‘শান্তি’র বার্তা নিয়ে এ বার নন্দীগ্রাম থেকে দার্জিলিং। সাইকেলের সওয়ারি হয়ে লালমাটির জঙ্গলমহল থেকে পার্বত্য উপত্যকায় পৌঁছন। সুকদেব মণ্ডল, প্রদীপ দাস, সৌমেন দাসদের মতো ৮ জন যুবকের ওই উদ্যোগ। বিবেকানন্দের সার্ধশতবর্ষকে সামনে রেখে শান্তির বার্তা প্রচারে সচেষ্ট তাঁরা। গত ২১ অক্টোবর নন্দীগ্রাম থেকে সাইকেল র্যালি শুরু করেছিলেন। ২৮ অক্টোবর বাগডোগরা হয়ে মিরিক এবং পরের দিন পৌঁছন কার্শিয়াঙে। তার পর দার্জিলিং। ৩১ অক্টোবর এবং ১ নভেম্বর দার্জিলিঙের বিভিন্ন জায়গায় সাইকেল র্যালি করে ব্যানার নিয়ে প্রচার করেন। গত ২ নভেম্বর ভোরে দার্জিলিং থেকে রওনা হয়ে শিলিগুড়ি পৌঁছন নন্দীগ্রামে ফেরার উদ্দেশে। ওই দিন বাগডোগরার একটি ক্লাবে রাত কাটিয়ে শনিবার রওনা হন। রবিবার পৌঁছন ইটাহারে। ইটাহার থেকে সোমবার ফরাক্কা। মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের সারগাছিতে পৌঁছবে দলটি। ফরাক্কায় ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ এবং সারগাছিতে স্থানীয় রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃপক্ষ তাঁদের স্বাগত জানাবে। রাজ্য রাজনীতিতে জঙ্গলমহল এবং দার্জিলিং পাহাড়ে অশান্তির বাতাবরণ উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। রাজ্যে নতুন সরকার আসার পর এখন সেই অস্থিরতা নেই। তবু নন্দীগ্রামের সুবদি এলাকার বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে কাছে থেকে ওই অস্থিরতার কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে সুকদেবদের অনেকেরই। |
তাই বিশ্বশান্তির বার্তা নিয়ে যিনি এক সময় দেশের একপ্রাপ্ত থেকে অন্য প্রান্ত চষেছিলেন সেই বিবেকানন্দের সার্ধশতবর্ষে তাই হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারেননি ওই যুবকেরা। স্থানীয় সুবাদি আজাদহিন্দ সঙ্ঘ থেকে তারা সাইকেল র্যালির আয়োজন করেন। তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে নন্দীগ্রাম-২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি, আমদাবাদ ১ নম্বর পঞ্চায়েত প্রধান। পঞ্চায়েত সমিতি থেকে তাদের সফরের জন্য সাইকেল দেওয়া হয়। আমদাবাদ পঞ্চায়েত প্রধানের তরফে তাদের ১৬ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য করা হয় অভিযানের জন্য। শান্তি বজায় রাখার বার্তা বয়ে খুশি ওই যুবকেরাও। দলটির নেতৃত্ব দেন সুকদেব মণ্ডল নামে এক যুবক। তিনি গৃহশিক্ষকতা করেন। তবে স্কুলে চাকরির পদপ্রার্থী সুকদেববাবুর ডাক আসায় মাঝপথ থেকে তাঁকে ফিরতে হয়েছে। দলে অন্যদের মধ্যে রয়েছেন প্রদীপ সরকার, অনুপ দাস, সৌমেন দাস, রাজশেখর দাস, স্বরূপ দাস, রঞ্জন শিঠ এবং দীপঙ্কর দাস। ৩ নভেম্বর স্বরূপ দাস অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর সঙ্গে দীপঙ্করবাবুকেও ফিরে যেতে হয়। দলের অন্যতম তথা পেশায় হাই স্কুলের শিক্ষক প্রদীপবাবু বলেন, “এই সাইকেল র্যালিতে আমরা সকলেই দারুণ উৎসাহী। যাওয়ার পথে রাতে বিভিন্ন জায়গায় থেকেছি। শান্তির বার্তা নিয়ে জঙ্গলমহল থেকে পাহাড়ি পথে সাইকেল চালিয়ে দার্জিলিঙে পৌঁছেছি। রাজ্যের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে এই শৈলশহর এখন শান্ত। বিশ্ব তথা রাজ্যে সর্বত্র শাস্তির পরিস্থিতি বজায় রাখার বার্তা দার্জিলিং পৌঁছে র্যালি করে ব্যানার, পোস্টারে প্রচার করেছি।” |