ভর্তুকি কমাতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিরোধিতা করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কিন্তু সেই একই কারণ দেখিয়ে অর্থাৎ ভর্তুকি হ্রাসে রাজ্য সরকারের অধীন কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (কেআইটি)-এর আবাসনের ভাড়া বাড়ল বেশ কয়েক গুণ। চলতি মাস থেকেই নতুন হারে ভাড়া নেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে কেআইটি। এ বার ভাড়ার সঙ্গে পরিষেবা ফি-ও দিতে হবে আবাসিকদের।
কলকাতায় কেআইটি-র ২৭টি আবাসনে কয়েক হাজার ফ্ল্যাট রয়েছে। এর মধ্যে নামমাত্র কিছু ফ্ল্যাট বিক্রি করেছে ওই সংস্থা। বাকি ফ্ল্যাটের ভাড়ার হার খুবই কম। সরকারি সূত্রের খবর, বছরে কেআইটি-র আয় যেখানে ২ কোটি টাকা, সেখানে খরচ প্রায় ৮ কোটি টাকা। রাজনীতির বাধ্যবাধকতায় কোটি কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে কার্যত বহু যুগ ভাড়া বাড়ানো হয়নি। এ বার সেই কাজটা হল। যদিও চলতি বাজারদর অনুযায়ী বর্ধিত ভাড়ার হারও বেশি নয় বলে মনে করছে সরকার। কেআইটি-র সিইও লিয়াকৎ আলি জানান, আবাসনগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করতে বিরাট অঙ্কের টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। এখন ভাড়া বাড়ানোয় অন্তত পানীয় জলের জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের খরচটুকু উঠবে।
কত ভাড়া বাড়ল? যেমন, এসআইএইচ-থ্রি আবাসনের ফ্ল্যাটে আগের ভাড়া ছিল মাসিক ২৯.৫০ টাকা। এখন দিতে হবে তার চার গুন, অর্থাৎ ১১৮ টাকা। এর সঙ্গে মাসে ৪৫০ টাকা পরিষেবা ফি। এই আবাসনে সব মিলিয়ে একটি ফ্ল্যাটের ভাড়া হচ্ছে ৫৬৮ টাকা। সিইও জানান, যাঁরা কেআইটি-র কাছ থেকে ফ্ল্যাট কিনেছেন, তাঁদের শুধু পরিষেবা ফি দিতে হবে। বাকি বেশিরভাগ অংশের ভাড়া ও পরিষেবা ফি’র দু’টোই লাগবে।
রাজ্যের নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের দাবি, “ভাড়া বাড়ানো হয়েছে এইচআইজি এবং এমআইজি-র। গরিব মানুষের স্বার্থে এলআইজি-র ভাড়া বাড়ানো হয়নি।” কিন্তু বিজ্ঞপ্তিতে পরিষ্কার, কেআইটি-র সব ধরনের ফ্ল্যাটেরই ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। বরং ভাড়ার ফ্ল্যাটের বেশিরভাগটাই এলআইজি। মন্ত্রীর অভিযোগ, “কেআইটি-র ফ্ল্যাটের বেশিরভাগ আবাসিক ভাড়া দেন না। তাই ওই সব ফ্ল্যাট বিক্রি করে দেওয়ার
চিন্তাভাবনা করছে সরকার।” সংস্থার অধীনে যে সব দোকানঘর রয়েছে, তার অনেকটাই বেআইনি ভাবে হাত বদল হয়েছে। এই সব দোকান সল্টলেকের মতো ‘নিয়মিতকরণ’ করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানালেন ফিরহাদ। |