বহরমপুর থেকে উধাও রিকশাও। বৃষ্টিতে বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকার রিকশাচালকেরা বহরমপুরে আসতে পারছেন না। এতে রিকশার দাপাদাপি কমেছে ঠিকই। কিন্তু বেড়ে গিয়েছে রিকশা ভাড়া। এক শ্রেণির চালকের নবাবি মেজাজ সহ্য করতে হচ্ছে পুরবাসীদের। আগে ১০ টাকা নেওয়া হত যে দূরত্বে, এখন ১৫-২০ টাকা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে সেখানে। যদিও শহরের পথে পঞ্চায়েত এলাকার রিকশা চালানো নিয়ে পুর-কর্তৃপক্ষের আপত্তি রয়েছে। কিন্তু গত তিন দিনের বৃষ্টিতে পঞ্চায়েত এলাকার রিকশা না চলায় ভাড়া নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে পুরবাসীদের। বহরমপুর রিকশা চালক সমিতির সভাপতি শান্তিপদ দত্ত অবশ্য বলেন, “বৃষ্টিতে ভিজে অসুস্থ হয়ে পড়লে কোনও যাত্রী বা পুরসভা বা প্রশাসন তো চালকের দায়িত্ব নেবে না। ফলে রুজির তাগিদে তারা যদি এই সময়ে ২-৫ টাকা বেশি নিতেই পারে। বিষয়টি মানবিক দিক থেকে দেখা দরকার।” |
গত তিন দিনের বৃষ্টির ব্যাপক প্রভাব পড়েছে পাইকারি সব্জি বাজারের দরে। নতুনবাজার পাইকারি কাঁচা সব্জির আড়তদার ডাহাপাড়ার বাসিন্দা সেলিম শেখ বলেন, “পাইকারি সব্জি বাজারে বেচাকেনা নেই। ফলে কম দরে সব্জি বিক্রি করতে হচ্ছে। আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমরা।” তাঁর কথায়, “নবগ্রামের পাঁচগ্রাম, বীরভূমের লোহাপুর, কান্দির জীবন্তি, জলঙ্গি থেকে হাটে বিক্রির জন্য কাঁচা সব্জি নতুনবাজার থেকে কিনে নিয়ে যান। কিন্তু ওই সব এলাকার ব্যবসায়ীরা বৃষ্টিতে আসতে পারছেন না। ফলে আগে ১২/১৩ কিলো দরে বেগুন বিক্রি করলেও এদিন ৪ টাকা কিলো দরে বিক্রি করতে হয়েছে। ১৫-১৬ দরের শশা বিক্রি হয়েছে ৩ টাকা কিলো দরে। পটল ১৪ টাকার বদলে কিলো প্রতি ৮ টাকা বিকিয়েছে।”
দুর্ভোগ কাটেনি পর্যটকদেরও। সুনসান বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড চত্বরে মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে সপরিবারে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন দমদমের বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় দে। কিন্তু ঘন্টা খানেক অপেক্ষা করেও বাসের দেখা মেলেনি। কারণ, এদিন সরকারি ও বেসরকারি বাস পথে নেমেছে কম। তার উপরে মঙ্গলবার বহরমপুরের বাজার বন্ধ থাকায় বাসস্ট্যান্ড চত্বরে এদিন জেলার অন্য প্রান্তের মানুষের আনাগোনা ছিল না বললেই চলে। এদিন সকালের দিকে বাস-ট্রেকার চললেও বেলা বাড়তেই বিভিন্ন রুটের বাস বন্ধ হয়ে যায়। বাস মালিক মলয় মণ্ডল বলেন, “রবিবার থেকে জেলার বিভিন্ন রুটের বাসে যাত্রী সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে কমে গিয়েছে। সোমবার থেকে অফিস-কাছারি খুললে যাত্রী সংখ্যা বাড়বে বলে ভাবা গিয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি। ফলে এদিন আমার চারটে বাসের মধ্যে দুটো বাস পথে নামাইনি। বৃষ্টিতে বাসের যাত্রী সংখ্যা পঞ্চাশ শতাংশ কমে গিয়েছে। আর্থিক ক্ষতি এড়াতে তাই রুটের বাস বন্ধ রেখেছি।” |