নানা রকম...
শুরু থেকেই খোশমেজাজে
প্রয়াত কিংবদন্তি তবলা শিল্পী রাধাকান্ত নন্দীর চুরাশিতম জন্মদিন উপলক্ষে তাঁরই নামাঙ্কিত সংসদ একটি সঙ্গতানুষ্ঠানের আয়োজন করেন মোহিত মঞ্চে। প্রধান অতিথি শিল্পী শুভাপ্রসন্ন তাঁর ভাষণে বলেন যাঁরা এই ধরনের অনুষ্ঠান করেন তিনি তাঁদের সাধুবাদ জানান। তিনি আরও বলেন, রাধাকান্ত কে এ প্রজন্মের হয়তো কেউ জানে না। তাঁরা জেনে রাখুন, রাধাকান্তের তবলায় গান বাজত। সভাপতি তবলিয়া গোবিন্দ বসু তাঁর বক্তব্যে বলেন, এই সংস্থাকে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য ভালবাসি। ওরা সযত্নে এত বছর ধরে রাধাকান্তের স্মৃতিকে সজীব রেখেছে। এ দিন গোবিন্দ বসু মিতা নস্করের একটি সিডি প্রকাশ করেন। গান-বাজনার আসরের সূচনায় খেয়াল শোনান রাঘব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর ইমনের বিশ্লেষণে প্রশান্তি ছিল। দ্রুত খেয়ালে তান, লয়কারি, ছন্দের কারুকাজে তাঁর সাবলীলতা ছিল লক্ষণীয়। সমাপ্তি শিল্পী সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় সে দিন তবলা লহরা শোনান। ন’ মাত্রার নসরকে তালে নির্বাচন করেন। শুরু থেকেই তিনি খোশমেজাজে ছিলেন। তাঁর হাতে পেশকার কায়দা রেলা, জীবন্ত রূপ পায়। বিভিন্ন লয়ে দ্রুত তিনতালে অনেক গুণিজনের রচনা তিনি মনোজ্ঞ রূপে পরিবেশন করেন। যেমন জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ, অনাথনাথ বসু, ফিরোজ খান, মসীদ খান, মিঞা বক্স, হাজী সাহেব প্রমুখ। এমন মেজাজে তিনি বাজিয়েছিলেন যে অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাওয়ার পর রেশ থেকে যায়। নগেনের গিন্নি ও নিতাই খুড়োর মতো জ্ঞানপ্রকাশের সৃষ্টি তাঁর অনুষ্ঠান থেকে বাদ পড়েনি। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রদীপ ভট্টাচার্য। পরিচালনা সার্থক।

কবিতায় অবাধ বিচরণ
আলো-আঁধারের মায়াবী রহস্যময়তায় ঘেরা মঞ্চে একটি ঘরের আদল, যা পুরোনো দিনের কোনও উচ্চবিত্ত গৃহের বিশ্রামকক্ষকে মনে করিয়ে দেয়। মঞ্চের পিছনের দেওয়াল-জোড়া পর্দায়ও কিছুটা অতীতচারী নাগরিক জীবনের চলমান প্রতিচ্ছবি। পর্দা আর মঞ্চের যোগাযোগের সেতু রচনা করে যেন ওই প্রাচীন ঘড়িটি, আবার অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত কালপর্বের প্রতীকও হয়ে উঠেছে সে। এই ভাবেই মঞ্চায়ন আর চলচ্চিত্রায়নকে একাকার করে বিভিন্ন শিল্পমাধ্যমের সার্থক সম্মেলনে সম্প্রতি জি ডি বিড়লা সভাগৃহে অনুষ্ঠিত হল কবিতা সন্ধ্যা কবিতাস্কোপ।
অনুষ্ঠানে সঙ্গীত-আবহ সৃষ্টির কৃতিত্ব পণ্ডিত দেবজ্যোতি বসুর। গ্রন্থনায় সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায় এবং নৃত্য নির্মিতি দেবলীনা দত্তের। নৃত্য, সঙ্গীত ও গ্রন্থনার মাধ্যমে কবিতার অবয়ব সৃষ্টির মাঝে একের পর এক কবিতা উদাত্ত ও মরমি কণ্ঠে পরিবেশন করলেন সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচিত কবিদের মধ্যে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ইসলাম, বিষ্ণু দে, জয় গোস্বামী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সুবোধ সরকার, কৃষ্ণা বসু প্রমুখ কবি। বিপুল এক কবিতা ভুবনে সুতপার অবাধ বিচরণ দর্শক-শ্রোতাকে আবিষ্ট রাখে। দৃশ্য ও শ্রব্য মাধ্যমের যুগপৎ ব্যবহারে তাঁর কবিতা উপস্থাপনা এক অনন্য মাত্রা পায়। ভাল লেগেছে মৃত্যুচেতনা বিষয়ক কবিতা ‘ঝুলন’ ও ‘প্রথম শোক’। আধুনিক কবিতার মধ্যে সংবেদনশীল উপস্থাপনা ‘একলা মেয়ে’, ‘সপ্তমগর্ভের কন্যা’, ‘টিউটোরিয়াল’, ‘ঘোড়সওয়ার’, ‘ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট’, ‘সার্থক জনম’। কবিতা-বৃত্তটি সুতপা সম্পূর্ণ করেন রবীন্দ্রনাথের ‘মরণ-মিলন’ কবিতাটি দিয়ে। দেবলীনার নৃত্যশৈলীতে ছিল বৈচিত্র্য। ‘কৃষ্ণকলি’ অসাধারণ। ভাল লেগেছে ‘মরণ মিলন’-এর সঙ্গে তাঁর মুখোশ নৃত্য। অনুষ্ঠানের সূচনায় সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয় বিজয়লক্ষ্মী বর্মণ, ঊর্মিমালা বসু, চৈতালী দাশগুপ্ত ও শাশ্বতী গুহঠাকুরতাকে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.