|
|
|
|
রিলায়্যান্স নিয়ে কংগ্রেস-বিজেপিকে বিঁধলেন অরবিন্দ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
বিজেপি ও কংগ্রেস, দু’দলের থেকেই সমদূরত্ব বজায় রেখে নিজের রাজনৈতিক ভিত খুঁজতে মরিয়া অরবিন্দ কেজরিওয়াল। রবার্ট বঢরা, নিতিন গডকড়ীর পর আজ মুকেশ অম্বানীর সংস্থাকে সুবিধে পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে শাসক-বিরোধী দুই দলকেই ফের নিশানা করলেন তিনি। দু’দলই অবশ্য অরবিন্দের বিরুদ্ধে আলাদা-আলাদা ভাবে পাল্টা আক্রমণ জারি রেখেছে।
বঢরার চেয়ে গডকড়ীর বিরুদ্ধে কেজরিওয়ালের অভিযোগ অনেক বেশি দুর্বল ছিল বলে মনে করেন অনেকে। কেজরিওয়াল তাই আজ এমন বিষয়কে বেছে নেন, যেখানে কংগ্রেস ও বিজেপিকে একযোগে নিশানা করা যাবে। তাঁর অভিযোগ, মুকেশ অম্বানীকে এনডিএ জমানায় কে জি বেসিন প্রকল্পের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে এবং ইউপিএ সরকার অম্বানীর রিলায়্যান্সের দাদাগিরির কাছে নতিস্বীকার করেছে। রিলায়্যান্সের সঙ্গে মতভেদের জন্যই মণিশঙ্কর আইয়ার থেকে জয়পাল রেড্ডিকে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক থেকে সরানো হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “মন্ত্রকে বীরাপ্পা মইলিকে এনে রিলায়্যান্সের আরও সুবিধা করা হবে। লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের খরচ জোগান দেবে সংস্থাটি।”
রিলায়্যান্স স্বভাবতই যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে প্রকল্পটির জটিলতা না বুঝেই দায়িত্বজ্ঞানহীন অভিযোগ করা হয়েছে। দেশের অর্থনীতির কাছে এই প্রকল্পটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। দেশের এর জন্য গর্ব হওয়া উচিত। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে কংগ্রেসও। দলের অন্যতম নেতা বি কে হরিপ্রসাদ বলেছেন, “রামলীলা ময়দান থেকে আজ পর্যন্ত এত সব আয়োজনের টাকা কেজরিওয়ালরা কোথা থেকে পাচ্ছেন, আগে সেটা স্পষ্ট করা হোক।”
জয়পাল রেড্ডি অবশ্য বলেছেন, “যে মন্ত্রক ছেড়ে এসেছি, তা নিয়ে জবাব দেব না।” তবে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক থেকে রেড্ডির অপসারণ নিয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছে বিজেপিও। কেজরিওয়ালের সাংবাদিক সম্মেলনের আগেই পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সাংসদ যশোবন্ত সিংহ বিবৃতি জারি করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন তোলেন শুধুমাত্র রিলায়্যান্সের দাবির কাছে মাথা নোয়াননি বলেই কি রেড্ডিকে সরে যেতে হল?
রেড্ডি-প্রসঙ্গে অরবিন্দের সঙ্গে কিছুটা একসুর হয়েও বিজেপিকে অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলির মোকাবিলায় তড়িঘড়ি নামতে হয়েছে। দলের মুখপাত্র রাজীবপ্রতাপ রুডি সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, এনডিএ আমলে এই (কে জি বেসিন) প্রকল্পের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কেজরিওয়াল এমন কোনও অভিযোগ দেখাতে পারেননি, যার ভিত্তিতে বলা যায়, এনডিএ সরকার রিলায়্যান্সকে কোনও সুবিধা পাইয়ে দিয়েছে। বরং ইউপিএ সরকারে কী ভাবে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মন্ত্রিগোষ্ঠী সংস্থাটিকে আরও ছাড়পত্র দিয়েছে, মনমোহন সিংহকে ফাঁসিয়ে কী ভাবে এ ধরনের বিষয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হচ্ছে, সেগুলিই তুলে ধরা হয়েছে।
যদিও কেজরিওয়াল শিবির একই তিরে বিঁধছে দুই দলকে। তাদের বক্তব্য, সাংবাদিক বৈঠকের গোড়াতেই বাজপেয়ীর জামাই রঞ্জন ভট্টাচার্যের টেলিফোন-কথোপকথন শুনিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, তিনি কংগ্রেস ও মুকেশ অম্বানীর কতটা ঘনিষ্ঠ। অতীতে মনমোহন মন্ত্রিসভা গঠনের ক্ষেত্রেও রঞ্জনের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে বলে কেজরিওয়ালদের দাবি।
এই অবস্থায় কেজরিওয়াল-বধে নামতে হয়েছে দু’দলকেই। কংগ্রেসের মুখপত্র সন্দেশ-এ বলা হয়েছে, কংগ্রেসের বিরোধী শক্তির মুখ হিসেবে কাজ করছেন কেজরিওয়াল। আবার বিজেপির মুখপত্র কমল-সন্দেশ-এ বলা হয়েছে, যে সব বিদেশি শক্তি এই দেশকে অশান্ত করতে চায়, তাদের কাছে সুপারি নিয়েছেন কেজরিওয়াল।
এ দিন অবশ্য অন্য এক অস্বস্তিতে পড়েন কেজরিওয়ালরা। সাংবাদিক বৈঠকের মাঝেই “আপনারা দেশকে বোকা বানাচ্ছেন” বলে চেঁচামেচি শুরু করেন জগদীশ শর্মা এক ব্যক্তি। সরকারি চাকরি কররার সময় কেজরিওয়াল এবং তাঁর স্ত্রী কেন দিল্লির বাইরে কখনো বদলি হননি, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। জগদীশের দাবি, তিনি আইএনটিইউসি সদস্য। সেই দাবি অস্বীকার করেছে কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন। |
|
|
|
|
|