চিকিৎসক থেকেও নেই। হপ্তা তিনেক ছুটি কাটিয়ে কাজে ফিরলেও নাকাশিপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওই চিকিৎসক শুক্রবার জরুরি কাজে গিয়েছিলেন পাশের পঞায়েতে। তাঁর অনুপস্থিতিতে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মাসিস্টের ভরসায় আশপাশের পাঁচ-গাঁয়ের মানুষের জীবনযাপন।
এ তথ্য নতুন নয়। নাকাশিপাড়া আঁকড়ে থাকা তেঁতুলবেড়িয়া, ভোলাডাঙা, দোগাছির মতো অন্তত পাঁচ-সাতটি গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে সপ্তাহে নির্দিষ্ট কয়েকটা দিন কিংবা রাতবিরেতে ওই ফার্মাসিস্টই ভরসা। নিজের ‘বিদ্যে’ মতো তিনিও গ্রামবাসীদের নির্বিকার চিকিৎসা করে থাকেন। পেট ব্যাথা থেকে জ্বর, হাত-পা কেটে গেলে টিনচার আইডিন দিয়ে ধুয়ে তাতে বড় জোর মারকিওরক্রোম লাগিয়ে দেওয়া, চিকিৎসা বলতে এইটুকুই। শুক্রবার সকালে বেশ কয়েক জন রোগী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভিড় করেন। চিকিৎসক না থাকায় তাঁরা ওই ফার্মাসিস্টের কাছেই চিকিৎসা করার দাবি জানান। কিন্তু এ দিন বেঁকে বসেন তিনিও। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে গ্রামবাসীরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চত্বরেই শুরু করে বিক্ষোভ। তাঁদের অভিযোগ, এ ঘটনা নতুন নয়। মাঝেমধ্যেই চিকিৎসক না থাকায় রোগীদের হয়রান হতে হয়। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মাসিস্টের জবাব, ‘‘স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক বেশ কিছু দিন ছুটিতে ছিলেন। এ দিনও তিনি আসেননি। দিনের পর দিন এ ভাবে চোখ বুজে চিকিৎসা করে যাওয়া কী ঠিক? আমি তাই এ দিন চিকিৎসা করতে চাইনি।’’ ঘটনাটি পরে নজরে আসে নাকাশিপাড়া ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক জীবেশ বাইনের। তিনি বলেন, ‘‘প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক জন করে চিকিৎসক থাকেন। তবে তাঁকে সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে আশপাশের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতেও যেতে হয়। শুক্রবার ওই চিকিৎসক গিয়েছিলেন ধনঞ্জয়পুর পঞ্চায়েতে। এ ক্ষেত্রে ফার্মাসিস্টরাই প্রাথমিক চিকিৎসা করে থাকেন। এটাই নিয়ম।” তিনি অবশ্য জানান, ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট রোগী দেখতে কেন অস্বীকার করেছেন তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। কিন্তু সরকারি ‘তদন্ত’-এর দীর্ঘ মেয়াদি রিপোর্ট কবে মিলবে কৈউ জানে না। দূর দুরান্তের গ্রামগুলি থেকে আসা রোগীদের দুর্ভোগের সুরাহা কি হবে তাতে?
|
ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের আকাল
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
আসানসোল মহকুমা হাসপাতালের ব্ল্যাড ব্যাঙ্কে রক্তের আকালের জেরে সমস্যায় পড়েছে চিকিৎসা পরিষেবা। মহকুমা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস জানান, শুক্রবার বিকেল বিভিন্ন শ্রেণির রক্ত মজুত রয়েছে মাত্র ৭৮ বোতল। তা দিয়ে খুব বেশি দু’দিন চলতে পারে। তিনি জানান, হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৪০ বোতল রক্তের দরকার হয়। কিছু থ্যালাসেমিয়া রোগীকে নিয়মিত রক্ত সরবরাহ করতে হয়। এছাড়াও মহকুমার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও নার্সিংহোমগুলিতে প্রসবকালীন রক্তের চাহিদা পূরণের জন্য মহকুমা হাসপাতালের সরকারি ব্ল্যাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত সরবরাহ করা হয়ে থাকে। আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্যও কিছু রক্ত মজুত রাখতে হয়। কিন্তু ১৬ অক্টোবরের পর মহকুমায় কোনও রক্ত সংগ্রহের জন্য শিবির হয়নি। ফলে রক্ত জমা পড়েনি হাসপাতালের ব্ল্যাড ব্যাঙ্কে। পাশাপাশি আশপাশের জেলাগুলিতেও একই ভাবে রক্তের অভাব রয়েছে। তাই তাদের সরকারি ব্ল্যাড ব্যাঙ্কগুলির উপরও ভরসা রাখা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় সামাজিক সংগঠনগুলির কাছে রক্ত সংগ্রহ শিবিরের আয়োজন করার আবেদন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। |