকদের নিয়মিত পুরকর দিতে হবে। মার্চে এডিডিএ আবাসিকদের এই সংক্রান্ত চিঠি পাঠাতে শুরু করে। এখনও পর্যন্ত ১২৩ জন আবাসিকের সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪১৫৩টি আবাসনের মধ্যে ২৪৯৪টিতে রয়েছেন আবাসিকেরা। সমীক্ষা করে এডিডিএ-র আধিকারিকেরা দেখেছেন, তার মধ্যে প্রায় সাতশো আবাসনে বেআইনি ভাবে সম্প্রসারণ হয়েছে। আবাসনের পিছনের অংশে মাটির নীচ দিয়ে বয়ে গিয়েছে নিকাশি নালা। আবার সামনের অংশের মাটির নীচে রয়েছে বিদ্যুতের লাইন। কাজেই ওই দুই অংশে নির্মাণকাজ একেবারেই বেআইনি। কিন্তু নিয়ম ভেঙে অনেকেই ওই দুই অংশে নির্মাণকাজ করিয়েছেন। সুবিধা মতো কেউ গ্যারাজ, কেউ রান্নাঘর ইত্যাদি নির্মাণ করেছেন। তা ছাড়া অনেকে কোনও অনুমতি ছাড়াই আবাসনের পাশের অংশেও নির্মাণ করেছেন। এর পরেই এডিডিএ সেগুলি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। এলাকায় মাইকের মাধ্যমে প্রচার করে সে কথা জানানোও হয় বাসিন্দাদের। |
বিজ্ঞপ্তি দেখতে জড়ো হয়েছেন আবাসিকেরা। |
আবাসনের পাশে যা নির্মাণকাজ হয়েছে, সেগুলিকে কিছুটা ছাড় দেওয়া যায় কি না, সে ব্যাপারে এডিডিএ-কে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানান আবাসিক আশিস চট্টোপাধ্যায়, অবিনাশ ক্ষেত্রপালেরা।
এডিডিএ সূত্রে জানা যায়, এখনও এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বেআইনি নির্মাণ চিহ্নিত করে তা ভেঙে ফেলা হবে বলে বুধবার নোটিস দেওয়া হয়েছে।” এডিডিএ-র একটি সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, কালীপুজো ও দীপাবলির কথা ভেবে এখনই কোনও নির্মাণ ভাঙার কাজ হবে না।
|