অধীরের কাছে লোকাল চালুর দাবি
প্রতি বার রেল বাজেট পেশের সময়ে আশায় থাকে দুর্গাপুরবাসী। কিন্তু কোনও বারই আশা পূরণ হয় না। দুর্গাপুর থেকে সরাসরি হাওড়া বা শিয়ালদহ যাওয়ার লোকাল ট্রেন ঘোষণা হয়নি কোনও বারই। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী রেলের প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পরে সেই দাবিতে সরব হয়েছে আইএনটিইউসি অনুমোদিত ‘দুর্গাপুর প্রজেক্টস ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’। রেল প্রতিমন্ত্রীকে বিষয়টি জানিয়ে অবিলম্বে এ ব্যাপারে পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছে তারা।
দুর্গাপুর থেকে লোকাল ট্রেন চালুর দাবি অনেক দিন ধরেই জানিয়ে আসছেন এই শিল্প শহরের বাসিন্দারা। ২০০৭-এর জুনে তৎকালীন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব বাঁকুড়া রোড রেল উড়ালপুলের শিলান্যাস করতে এলে দুর্গাপুর থেকে হাওড়া ও শিয়ালদহগামী লোকাল ট্রেন চালুর দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দেয় তৃণমূল ও রেল নিত্যযাত্রী সমিতি। সভামঞ্চ থেকেই লালুপ্রসাদ প্রতিশ্রুতি দেন, পরবর্তী রেল বাজেটেই দুর্গাপুর-হাওড়া লোকাল চালুর প্রস্তাব রাখা হবে। তা অবশ্য হয়নি। ২০০৮-এর মাঝামাঝি রেলওয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির তৎকালীন চেয়ারম্যান বাসুদেব আচারিয়া দুর্গাপুরে জানিয়েছিলেন, সে বছর অগস্ট থেকে দুর্গাপুর-হাওড়া লোকাল চালুর ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে রেল। দুর্গাপুরে বৈদ্যুতিক ট্রেনের টার্মিনাল না থাকায় কী ভাবে লোকাল ট্রেন চালু সম্ভব, সে নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বাসুদেববাবু বলেছিলেন, “ট্রেনগুলি আসানসোল থেকে দুর্গাপুরে ফাঁকা আসবে। এর পরে দুর্গাপুর থেকে যাত্রী নিয়ে হাওড়া যাবে। মাঝে থামবে শুধু বর্ধমানে।” এই পরিকল্পনা অবশ্য শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি।
বর্ধমান থেকে হাওড়া পর্যন্ত নন-স্টপ লোকাল চলাচল করে। বাসিন্দাদের দাবি, দুর্গাপুর থেকেও যদি তেমন ভাবে হাওড়া পর্যন্ত লোকাল চালুর উদ্যোগ হয়, তাহলে তাঁরা উপকৃত হবেন। দুর্গাপুর রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “দুর্গাপুর থেকে কলকাতা যাওয়ার অনেক বাস রয়েছে। কিন্তু ট্রেনের তুলনায় ভাড়া অনেক বেশি। তা ছাড়া বাসযাত্রায় ধকলও থাকে। লোকাল চালু হলে সাধারণ মানুষ অল্প ভাড়ায় ভাল ভাবে কলকাতা যেতে পারবেন।” তিনি জানান, রেল দফতর ও পূর্বতন রেলমন্ত্রীদের কাছে বারবার এই আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার মিহির নন্দীও বলেন, “লোকাল চালু হলে সবচেয়ে সুবিধা হবে গরিব মানুষজনের।” তিনি জানান, গত কয়েক বছরে এই শহরে বহু স্কুল, কলেজ, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, কারখানা গড়ে উঠেছে। ফলে লোকজনের যাতায়াত বেড়েছে। কাজেই লোকাল চালু হলে তাঁদেরও সুবিধা হবে। দুর্গাপুর বণিকসভার পক্ষে কবি দত্ত বলেন, “লোকাল চালু হলে ব্যবসার কাজেও সুবিধা হবে।”
অধীর চৌধুরী রেলের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পরেই ‘দুর্গাপুর প্রজেক্টস ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’ তাঁর কাছে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন। সংগঠনের পক্ষে উমাপদ দাস বলেন, “নতুন রেল প্রতিমন্ত্রীকে লোকাল ট্রেন না থাকার অসুবিধার কথা জানিয়ে ফ্যাক্স পাঠিয়েছি।” পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ ও ২০০৯ সালে দু’বার দুর্গাপুরে পরিদর্শন এসেছেন দফতরের আধিকারিকেরা। কিন্তু তার পরে কী হয়েছে, তা বলতে পারেননি আসানসোলের ডিআরএম দফতরের আধিকারিকরা। ডিআরএম জগদানন্দ ঝা বলেন, “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের থেকে নির্দেশ পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”
তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায় জানান, রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রেল উড়ালপুলের প্রস্তাব ও অর্থ বরাদ্দ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে রেলমন্ত্রীর দায়িত্বে এসে লালুপ্রসাদ যাদব তার শিলান্যাস করেন। দুর্গাপুরে রাজধানী এক্সপ্রেসের কোনও স্টপেজ ছিল না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা চালু করেন। যে যখন দায়িত্বে এসেছেন মানুষের নানা দাবি মেটানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন বলে দাবি করে অপূর্ববাবু বলেন, “এখন কেউ যদি দুর্গাপুর থেকে হাওড়া লোকাল চালু করতে পারেন, শহরের বাসিন্দা হিসেবে খুশি হব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.