মনীষা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘যৌনতার শিক্ষা আর কবে?’ (৪-১০) প্রতিবেদনটির সূত্র ধরে বলি, অজানাকে জানার অদম্য কৌতূহল মানুষের একটি সহজাত প্রবৃত্তি। কিন্তু এটা প্রায়ই লক্ষ করা যায়, সেই অজানা বস্তু যখন সম্যক রূপে মানুষের সামনে এসে হাজির হয়, তখন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তার প্রতি আগ্রহ ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে। শৈশবকাল থেকেই মানুষের মধ্যে এই ধর্ম পরিলক্ষিত হয়। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কৌতূহলের ক্ষেত্রটি ক্রমশ পরিবর্তিত হতে থাকে। যেমন, শৈশব কালে সমস্ত দৃশ্যমান বস্তু, বয়ঃসন্ধি কালে বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন তথা যৌন সংক্রান্ত বিষয়, বার্ধক্যে পরলোক, ইত্যাদি। অন্যন্য সময়ে কৌতূহল নিবারণে সবার সহযোগিতা পেলেও বয়ঃসন্ধিকালীন কৌতূহল নিবারণের অন্যতম অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় আমাদের এই সকল পরিবর্তন সম্বন্ধে অতিরিক্ত গোপনীয়তা অবলম্বন। আমরা এই বয়সের ছেলেমেয়েদের খিদে, ঘুমের কারণ ব্যাখ্যা করে বলতে পারি। কিন্তু ‘ঋতুচক্র’ সম্বন্ধে কথা বলতে সঙ্কোচ বোধ করি। ফলে, তাদের মনের সমস্ত কৌতূহল দমিত হতে হতে অনেক ক্ষেত্রেই তাদের মানসিক প্রবৃত্তির বিকৃতি ঘটতে শুরু করে এবং অবশেষে নোঙরহীন জাহাজের মতো দিকভ্রষ্ট হয়ে পড়ে।
এই দিকভ্রষ্ট হওয়া থেকে তাদের রক্ষা করার একমাত্র উপায় বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তনগুলি সম্বন্ধে তাদের মনে সম্যক ধারণা গড়ে তোলা। যা তাদের সমস্ত কৌতূহল নিবারণে সাহায্য করবে বলে, তারা অনেক স্বাভাবিক ভাবে তাদের শারীরিক পরিবর্তনগুলি অনুধাবন করতে পারবে। এই কারণে স্কুল পাঠ্যক্রমে ‘যৌন শিক্ষার’ অন্তর্ভুক্তি একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু সেখানে কতকগুলি প্রশ্ন ওঠে। যেমন, এই শিক্ষা প্রদান করবে কে? শিক্ষাদান পদ্ধতি কেমন হবে? এর সিলেবাসই বা কী হবে? ইত্যাদি।
এই প্রসঙ্গে বলি, বর্তমানে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে পশ্চিমবঙ্গ কারিগরী ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা দফতরের অধীনে হেলথ ওয়ার্কার নামক স্বল্পমেয়াদি (৬ মাস) একটি ট্রেনিং কোর্স চালু আছে। যেখানে Human Anatomy, Physiology, MCH Care, Immunization, বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধি ইত্যাদি সম্বন্ধে বেসিক হেলথ এডুকেশন প্রদান করা হয়। এবং সেখানে প্রশিক্ষক হিসাবে অধিকাংশ স্কুলে সরকারি ডিগ্রিপ্রাপ্ত চিকিৎসক বা নার্সরা নিযুক্ত আছেন। ওই কোর্সটিকে যদি বয়ঃসন্ধিকালীন ছাত্রছাত্রী, বিশেষ করে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্তমান পাঠ্যক্রমের সঙ্গে বাধ্যতামূলক ঐচ্ছিক বিষয় হিসাবে সংযুক্ত করা হয়, তা হলে একাধারে অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভবপর হয়।
বিকাশ হালদার। বনগ্রাম, উঃ ২৪ পঃ
|
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়নের জন্য অনেক কিছুই করা হচ্ছে। এর মধ্যে বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তির নামে কিছু পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের নামে কোনও পদ সৃষ্টি করা হয়নি। আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র ইংরেজ আমলে দেশের উন্নয়ন, রসায়ন বিষয়ে বিভিন্ন গবেষণা, স্বদেশি শিল্পস্থাপনে, শিক্ষাবিস্তারে অনেক কাজ করেছিলেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল কেমিক্যাল এক অনন্য অবদান। এমন এক জন ব্যক্তির নাম আজ আমরা ভুলতে বসেছি। আমার অনুরোধ, তাঁর নামে পদ সৃষ্টি করে তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হোক
নিতাইচন্দ্র ঘটক। কলকাতা-৭৩ |