ডাকঘর
‘আক্রমণে’ অবাক হইনি
গত ২৯ অক্টোবর বহরমপুরের জনৈক পত্রলেখকের ব্যক্তিগত আক্রমণমূলক চিঠি পড়ে অবাক হইনি। প্রথমত, ‘সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ আমার বড় দাদা, অতএব আমি বেশি জানি বলে দাবি করেছি’ বলে পত্রলেখক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হেয় করার চেষ্টা করেছেন, তাতেও অবাক হইনি। কেননা, আগের লেখা চিঠিতে কোথাও আমি এমন দাবি করিনি। দ্বিতীয়ত, ২২ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত জঙ্গিপুরের এক পত্রলেখকের চিঠির উত্তরে সঠিক তথ্য জানানোর জন্যই জানিয়েছিলাম, ১৯৫০-৫৬, দাদা কোনও দিনই ওস্তাদ ঝাঁকসার দলে ছিলেন না। আজও আমি দৃঢ়ভাবে সে কথাই বলছি। ‘বৈশাখী’ এবং বহরমপুরের ‘মুর্শিদাবাদ চর্চা’ গ্রন্থে আলকাপ বিষয়ক দুটি প্রবন্ধে আমি লিখি‘দাদা মাত্র কিছু দিন ঝাঁকসার দলে ‘কাপে’ অভিনয়ে অংশগ্রহণ করেন।’ আমার ওই বক্তব্যের মধ্যেও কোনও ভ্রান্তি নেই। ১৯৫০ সালে দাদা কান্দির সাঁওতালপাড়ার আলকাপ দলের ‘ওস্তাদ’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং কর্ণসুবর্ণের কাছে ভরাট গ্রামে দাদার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ঝাঁকসা পরাজয় স্বীকার করার কথা আগের চিঠিতেই উল্লেখ করেছি। তার আগে ’৪৯ সালে কলকাতা থেকে সদ্য গ্রামে ফিরে দাদা যাত্রা-থিয়েটার নিয়ে মেতে ওঠেন। এই সময়ে বহরমপুরের সংস্কৃতি কর্মী সুধীন সেন ওঁকে ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সদস্য হিসেবে লোকসংস্কৃতির মাধ্যমে কমিউনিস্ট পার্টির আদর্শকে জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই সময়েই ওস্তাদ ঝাঁকসা গোকর্ণে আলকাপ দল নিয়ে আসেন। সেখানেই ঝাঁকসার সঙ্গে দাদার পরিচয়। আর সেই দিনই দলের এক পার্শ্ব-অভিনেতা অসুস্থ হয়ে পড়ায় দাদা ‘কাপে’ অভিনয়ে নামেন। ওস্তাদ ঝাঁকসা অভিভূত হন। পরে মিঠিপুরে মালদহের আরসাদ আলি বিশ্বাসের আলকাপ দলের সঙ্গে ঝাঁকসার আলকাপ দলের প্রতিযোগিতা উপলক্ষে ঝাঁকসা লোক পাঠিয়ে দাদাকে তাঁর দলের হয়ে অভিনয়ের জন্য অনুরোধ করেন। পরে আরও চার দিন ঝাঁকসার দলের নিজস্ব অভিনেতা হিসেবে নন, আমন্ত্রিত শিল্পী হিসেবে ‘কাপে’ অংশগ্রহণ করেন। ফলে ঝাঁকসার দলে বা তাঁর বাড়িতে দাদা কোনও দিনই থাকেননি। তৃতীয়ত, গত ২৯ সেপ্টেম্বরের চিঠিতে ‘আমি দাদার আলকাপ দলের ছায়াসঙ্গী হিসেবে অসংখ্য অনুষ্ঠানে থেকেছি বলে জানাই। তা নিয়েও গত ২৭ অক্টোবর একটি চিঠিতে মিথ্যাচারিতার প্রকাশ ঘটেছে। আমি ৫ বছর বয়স থেকেই আলকাপের অনুরাগী হয়ে উঠি। সেই সময়ে আমাদের গ্রামে বা আশপাশে যখনই দাদার দলের আলকাপ বা অন্য দলের সঙ্গে দাদার দলের আলকাপের পাল্লা হয়েছে, তখনই উপস্থিত থেকেছি। চতুর্থত, আগের চিঠিতে ‘ষাটের দশকের শেষের দিকে ওস্তাদ ঝাঁকসা আলকাপের আঙ্গিক, প্রয়োগভঙ্গি ও রীতি প্রকরণের পরিবর্তন ঘটিয়ে পঞ্চরসের সৃষ্টি করেন এবং সরাসরি মহিলা শিল্পীদের প্রবেশ ঘটিয়ে আলকাপের বিলুপ্তি ঘটান’ বলে উল্লেখ করি। তা সত্ত্বেও ২৭ অক্টোবরের চিঠির এক অংশে ‘খালেদ লিখেছেন, আলকাপে কোনও দিন মেয়েরা নামেনি এবং নামলেই তা পঞ্চরস হয়ে গিয়েছে।’ ‘আলকাপ’ ও ‘পঞ্চরস’ সম্পর্কে যাদের কোনও ধারণা নেই, তাঁদের অন্তত আলকাপ সম্পর্কে বিজ্ঞজনোচিত মন্তব্য করা মূঢ়তারই নামান্তর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.