মোবাইলে রিচার্জ করতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। তিন সপ্তাহের বেশি কেটে গেলেও তার হদিস মেলেনি। পুলিশ জানায়, নিখোঁজ কিশোরীর নাম অর্পিতা চন্দ্র। সে চন্দননগরের কৃষ্ণভাবিনী নারী শিক্ষা মন্দিরের দশম শ্রেণির ছাত্রী। বাড়ি চন্দননগরের সরিষাপাড়ায়। মেয়েটিকে খুঁজে বের করতে পুলিশ সে ভাবে তৎপর নয় বলে তার বাড়ির লোকজনের অভিযোগ। চন্দননগরের এসডিপিও সৈকত ঘোষ অবশ্য বলেন, “কিছু সূত্র পাওয়া গিয়েছে। আশা করছি, শীঘ্রই মেয়েটিকে উদ্ধার করা যাবে।”
পুলিশ ও মেয়েটির পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১১ই অক্টোবর সকালে গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে গিয়েছিল অর্পিতা। সেখান থেকে ফিরে সকাল ১০টা নাগাদ পাড়ার দোকানে মোবাইলে রিচার্জ করাতে যায়। আর ফেরেনি। সম্ভাব্য সমস্ত জায়গায় খোঁজাখুজি করেন বাড়ির লোকজন। কিন্তু কোথাও তাকে পাওয়া যায়নি। ওই রাতেই চন্দননগর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন মেয়েটির বাবা প্রশান্তকুমার চন্দ্র। এর পরে কেটে গিয়েছে বেশ কয়েক দিন। মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটছে প্রশান্তবাবু এবং তাঁর স্ত্রী-র তাপসীদেবীর। এলাকার লোকজন জানান, অর্পিতা অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের মেয়ে। তাপসীদেবী ক্যানসারে আক্রান্ত। তাঁর কেমোথেরাপি চলছে।
প্রশান্তবাবু জানান, একাধিক মোবাইল নম্বর থেকে বাড়িতে ফোন আসছে। তাতে পুরুষকণ্ঠে কখনও বলা হচ্ছে, মেয়ে ভাল আছে। কখনো বলা হচ্ছে, মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, নিখোঁজ হওয়ার দিনই দুপুর ১টা নাগাদ তাপসীদেবীর মোবাইলে ফোন আসে। বলা হয়, মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এরপর সেই নম্বরে ফোন করলে মোবাইলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাত ১২টা নাগাদ একটি মিস্ড কল আসে। সেই নম্বরে ফোন করে অর্পিতার খোঁজ নেওয়া হলে বলা হয়, এখানে কেউ নেই। আর পরেও আরও কয়েকটি নম্বর থেকে ফোন আসে। শেষ ফোন আসে গত শুক্রবার। সব নম্বরই পুলিশের কাছে জমা দিয়েছেন প্রশান্তবাবুরা। জেলার পুলিশ সুপারকেও বিষয়টি জানিয়েছেন তাঁরা।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ওই সমস্ত মোবাইলের ‘টাওয়ার লোকেশন’ কখনও দেখাচ্ছে মুর্শিদাবাদের করিমপুর আবার কখনও বরাহনগরে। প্রশান্তবাবু বলেন, “সামনেই মেয়ের মাধ্যমিক। কী হবে কে জানে! যে সব নম্বর থেকে ফোন আসছে, তাতে আমরা যোগাযোগ করলে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হচ্ছে।” তাপসীদেবীর আর্তি, “মেয়েটা ভালয়-ভালয় বাড়ি ফিরে আসুক। পুলিশ ওকে খুঁজে দিক।” |